ঈদুল আজাহায় মুক্তির তালিকায় উঠে আসা ছবির নাম দেখে মনে হচ্ছে, ঈদুল ফিতরকেও ছাড়িয়ে যাবে এই সংখ্যা। চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে ১১টি ছবি মুক্তির কথা শোনা যাচ্ছে।
‘জিম্মি’, ‘ইব্রাহীম’ ও ‘গ্যাংস্টার’—এখন পর্যন্ত ঈদে মুক্তির জন্য এই তিন ছবির নাম নিবন্ধন করা হলেও জোর শোনা যাচ্ছে আরও আটটি ছবির নাম। এগুলো হলো ‘প্রিয়তমা’, ‘সুড়ঙ্গ’, ‘অন্তর্জাল’, ‘লাল শাড়ি’, ‘প্রহেলিকা’, ‘ক্যাসিনো’, ‘কাগজের বউ’ ও ‘রিভেঞ্জ’।
‘ক্যাসিনো’র পরিচালক সৈকত নাসির বললেন, ‘আমাদের ছবি অবশ্যই ঈদে আসতে হবে। প্রযোজকের আগ্রহেই আমাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। তবে এটাও ঠিক, দেশে যে পরিমাণ সিনেমা হল আছে, তাতে এতগুলো ছবির মুক্তি মোটেও কাম্য নয়।’
‘অন্তর্জাল’ ছবির পরিচালক দীপংকর দীপন ঈদে এত ছবির কথা শুনে বললেন, বাংলাদেশের মতো এত বড় একটা দেশে কার্যকর প্রেক্ষাগৃহ রয়েছে ৭০-৮০টি। তিন-চারটির বেশি ছবি মুক্তি না হওয়াই ভালো। বেশি হওয়াতে সব সিনেমারই ক্ষতি হবে।
পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী গত সোমবার সন্ধ্যায় জানালেন, ‘প্রহেলিকা’ ঈদেই আসবে। এত ছবি মুক্তির খবরে খানিকটা চিন্তিত এই ছবির নায়ক মাহফুজ আহমেদ, ‘এত কষ্ট, এত পরিশ্রম করে একজন অভিনয়শিল্পী অভিনয় করেন, দর্শকের কাছে ছবিটা ভালোভাবে না পৌঁছালে অভিনয়শিল্পী হিসেবে খুব কষ্টের। তবে এটা বলতে চাই, ‘প্রহেলিকা’ অসাধারণ গল্পের ছবি, একেবারেই মৌলিক গল্প, দর্শক একবার দেখলেই ছবিটির প্রতি তাঁদের ভালো লাগা তৈরি হবে।’
‘সুড়ঙ্গ’ দিয়ে টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশোর বড় পর্দায় অভিষেক ঘটছে। আলফা আই স্টুডিওজ ও চরকি প্রযোজিত ছবিটির পরিচালক রায়হান রাফি বললেন, ‘মহরতের সময়ই বলেছিলাম, ঈদে আসব, সেভাবেই আমরা তৈরি হয়ে এসেছি। ঈদ তো সবার জন্য ওপেন। তাই যাঁরা সিনেমা নিয়ে কনফিডেন্ট, তাঁদেরই আসা উচিত। আমার ছবির সঙ্গে ২০টি মুক্তি পেলেও সমস্যা দেখি না। তবে এটাও ঠিক, একসঙ্গে এত ছবি মুক্তিতে ঝুঁকিও আছে। আর মানুষ বরাবরই ভালো ছবিকে গ্রহণ করবে, ‘পোড়ামন ২’ ও ‘পরাণ’ ছবির ক্ষেত্রেও তেমনটাই দেখেছি।’
ঈদে এবার ‘প্রিয়তমা’ নিয়ে আসছেন শাকিব খান। ছবির হিমেল আশরাফ বলেন, ‘প্রিয়তমা’ ফার্স্টলুক প্রকাশের পর সব জায়গা থেকে যে সাড়া পেয়েছি এবং প্রতিদিনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেভাবে সবার আগ্রহ দেখছি, বিশেষ করে হলমালিকেরাও যেভাবে নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছেন, তাতে আমি মনে করি না প্রেক্ষাগৃহ নিয়ে ভাবতে হবে। সংখ্যায় কত হল পাবে, এটা প্রযোজকের সিদ্ধান্ত। আমি চাই, যেখানে প্রদর্শনের ব্যবস্থা ও পরিবেশ ভালো, সেখানেই ‘প্রিয়তমা’ চলবে।’
এবারও ঈদে সারা দেশে বন্ধ থাকা শতাধিক প্রেক্ষাগৃহ চালু হবে বলে জানালেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা মিয়া আলাউদ্দিন। তারপরও এই সময়ে ঈদে এত ছবি মুক্তির সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী বলে মনে করছেন চলচ্চিত্রের এই প্রবীণ ব্যবসায়ী, ‘আমি যখন চলচ্চিত্র পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, তখন ১ হাজার ৪০০ সিনেমা হল ছিল। সর্বোচ্চ সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল ১৩টি। সুপার ফ্লপ ছবিটাও ৬০-৭০টি হলে রিলিজ হয়েছিল। ওই সময় তো এখন আর নেই। এই সময়ে সর্বোচ্চ তিন-চারটি ছবি মুক্তি দেওয়াই ভালো।’