ঢাকা ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাইবান্ধা-৫ আসনে পুনঃভোট গ্রহন শুরু

অনিয়মের কারণে মাঝপথে বন্ধ হওয়া গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের উপনির্বাচনে পুনঃভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।

বুধবার (৪ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) শুরু হওয়া এ ভোটগ্রহণ একটানা চলবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।

প্রতিটি কেন্দ্র সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশন সব ব্যবস্থা নিয়েছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীসহ পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে শীত উপেক্ষা করে ভোর থেকে ভোটাররা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছেন। পুনরায় ভোটগ্রহণে খুশি তারা।

এ আসনের সাঘাটা-ফুলছড়ি উপজেলায় ১৭টি ইউনিয়নের ১৪৫টি ভোট কেন্দ্রে নারী-পুরুষসহ তিন লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৭০ হাজার ১৬০ জন এবং পুরুষ ভোটার এক লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ জন। দুই উপজেলায় ভোটকেন্দ্র ১৪৫টি এবং বুথের সংখ্যা ৯৫২টি।

এদিকে নির্বাচনে অনিয়মের পুনরাবৃত্তি হলে ছাড় দেয়া হবে না বলে সতর্ক করে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, ‘অনিয়মের গ্র্যাভিটি দেখে সেই মুহূর্তে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এটুকু বলতে পারি, কোনো অনিয়মকে একেবারেই প্রশ্রয় দেব না আমরা।’

গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কামাল হোসেন জানান, নির্বাচনে অনিয়ম ঠেকাতে এ আসনের দুই উপজেলার ১৪৫টি ভোটকেন্দ্রেই থাকছে সিসি ক্যামেরা। নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় র‍্যাবের ৯টি টিম, ৪ প্লাটুন বিজিবি, ৫টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে ৬টি মোবাইল টিম মাঠে কাজ করছে। এ ছাড়াও নিরাপত্তায় বাড়তি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

কেন্দ্রগুলোতে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ১৪৫ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৯৫২ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ১ হাজার ৯০৪ জন পোলিং অফিসার।

এর আগে, মঙ্গলবার (০৩ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মেলন শেষে ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাচন অফিস ও সাঘাটা উপজেলা নির্বাচনে অফিস থেকে নির্বাচনী সামগ্রী কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

গাইবান্ধা -৫ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, ভোটগ্রহণ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করতে কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৫ আসনটি শূন্য হয়। সেই আসনে গত ১২ অক্টোবর উপনির্বাচনে সম্পূর্ণ ইভিএমে ভোটগ্রহণ হচ্ছিল। তবে সিসি ক্যামেরায় এক-তৃতীয়াংশ কেন্দ্রে অনিয়মের দৃশ্য দেখে মাঝপথে ঢাকা থেকে নির্বাচন বন্ধের নির্দেশ দেয় ইসি।

গাইবান্ধায় এর আগে ভোটে অনিয়মে জড়িতদের চিহ্নিত করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন। সেই তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মে সম্পৃক্ততার দায়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, পুলিশের উপপরিদর্শক, নির্বাহী হাকিমসহ শতাধিক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাচনী এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

এক মাস সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে জানাতে বলা হয়েছে ইসি থেকে। এরপর গত ৬ ডিসেম্বর গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচনের পুনঃভোটের জন্য ৪ জানুয়ারি নতুন তারিখ ঠিক করে নির্বাচন কমিশন।

এ পুনঃভোটের জন্য প্রার্থীদের প্রচারকালে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

ট্যাগস

গাইবান্ধা-৫ আসনে পুনঃভোট গ্রহন শুরু

আপডেট সময় ১০:১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৩

অনিয়মের কারণে মাঝপথে বন্ধ হওয়া গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের উপনির্বাচনে পুনঃভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।

বুধবার (৪ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) শুরু হওয়া এ ভোটগ্রহণ একটানা চলবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।

প্রতিটি কেন্দ্র সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশন সব ব্যবস্থা নিয়েছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীসহ পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে শীত উপেক্ষা করে ভোর থেকে ভোটাররা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছেন। পুনরায় ভোটগ্রহণে খুশি তারা।

এ আসনের সাঘাটা-ফুলছড়ি উপজেলায় ১৭টি ইউনিয়নের ১৪৫টি ভোট কেন্দ্রে নারী-পুরুষসহ তিন লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৭০ হাজার ১৬০ জন এবং পুরুষ ভোটার এক লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ জন। দুই উপজেলায় ভোটকেন্দ্র ১৪৫টি এবং বুথের সংখ্যা ৯৫২টি।

এদিকে নির্বাচনে অনিয়মের পুনরাবৃত্তি হলে ছাড় দেয়া হবে না বলে সতর্ক করে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, ‘অনিয়মের গ্র্যাভিটি দেখে সেই মুহূর্তে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এটুকু বলতে পারি, কোনো অনিয়মকে একেবারেই প্রশ্রয় দেব না আমরা।’

গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কামাল হোসেন জানান, নির্বাচনে অনিয়ম ঠেকাতে এ আসনের দুই উপজেলার ১৪৫টি ভোটকেন্দ্রেই থাকছে সিসি ক্যামেরা। নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় র‍্যাবের ৯টি টিম, ৪ প্লাটুন বিজিবি, ৫টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে ৬টি মোবাইল টিম মাঠে কাজ করছে। এ ছাড়াও নিরাপত্তায় বাড়তি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

কেন্দ্রগুলোতে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ১৪৫ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৯৫২ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ১ হাজার ৯০৪ জন পোলিং অফিসার।

এর আগে, মঙ্গলবার (০৩ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মেলন শেষে ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাচন অফিস ও সাঘাটা উপজেলা নির্বাচনে অফিস থেকে নির্বাচনী সামগ্রী কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

গাইবান্ধা -৫ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, ভোটগ্রহণ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করতে কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৫ আসনটি শূন্য হয়। সেই আসনে গত ১২ অক্টোবর উপনির্বাচনে সম্পূর্ণ ইভিএমে ভোটগ্রহণ হচ্ছিল। তবে সিসি ক্যামেরায় এক-তৃতীয়াংশ কেন্দ্রে অনিয়মের দৃশ্য দেখে মাঝপথে ঢাকা থেকে নির্বাচন বন্ধের নির্দেশ দেয় ইসি।

গাইবান্ধায় এর আগে ভোটে অনিয়মে জড়িতদের চিহ্নিত করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন। সেই তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মে সম্পৃক্ততার দায়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, পুলিশের উপপরিদর্শক, নির্বাহী হাকিমসহ শতাধিক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাচনী এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

এক মাস সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে জানাতে বলা হয়েছে ইসি থেকে। এরপর গত ৬ ডিসেম্বর গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচনের পুনঃভোটের জন্য ৪ জানুয়ারি নতুন তারিখ ঠিক করে নির্বাচন কমিশন।

এ পুনঃভোটের জন্য প্রার্থীদের প্রচারকালে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।