ঢাকা ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :

মায়ের কুকর্ম দেখে ফেলায় জীবন দিতে হল সন্তানকে

প্রতীকী ছবি

জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ  মায়ের সাথে আপন ফুপাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলার দৃশ্যই কাল হল ৮ম শ্রেণী পড়ুয়া কিশোর রয়েলের।

আর তাই পথের কাটা দূর করতেই মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে কোমল পানীয়র সঙ্গে ঘুমের বড়ি খাইয়ে অজ্ঞান করার পর গেঞ্জি দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয় তাকে।

হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক সপ্তাহ পরে ঘাতককে গ্রেপ্তারের পরই পুলিশের কাছে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন পাষণ্ড ফুপা আমান উল্লাহ নিজেই।

জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের ছাওয়াল পাড়া গ্রামের বাসিন্দা দিন মজুর বকুল হোসেনের ছেলে স্থানীয় হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র রয়েল দিন দশেক আগে সন্ধ্যার পর হঠাৎ নিখোঁজ হয়।

এরই মধ্যে পহেলা জুলাই জয়পুরহাটের বানিয়াপাড়া কামিল মাদ্রাসা এলাকার তুলশীগঙ্গা নদী থেকে অর্ধগলিত একটি অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এদিকে নিখোঁজ হওয়া রয়েলের মুঠোফোনের সূত্র ধরে মঙ্গলবার তার আপন ফুপা ট্রাক চালক আমান উল্লাহকে আটক করে পুলিশ। আটক আমান উল্লাহ সদর উপজেলার কড়ই মালো পাড়া গ্রামের মৃত গোলজার হোসেনের ছেলে।

আটকের পর আমান উল্লাহ পুলিশকে বলেন, তার মায়ের সাথে আপত্তিকর অবস্থা দেখে ফেলে রয়েল।

এ ঘটনা সে তার বাবাকে বলে দিলে ওই বাড়িতে যেতে নিষেধ করা হয়। আর এই ক্ষোভের জের ধরেই পথের কাটা ভেবে তাকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিয়েছিলাম।

হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে ঘাতক আরও বলেন, জয়পুরহাট শহরে ঘুরে বেড়ানোর জন্য মোবাইল ফোনে তাকে ডেকে নেই।

এরপর হিচমী বাজার থেকে দুটি কোল্ড ড্রিংকস কিনি এবং কড়ই মাদ্রাসা পাড়া এলাকার একটি ফার্মেসী থেকে ঘুমের ওষুধ কিনে সেগুলোর একটিতে মিশ্রণ করি।

এরপর তাকে খাওয়ায়ে অজ্ঞান করার পর তার পড়নের গেঞ্জি দিয়েই তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর নদীতে ফেলে দেই।

তবে এ অভিযোগটি মানতে নারাজ রয়েলের বাবা বকুল হোসেন। তিনি জানান, আমার স্ত্রী নিরপরাধ। আমান উল্লাহ আমার ভগ্নীপতি হলেও গত ৩ বছর পূর্বে সে আমার বোনকে ডিভোর্স দিয়েছে।

আমার বোন বর্তমানে একটি সন্তান নিয়ে ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকুরী করে। তবে তার একটি সন্তান আমাদের বাড়িতে থাকায় মাঝেমধ্যে আমান উল্লাহ আসা যাওয়া করতো।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার সন্তানকে মেরে ফেলে আমার ৬ শতক বাড়ি ভিটা লিখে নেওয়ার লোভেই সে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় স্বজন ও প্রতিবেশীরা দৃষ্টান্ত মূলক বিচার দাবী করেছেন।

এদিকে, জয়পুরহাটে দিন দিন শিশুসহ বিভিন্ন হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা।

এ বিষয়ে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন জয়পুরহাট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম জানান, হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এ ব্যাপারে জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহরিয়ার খাঁন বলেন, অভিযুক্ত আসামি আমান উল্লাহ নিজেই এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে।

সে জানিয়েছে-রয়েলের মায়ের সাথে আপত্তিকর দৃশ্য দেখে ফেলায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। আর তার দেওয়া জবানবন্দি অনুযায়ী নিহত রয়েলের মা পান্না বেগমকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে আমান উল্লাহকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে আর কারা জড়িত আছে, তা গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান ওসি।

