ঢাকা ০৬:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজার প্রধান আবাসিক এলাকায় ঢুকে পড়েছে ইসরাইলি ট্যাঙ্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা সিটির একটি প্রধান আবাসিক এলাকায় কয়েক ডজন ইসরাইলি ট্যাঙ্ক ও সামরিক বাহন ঢুকে পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। ইসরাইলি বাহিনীর স্থল অভিযানের দ্বিতীয় দিনেই গাজা শহর দখলের লক্ষ্যে অভিযান শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ট্যাঙ্ক, বুলডোজার ও সাঁজোয়া যানগুলো উত্তর গাজা সিটির শেখ রাদওয়ানের দিকে চলেছে। নিজেদের আড়াল করার জন্য ইসরাইলি বাহিনী কামানের গোলা ও স্মোক বম্ব নিক্ষেপ করায় চারদিকে মেঘের মত ঘন ধোঁয়া দেখা গেছে।

যুদ্ধের আগে এই শেখ রাদওয়ান এলাকায় কয়েক হাজার মানুষের বসবাস ছিলো। এটি সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচিত।

ইসরাইলের দাবি, হামাসের হাতে আটক পণবন্দীদের মুক্ত করতে এবং হামাসের আনুমানিক তিন হাজার যোদ্ধাকে পরাজিত করতে তারা গাজা সিটিতে অভিযান চালাচ্ছে। ইসরাইল হামাসের এই দলটিকে ‘সবশেষ শক্ত ঘাঁটি’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই অভিযানের ব্যাপক নিন্দা করা হয়েছে।

বুধবারের ইসরাইলি বাহিনীর অনুপ্রবেশের পর আশপাশের ভবন ও প্রধান সড়কগুলোতে ভারী বিমান হামলা চালানো হয়। একে স্থল অভিযানের প্রস্তুতি বলে ধারণা করছেন শেখ রাদওয়ানের বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দা সাদ হামাদা পরিবার নিয়ে বুধবার সকালেই দক্ষিণে চলে গেছেন। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘ড্রোনগুলো কিছুই বাকি রাখেনি। তারা সোলার প্যানেল, বিদ্যুৎ জেনারেটর, পানির ট্যাঙ্ক, এমনকি ইন্টারনেট নেটওয়ার্কেও আঘাত করেছে।’

তিনি বলেন, ‘জীবন একেবারেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিপদ থাকা সত্ত্বেও বেশিভাগ মানুষ চলে যেতে বাধ্য হয়েছে।’

আবু ইস্কান্দার, আল তাওয়াম ও আল সাফতাওয়ি এলাকাগুলো শেখ রাদওয়ানের অন্তর্ভূক্ত। আল-জালা সড়ক শেখ রাদওয়ানকে বিভক্ত করেছে। এটি গাজা সিটির মধ্যবর্তী অঞ্চলের সাথে এর উত্তরাঞ্চলীয় এলাকাগুলোকে সংযোগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক।

শহরের আরো গভীরে ইসরাইলি বাহিনী নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে এবং কেন্দ্রীয় এলাকাগুলোতে পৌঁছানোর পথ খুলে দিতে পারে বলে জানান স্থানীয়রা।

গাজা সিটির সড়কে ট্যাঙ্কের ছবি ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে যারা এখনো শহরের পশ্চিম ও কেন্দ্রীয় অংশে রয়েছেন।

শেখ রাদওয়ানে ইসরাইলি বাহিনীর অনুপ্রবেশের ফলে এখন আরেক দফায় মানুষ ঘর-বাড়ি ছাড়তে শুরু করেছে। হাজার হাজার পরিবার দক্ষিণে পালিয়ে যাচ্ছে।

এর আগে, মঙ্গলবার আইডিএফ জানায়, প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ গাজা শহর ছেড়ে পালিয়েছে। যদিও আগস্ট থেকে জাতিসঙ্ঘ এই সংখ্যা এক লাখ ৯০ হাজার বলে জানিয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, অন্তত সাড়ে ছয় লাখ মানুষ এখনো সেখানে রয়ে গেছে।

