একাধিক জন্ম নিবন্ধন দিয়ে একাধিক আবেদনের মাধ্যমে তথ্য গোপন করে লটারি জিতে বরিশাল ‘সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের’ তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া ৫৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করেছে জেলা প্রশাসন। নগরীর আরও ৪টি সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া আরও প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
বরিশালের ৫টি সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি সংক্রান্ত কমিটির সদস্য সচিব ও সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবা হোসেন জানান, সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের তৃতীয় শ্রেণিতে কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইন লটারির মাধ্যমে নির্বাচিতদের তালিকা ২২ ডিসেম্বর হাতে পান তারা। সবগুলো স্কুলে ভর্তি প্রক্রিয়া চলার সময় একই শিক্ষার্থীর একাধিক জন্ম নিবন্ধন দিয়ে একই নামে এবং ছবি জালিয়াতি করে আবেদন করে লটারি জিতে ভর্তির হওয়ার প্রমাণ পায় যাচাই-বাছাই কমিটি। অসত্য তথ্য দিয়ে সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া ৫৯ জনের তালিকা ভর্তি কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসককে দেয়া হয়েছে। অন্য ৪ স্কুলে তথ্য গোপন করে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকাও জেলা প্রশাসকের কাছে দেয়া হবে। কমিটির সভাপতি হিসেবে তিনি ভর্তি বাতিলের আদেশে স্বাক্ষর করবেন।
জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম জানান, ভর্তি কমিটি যাচাই-বাছাই করে জিলা স্কুলে লটারির মাধ্যমে ভর্তি হওয়া অনেকের একাধিক জন্ম নিবন্ধনে একাধিক আবেদনের তথ্য পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত ৫০ জনের তথ্য গোপনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিষয়টি ভর্তি কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসককে তালিকা আকারে দেয়া হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মনদীপ ঘড়াই জানান, জিলা স্কুলে এ পর্যন্ত ৫০ শিক্ষার্থী, মডেল স্কুলে ৪ জন এবং শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্কুলে ৩ জন শিক্ষার্থী মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভর্তির প্রমাণ পাওয়া গেছে। শহীদ আরজুমনি স্কুলে ভর্তিতে তথ্য গোপনকারীদের তথ্য দিতে পারেননি তিনি।
‘শহীদ আরজুমনি সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের’ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শ্রীমতি অনিতা জানান, তাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষক বদলি হয়ে গেছে। এ কারণে তারা এখনও ভর্তিতে তথ্য গোপনকারীদের শনাক্ত করতে পারেননি। তবে আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে এই তালিকা জেলা প্রশাসকে দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে তথ্য গোপন করে ভর্তি হওয়া ৫৯ জনের তালিকা পেয়েছেন। তাদের ভর্তি বাতিলের আদেশে গতকাল বিকেলে স্বাক্ষর করেছেন। অন্য ৪ স্কুলে তথ্য গোপন করে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা পেলে তাদের ভর্তিও বাতিল করা হবে বলে জেলা প্রশাসক জানান।
ভর্তি বাতিল হলে শূন্য কোটার বিপরীতে লটারি জিতে অপেক্ষমান তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের ক্রমানুসারে ভর্তি করা হবে বলে জানিয়েছেন ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব মাহবুবা হোসেন।
বরিশালের ৫টি সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের মধ্যে এবার জিলা স্কুল ও সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির প্রভাতী ও দিবা শাখায় ২৪০ জন করে এবং সরকারী মডেল স্কুল, শহীদ আরজুমনি সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১২০ জন করে মোট ৮৪০ জন শিশু ভর্তি হয়।