ঢাকা ও তার আশপাশে আটটি আয়নাঘর বা গোপন বন্দিশালা খুঁজে পেয়েছে বলে জানিয়েছেন গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে কমিশনের সম্মেলনকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রথমে বক্তব্য রাখেন কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। রাজনৈতিক, জঙ্গি সন্দেহসহ চার কারণে অধিকাংশ গুম করা হয়েছিল বলে জানায় কমিশন।
কমিশনের সভাপতি বলেন, গুমের বন্দিশালা বা আয়নাগুলো পরিদর্শন করার কাজ শুরু করেছি। এরই মধ্যে ডিজিএফআই, র্যাব-১ (উত্তরা), র্যাব হেডকোয়ার্টার, র্যাব-১১ (নারায়ণগঞ্জ), র্যাব-২ (বছিলা), র্যাব-২ ক্রাইস ডিভিশন সেন্টার (আগারগাঁও) পরিদর্শন করেছি। ডিবি আগে করা হয়েছে।বিচারপতি মইনুল ইসলাম বলেন, এখানে রাজনৈতিক কারণেই বেশিরভাগ ব্যক্তিদের গুম করা হয়েছে। তবে রাজনৈতিক কারণ ছাড়া স্বপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগের বাইরে অনেককে গুম করা হয়। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ২০০’র বেশি গুম হওয়া মানুষকে এখনও শনাক্ত করা যায়নি।
আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে নেয়ার কথা থাকলেও মাসের পর মাস, এমনকি বছরের পর বছর রাখা হতো আইনের তোয়াক্কা না করে বলে জানান কমিশন প্রধান।এ সময় তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত এক হাজার ছয়শটির মত অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে চারশোটির বেশি অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়েছে। ১৪০ অভিযোগের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় রাজনীতিকে পরিশুদ্ধ করার কথাও বলেন গুম কমিশন প্রধান।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গুমের ঘটনাগুলোর পেছনে মূলত চারটি কারণ পাওয়া গেছে। প্রথমত রাজনৈতিক কারণ, দ্বিতীয়ত জঙ্গি সন্দেহে, দ্বিতীয়টা ব্যবসায়িক কারণ ও পারিবারিক কারণ।
এখন পর্যন্ত আটটি গোপন বন্দিশালা উদঘাটন করতে পেরেছে কমিশন। এমন বন্দিশালা পাওয়া গেছে যেখানে মাত্র সাড়ে তিন বাই চার ফিট কক্ষের মধ্যে বছরের পর বছর আটকে রাখা হয়েছে। ওই স্থানেই মলমূত্র, গোসল সবকিছু করতে হয়েছে।অভিযুক্তদের বর্ণনা অনুযায়ী বন্দিশালায় গিয়ে অনেক আলামত ধ্বংসের নজির পাওয়া গেছে। পুরো দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়েছে। এটা করতে গিয়ে আগের অভিযুক্ত কমান্ডিং অফিসারদের অপরাধের দায় বর্তমান কমান্ডিং অফিসারদের ঘাড়ে এসে পড়বে। তাদেরকে আলামত ধ্বংস না করার জন্য বলা হয়েছে।