ট্যাগস

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

মায়ের কুকর্ম দেখে ফেলায় জীবন দিতে হল সন্তানকে

আপডেট সময় ০৪:৪২:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জুলাই ২০২০

জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ  মায়ের সাথে আপন ফুপাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলার দৃশ্যই কাল হল ৮ম শ্রেণী পড়ুয়া কিশোর রয়েলের।

আর তাই পথের কাটা দূর করতেই মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে কোমল পানীয়র সঙ্গে ঘুমের বড়ি খাইয়ে অজ্ঞান করার পর গেঞ্জি দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয় তাকে।

হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক সপ্তাহ পরে ঘাতককে গ্রেপ্তারের পরই পুলিশের কাছে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন পাষণ্ড ফুপা আমান উল্লাহ নিজেই।

জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের ছাওয়াল পাড়া গ্রামের বাসিন্দা দিন মজুর বকুল হোসেনের ছেলে স্থানীয় হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র রয়েল দিন দশেক আগে সন্ধ্যার পর হঠাৎ নিখোঁজ হয়।

এরই মধ্যে পহেলা জুলাই জয়পুরহাটের বানিয়াপাড়া কামিল মাদ্রাসা এলাকার তুলশীগঙ্গা নদী থেকে অর্ধগলিত একটি অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এদিকে নিখোঁজ হওয়া রয়েলের মুঠোফোনের সূত্র ধরে মঙ্গলবার তার আপন ফুপা ট্রাক চালক আমান উল্লাহকে আটক করে পুলিশ। আটক আমান উল্লাহ সদর উপজেলার কড়ই মালো পাড়া গ্রামের মৃত গোলজার হোসেনের ছেলে।

আটকের পর আমান উল্লাহ পুলিশকে বলেন, তার মায়ের সাথে আপত্তিকর অবস্থা দেখে ফেলে রয়েল।

এ ঘটনা সে তার বাবাকে বলে দিলে ওই বাড়িতে যেতে নিষেধ করা হয়। আর এই ক্ষোভের জের ধরেই পথের কাটা ভেবে তাকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিয়েছিলাম।

হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে ঘাতক আরও বলেন, জয়পুরহাট শহরে ঘুরে বেড়ানোর জন্য মোবাইল ফোনে তাকে ডেকে নেই।

এরপর হিচমী বাজার থেকে দুটি কোল্ড ড্রিংকস কিনি এবং কড়ই মাদ্রাসা পাড়া এলাকার একটি ফার্মেসী থেকে ঘুমের ওষুধ কিনে সেগুলোর একটিতে মিশ্রণ করি।

এরপর তাকে খাওয়ায়ে অজ্ঞান করার পর তার পড়নের গেঞ্জি দিয়েই তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর নদীতে ফেলে দেই।

তবে এ অভিযোগটি মানতে নারাজ রয়েলের বাবা বকুল হোসেন। তিনি জানান, আমার স্ত্রী নিরপরাধ। আমান উল্লাহ আমার ভগ্নীপতি হলেও গত ৩ বছর পূর্বে সে আমার বোনকে ডিভোর্স দিয়েছে।

আমার বোন বর্তমানে একটি সন্তান নিয়ে ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকুরী করে। তবে তার একটি সন্তান আমাদের বাড়িতে থাকায় মাঝেমধ্যে আমান উল্লাহ আসা যাওয়া করতো।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার সন্তানকে মেরে ফেলে আমার ৬ শতক বাড়ি ভিটা লিখে নেওয়ার লোভেই সে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় স্বজন ও প্রতিবেশীরা দৃষ্টান্ত মূলক বিচার দাবী করেছেন।

এদিকে, জয়পুরহাটে দিন দিন শিশুসহ বিভিন্ন হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা।

এ বিষয়ে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন জয়পুরহাট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম জানান, হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এ ব্যাপারে জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহরিয়ার খাঁন বলেন, অভিযুক্ত আসামি আমান উল্লাহ নিজেই এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে।

সে জানিয়েছে-রয়েলের মায়ের সাথে আপত্তিকর দৃশ্য দেখে ফেলায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। আর তার দেওয়া জবানবন্দি অনুযায়ী নিহত রয়েলের মা পান্না বেগমকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে আমান উল্লাহকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে আর কারা জড়িত আছে, তা গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান ওসি।