ঢাকা ০৫:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদ্মায় নিমিষেই তলিয়ে গেল ঝঁকঝকে বিদ্যালয়টি

পদ্মার অতল গহবরে চলে গেল বিদ্যায়টি

মাদারীপুর প্রতিনিধি: চোঁখের সামনে ঝঁকঝকে বিদ্যালয় ভবন টি নিমিষেই পানিতে তলিয়ে গেল । অসহায় হয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না ।  মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের ৭৭নং কাঁঠালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারের এভাবেই চলে যাওয়া দেখতে হয়েছে । চরাঞ্চলে নদীভাঙনের এ ব্যাপকতায় আতঙ্কে রয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ ও জনপ্রতিনিধিরা। মঙ্গলবার বিকেলে বিদ্যালয়টির দ্বিতল ভবনের একপাশ হঠাৎ ধসে পড়ে। নিজস্ব উদ্যোগে জিও ব্যাগ ফেলে প্রাণপণ চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হলো না এটির। অনিশ্চিত হয়ে গেল বিদ্যালয়ের প্রায় আড়াইশ ছেলেমেয়ের শিক্ষা।

এছাড়াও ভয়াবহ ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে বন্দরখোলা কাজিরসুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন, বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনসহ চরের ৪ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জনপদ। ভাঙন প্রতিরোধে চরাঞ্চলে জিও ব্যাগ ডাম্পিং চালিয়ে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের সভাপতি জুলহাস বেপারী জানান, পদ্মার পানি নামতে গিয়ে একটি খালের পাশের ৭৭নং কাঁঠালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবনটির বৃহৎ অংশ বিলীন হয়। বিদ্যালয়টিতে ২৭২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। মাত্র কয়েকদিন আগে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে বন্দরখোলা ইউনিয়নের নুরুদ্দিন মাদবরকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ভবনটি নদীগর্ভে যায়। এখন ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন, কাজির সুরা সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চরাঞ্চলে নদী ভাঙনের ব্যাপকতা বেড়েই চলছে।

দুমরে মুচরে বিলিন হয়ে যাচ্ছে বিদ্যালয়টি

 

তিনি জানান, পদ্মা তীরবর্তী উপজেলার বন্দরখোলা, কাঁঠালবাড়ি ও চরজানাজাতে নদীভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আড়িয়াল খাঁ তীরবর্তী সন্ন্যাসিরচর, শিরুয়াইল, নিলখী ও বহেরাতলা দক্ষিণেও নদীভাঙন দেখা দিয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সরকারি হিসাবমতে নদীতে সাড়ে ৪ শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীনের কথা বলা হলেও এ সংখ্যা আরও বেশি। এ সকল এলাকায় খোলা ২১টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৩ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরে বিদ্যালয়টি ভাঙন ঝুঁকিতে থাকায় চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরীর নির্দেশনায় গত শুক্রবার বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ ও শিক্ষকদের উপস্থিতিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়। কিন্তু তীব্র স্রোতের কারণে বিদ্যালয়টি নদীতে বিলীন হয়ে যায়।

মঙ্গলবার বিকেলে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান বিএম আতাউর রহমান আতাহার, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম মাহতাফ উদ্দিন, জাহিদ হোসেন মোল্লা, মিনহাজুর রহমান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী রবিউলসহ শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বিলীন হওয়া বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছেন। ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ডাম্পিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

কাঁঠালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিমা আক্তার জানান, জিও ব্যাগ ফেলে বিদ্যালয়টি রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু নদীর তীব্র স্রোতের কারণে আর টিকে থাকলো না বিদ্যালয়টি।

শিবচর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, পাশেই কাজির সুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি যেকোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

ট্যাগস

পদ্মায় নিমিষেই তলিয়ে গেল ঝঁকঝকে বিদ্যালয়টি

আপডেট সময় ১২:৪১:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুলাই ২০২০

মাদারীপুর প্রতিনিধি: চোঁখের সামনে ঝঁকঝকে বিদ্যালয় ভবন টি নিমিষেই পানিতে তলিয়ে গেল । অসহায় হয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না ।  মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের ৭৭নং কাঁঠালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারের এভাবেই চলে যাওয়া দেখতে হয়েছে । চরাঞ্চলে নদীভাঙনের এ ব্যাপকতায় আতঙ্কে রয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ ও জনপ্রতিনিধিরা। মঙ্গলবার বিকেলে বিদ্যালয়টির দ্বিতল ভবনের একপাশ হঠাৎ ধসে পড়ে। নিজস্ব উদ্যোগে জিও ব্যাগ ফেলে প্রাণপণ চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হলো না এটির। অনিশ্চিত হয়ে গেল বিদ্যালয়ের প্রায় আড়াইশ ছেলেমেয়ের শিক্ষা।

এছাড়াও ভয়াবহ ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে বন্দরখোলা কাজিরসুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন, বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনসহ চরের ৪ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জনপদ। ভাঙন প্রতিরোধে চরাঞ্চলে জিও ব্যাগ ডাম্পিং চালিয়ে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের সভাপতি জুলহাস বেপারী জানান, পদ্মার পানি নামতে গিয়ে একটি খালের পাশের ৭৭নং কাঁঠালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবনটির বৃহৎ অংশ বিলীন হয়। বিদ্যালয়টিতে ২৭২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। মাত্র কয়েকদিন আগে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে বন্দরখোলা ইউনিয়নের নুরুদ্দিন মাদবরকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ভবনটি নদীগর্ভে যায়। এখন ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন, কাজির সুরা সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চরাঞ্চলে নদী ভাঙনের ব্যাপকতা বেড়েই চলছে।

দুমরে মুচরে বিলিন হয়ে যাচ্ছে বিদ্যালয়টি

 

তিনি জানান, পদ্মা তীরবর্তী উপজেলার বন্দরখোলা, কাঁঠালবাড়ি ও চরজানাজাতে নদীভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আড়িয়াল খাঁ তীরবর্তী সন্ন্যাসিরচর, শিরুয়াইল, নিলখী ও বহেরাতলা দক্ষিণেও নদীভাঙন দেখা দিয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সরকারি হিসাবমতে নদীতে সাড়ে ৪ শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীনের কথা বলা হলেও এ সংখ্যা আরও বেশি। এ সকল এলাকায় খোলা ২১টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৩ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরে বিদ্যালয়টি ভাঙন ঝুঁকিতে থাকায় চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরীর নির্দেশনায় গত শুক্রবার বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ ও শিক্ষকদের উপস্থিতিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়। কিন্তু তীব্র স্রোতের কারণে বিদ্যালয়টি নদীতে বিলীন হয়ে যায়।

মঙ্গলবার বিকেলে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান বিএম আতাউর রহমান আতাহার, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম মাহতাফ উদ্দিন, জাহিদ হোসেন মোল্লা, মিনহাজুর রহমান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী রবিউলসহ শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বিলীন হওয়া বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছেন। ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ডাম্পিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

কাঁঠালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিমা আক্তার জানান, জিও ব্যাগ ফেলে বিদ্যালয়টি রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু নদীর তীব্র স্রোতের কারণে আর টিকে থাকলো না বিদ্যালয়টি।

শিবচর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, পাশেই কাজির সুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি যেকোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।