ট্যাগস

সর্বাধিক পঠিত

গাজার প্রধান আবাসিক এলাকায় ঢুকে পড়েছে ইসরাইলি ট্যাঙ্ক

আপডেট সময় ০৫:১৩:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা সিটির একটি প্রধান আবাসিক এলাকায় কয়েক ডজন ইসরাইলি ট্যাঙ্ক ও সামরিক বাহন ঢুকে পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। ইসরাইলি বাহিনীর স্থল অভিযানের দ্বিতীয় দিনেই গাজা শহর দখলের লক্ষ্যে অভিযান শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ট্যাঙ্ক, বুলডোজার ও সাঁজোয়া যানগুলো উত্তর গাজা সিটির শেখ রাদওয়ানের দিকে চলেছে। নিজেদের আড়াল করার জন্য ইসরাইলি বাহিনী কামানের গোলা ও স্মোক বম্ব নিক্ষেপ করায় চারদিকে মেঘের মত ঘন ধোঁয়া দেখা গেছে।

যুদ্ধের আগে এই শেখ রাদওয়ান এলাকায় কয়েক হাজার মানুষের বসবাস ছিলো। এটি সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচিত।

ইসরাইলের দাবি, হামাসের হাতে আটক পণবন্দীদের মুক্ত করতে এবং হামাসের আনুমানিক তিন হাজার যোদ্ধাকে পরাজিত করতে তারা গাজা সিটিতে অভিযান চালাচ্ছে। ইসরাইল হামাসের এই দলটিকে ‘সবশেষ শক্ত ঘাঁটি’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই অভিযানের ব্যাপক নিন্দা করা হয়েছে।

বুধবারের ইসরাইলি বাহিনীর অনুপ্রবেশের পর আশপাশের ভবন ও প্রধান সড়কগুলোতে ভারী বিমান হামলা চালানো হয়। একে স্থল অভিযানের প্রস্তুতি বলে ধারণা করছেন শেখ রাদওয়ানের বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দা সাদ হামাদা পরিবার নিয়ে বুধবার সকালেই দক্ষিণে চলে গেছেন। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘ড্রোনগুলো কিছুই বাকি রাখেনি। তারা সোলার প্যানেল, বিদ্যুৎ জেনারেটর, পানির ট্যাঙ্ক, এমনকি ইন্টারনেট নেটওয়ার্কেও আঘাত করেছে।’

তিনি বলেন, ‘জীবন একেবারেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিপদ থাকা সত্ত্বেও বেশিভাগ মানুষ চলে যেতে বাধ্য হয়েছে।’

আবু ইস্কান্দার, আল তাওয়াম ও আল সাফতাওয়ি এলাকাগুলো শেখ রাদওয়ানের অন্তর্ভূক্ত। আল-জালা সড়ক শেখ রাদওয়ানকে বিভক্ত করেছে। এটি গাজা সিটির মধ্যবর্তী অঞ্চলের সাথে এর উত্তরাঞ্চলীয় এলাকাগুলোকে সংযোগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক।

শহরের আরো গভীরে ইসরাইলি বাহিনী নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে এবং কেন্দ্রীয় এলাকাগুলোতে পৌঁছানোর পথ খুলে দিতে পারে বলে জানান স্থানীয়রা।

গাজা সিটির সড়কে ট্যাঙ্কের ছবি ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে যারা এখনো শহরের পশ্চিম ও কেন্দ্রীয় অংশে রয়েছেন।

শেখ রাদওয়ানে ইসরাইলি বাহিনীর অনুপ্রবেশের ফলে এখন আরেক দফায় মানুষ ঘর-বাড়ি ছাড়তে শুরু করেছে। হাজার হাজার পরিবার দক্ষিণে পালিয়ে যাচ্ছে।

এর আগে, মঙ্গলবার আইডিএফ জানায়, প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ গাজা শহর ছেড়ে পালিয়েছে। যদিও আগস্ট থেকে জাতিসঙ্ঘ এই সংখ্যা এক লাখ ৯০ হাজার বলে জানিয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, অন্তত সাড়ে ছয় লাখ মানুষ এখনো সেখানে রয়ে গেছে।


Notice: ob_end_flush(): Failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/visionnewstoday/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471