রংপুর প্রতিনিধিঃ চুরির অপবাদে রংপুর নগরীর মডার্ন মোড়ে বাবু মিয়া (২৪) নামে এক প্রতিবন্ধী হোটেল শ্রমিককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত হোটেল মালিক আনছার আলীকে গ্রেফতার করেছে তাজহাট থানা পুলিশ।
বুধবার (১০ জুন) তাজহাট থানার উপ-পরিদর্শক মামুনুর রশীদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নির্যাতিত বাবু লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী থানার মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে বলে জানা যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিবন্ধী হোটেল শ্রমিক বাবু দীর্ঘদিন ধরে মডার্ন মোড়ের শাহীন হোটেলে কাজ করতেন।
লকডাউনের কারণে শাহীন হোটেল বন্ধ থাকায় পাশের আজাদ হোটেলে কাজ শুরু করেন তিনি। কিছুদিন পর আজাদ হোটেলও বন্ধ হয়ে যায়। তখন বাবু হোটেলের মালিক আনছার আলীকে সবকিছু ঠিকঠাক আছে দেখিয়ে হোটেলের চাবি বুঝিয়ে দেন।
পরবর্তীতে সীমিত পরিসরে লকডাউন শিথিল হওয়ায় শাহিন হোটেল খুললে বাবু পুনরায় সেখানে কাজ শুরু করেন।
এরপর সব দোকানপাট খোলা শুরু হলে আনছার আলী তার হোটেল খুলে লোকজনকে জানান যে, তার হোটেলে চুরি হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি তাজহাট থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেন।
এক পর্যায়ে গত ৮ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আনছার আলী ও তার ছেলে আজাদ মিলে শাহীন হোটেলের সামনে থেকে বাবুকে তুলে নিয়ে যান।
এরপর বাবুর হাত-পা বেঁধে আনছার আলী ও তার ছেলে আজাদ লোহার পাইপ দিয়ে আঘাত করেন। এসময় বাবু হাত-পা ধরে ক্ষমা চেয়ে চুরি করেননি বলে আর্তনাদ করলেও প্রায় দেড় ঘন্টা তাকে এভাবে নির্যাতন করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন জানান, তারা বাবুকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রথমে লোহার পাইপ দিয়ে পেটায়। এছাড়াও লোহা গরম করে আঘাত করা হয়।
এতে বাবুর পা জখম হয় ও ডান হাত ভেঙ্গে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ আহত অবস্থায় বাবুকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়।
এ বিষয় আজাদ হোটেল মালিক আনছার আলী পুলিশকে দোষারোপ করে স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের অভিযোগের গুরুত্ব পুলিশ দেয় নাই। মালামাল উদ্ধারও করে নাই। তাই আমরা তাকে এনে চুরির মাল উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলাম।’
তাজহাট থানার উপ-পরিদর্শক মামুনুর রশীদ বলেন, ‘এ বিষয়ে মামলা হয়েছে। অমানবিকভাবে শ্রমিককে চুরির অপবাদে নির্যাতনের অভিযোগে হোটেল মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।’