ঢাকা ১১:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুড়িগ্রামে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি, তলিয়েছে ফসল

বন্যার পানি

আনোয়ার হোসেন,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ  কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনিত হয়েছে।

ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৭২ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৭১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়েছে অন্যান্য নদ-নদীর পানিও। ফলে জেলার চিলমারী, উলিপুর,-

সদর, রৌমারী, রাজিবপুর ও নাগেশ্বরীসহ ৮টি উপজেলায় নদ-নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চলসহ প্রায় আড়াই শতাধিক চর ও দ্বীপচর প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ।

এসব এলাকার রাস্তা-ঘাট তলিয়ে থাকায় ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। তলিয়ে গেছে বন্যা কবলিত এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও।
এ অবস্থায় নিচু এলাকার মানুষজন ঘর-বাড়ি ছেড়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। পানিবন্দি মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের ভগবতীপুর চরের বাসিন্দা জামান জানান, চরের সবগুলো বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। আমি আমার পরিবারের লোকজন নিয়ে পানিবন্দি অবস্থায় খুব কষ্টে দিন যাপন করছি। রাস্তা-ঘাট সব তলিয়ে গেছে।
কোথাও যাওয়ার উপায় নাই। নিমজ্জিত হয়েছে ৩ হাজার ৬ শ ২২ হেক্টর জমির আমন বীজতলা, আউশ, শাক

সবজি, পাটসহ অন্যান্য ফসল।

নিমজ্জিত হয়েছে ৩ হাজার ৬ শ ২২ হেক্টর জমির আমন বীজতলা, আউশ, শাক সবজি, পাটসহ অন্যান্য ফসল।
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের কৃষক মজিদ মিয়া জানান, দুই বিঘা জমিতে পটল, বেগুন ও ঝিংগা লাগিয়েছিলাম তা গত ৩ দিনে সম্পুর্ণরুপে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি নেমে গেলেও এসব ক্ষেত রক্ষা হবে না।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো: মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান জানান, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নতুন নতুন এলাকার বীজতলাসহ ফসল পানিতে নিমজ্জিত হচ্ছে। এতে করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আরো বৃদ্ধি পাবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম জানান, আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে ধরলা ও তিস্তার পানি কমে গেলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো: রেজাউল করিম জানান, বন্যা কবলিতদের জন্য জেলার সবকটি উপজেলায় মোট ৩০২ মেট্রিক টন চাল ও শুকনো খাবার বিতরনের জন্য ৩৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে এসব খাদ্য বিতরণ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে বলেও তিনি জানান।
ট্যাগস

কুড়িগ্রামে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি, তলিয়েছে ফসল

আপডেট সময় ১২:০২:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুন ২০২০

আনোয়ার হোসেন,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ  কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনিত হয়েছে।

ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৭২ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৭১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়েছে অন্যান্য নদ-নদীর পানিও। ফলে জেলার চিলমারী, উলিপুর,-

সদর, রৌমারী, রাজিবপুর ও নাগেশ্বরীসহ ৮টি উপজেলায় নদ-নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চলসহ প্রায় আড়াই শতাধিক চর ও দ্বীপচর প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ।

এসব এলাকার রাস্তা-ঘাট তলিয়ে থাকায় ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। তলিয়ে গেছে বন্যা কবলিত এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও।
এ অবস্থায় নিচু এলাকার মানুষজন ঘর-বাড়ি ছেড়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। পানিবন্দি মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের ভগবতীপুর চরের বাসিন্দা জামান জানান, চরের সবগুলো বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। আমি আমার পরিবারের লোকজন নিয়ে পানিবন্দি অবস্থায় খুব কষ্টে দিন যাপন করছি। রাস্তা-ঘাট সব তলিয়ে গেছে।
কোথাও যাওয়ার উপায় নাই। নিমজ্জিত হয়েছে ৩ হাজার ৬ শ ২২ হেক্টর জমির আমন বীজতলা, আউশ, শাক

সবজি, পাটসহ অন্যান্য ফসল।

নিমজ্জিত হয়েছে ৩ হাজার ৬ শ ২২ হেক্টর জমির আমন বীজতলা, আউশ, শাক সবজি, পাটসহ অন্যান্য ফসল।
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের কৃষক মজিদ মিয়া জানান, দুই বিঘা জমিতে পটল, বেগুন ও ঝিংগা লাগিয়েছিলাম তা গত ৩ দিনে সম্পুর্ণরুপে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি নেমে গেলেও এসব ক্ষেত রক্ষা হবে না।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো: মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান জানান, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নতুন নতুন এলাকার বীজতলাসহ ফসল পানিতে নিমজ্জিত হচ্ছে। এতে করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আরো বৃদ্ধি পাবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম জানান, আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে ধরলা ও তিস্তার পানি কমে গেলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো: রেজাউল করিম জানান, বন্যা কবলিতদের জন্য জেলার সবকটি উপজেলায় মোট ৩০২ মেট্রিক টন চাল ও শুকনো খাবার বিতরনের জন্য ৩৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে এসব খাদ্য বিতরণ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে বলেও তিনি জানান।