স্টাফ রিপোর্টারঃ দেশে করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও চারজন মারা গেছেন। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ জনে। নতুন করে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ২১৯ জন।
এতে দেশে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৩১ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও সাতজন। ফলে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৯-এ।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। নিজের বাসা থেকে এতে যুক্ত হয়ে কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, করোনা শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৭৪০টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ২১৯ জন।
ফলে দেশে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৩১ জনে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও চারজন। এতে মৃতের সংখ্যা হয়েছে ৫০। এছাড়া আরও সাতজন সুস্থ হয়েছেন। ফলে মোট সুস্থ হয়েছে বাড়ি ফিরেছেন ৪৯ জন।
বুলেটিনে বলা হয়, নতুন করে মারা যাওয়া চারজনের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও একজন নারী। এদের মধ্যে ৩৫-৪০ বছর বয়সী দুজন ও সত্তরোর্ধ্ব দুজন ছিলেন।
দুজনের মধ্যে একজন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দীন ও অপরজন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী ছিলেন।
ডা. মঈন উদ্দীনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ চিকিৎসকের মৃত্যুতে গভীর শোক এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ডা. মঈনের পরিবারের সকল দায়-দায়িত্ব সরকার নেবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আমরা ওই চিকিৎসকের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়েছি। মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হাসপাতালে ছুটে যাই আমি। ডা. মঈন উদ্দীনের স্ত্রীও একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ চিকিৎসকের মৃত্যুতে মনে হচ্ছে আমরা আমাদের ভাইকে হারালাম। সহযোদ্ধাকে হারালাম।
বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে বৈশ্বিক মহামারিতে পরিণত হয়েছে করোনাভাইরাস। চীন পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও এখন ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল।
এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে সোয়া লাখ। তবে চার লাখ ৮৫ হাজারের মতো রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও গত ক’দিনে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা।
সবশেষ হিসাবে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ২৩১। মারা গেছেন ৫০ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৯ জন।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি নানা সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে; যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব ও পুলিশ।