ঢাকা ০৯:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নওগাঁয় আবাসিক এলাকায় ট্রাক-সিএনজি টার্মিনাল নির্মান বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

নওগাঁ প্রতিনিধি:  নওগাঁ শহর যাবযট ও মাদকমুক্ত করতে পার-নওগাঁ মহল্লার টিএনটি পাড়ার আবাসিক এলাকায় ট্র্যাক-সিএনজি টারর্মিনালের সিদ্ধান্ত বাতিল করে উক্ত স্থানে শেখ রাশেল মিনি স্টেডিয়াম বা শিশুদের বিনোদনের জন্য জননেতা আব্দুল জলিল শিশু পার্ক নির্মানের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার বেলা সাড়ে ১২টায় শহরের পার-নওগাঁ টিএনটি পাড়া (সিএমবি ইটভাটা) এলাকায় পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সর্বস্তরের জনসাধারণ আয়োজনে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোফাখখারুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নওগাঁ পৌরসভার প্যানেল মেয়র সারোয়ার তানজীদ সম্রাট, ৯ নং পৌর কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান সাগর, ৮নং রবিউল ইসলাম রুবেল, উত্তরাঞ্চল উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুর রহমান সহ, স্থানীয় বাসিন্দা মিতা খাতুন, জাভেদ হোসেন প্রমুখ। এসময় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে এলাকার শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে।

মানববন্ধনে নওগাঁ পৌরসভার প্যানেল মেয়র সারোয়ার তানভীর সম্রাট বলেন, এটি একটি আবাসিক এলাকা। এখানে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল গড়ে তোলা হলে এলাকার পরিবেশ বিনষ্ট হবে, কারন যারা ড্রাইভার বা হেলপার তারা অনেকেই মাদক গ্রহণ করে থাকে। এখানে অনেক মানুষের সমাগম হবে। যা আবাসিক এলাকার সার্বিক পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরুপ। গত জানুয়ারি মাসের ৭তারিখে ১৪বিঘা সরকারি জমিতে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মানের অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন। এর আগে এলাকার মানুষ বার বার এটার বিরোধিতা করে আসছে তবুও ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মানের অনুমতি দেয়া হয়েছে। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে টার্নিমাল নির্মান বন্ধ করা হোক। প্রয়োজনে এখানে পার্ক বা কবরস্থান নির্মান করা হোক।

৮নং রবিউল ইসলাম রুবেল বলেন, এখানে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মান অযৌক্তিক। কিভাবে জেলা প্রশাসন সরকারি জমিতে অনুমতি দিলো বুঝলাম না। এখানে সরকারি প্রায় ১৪বিঘা জমি আছে। এখানে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মানের অনুমতি বাতিল করে আব্দুল জলিল শিশু পার্ক, শেখ রাসেল শিশু পার্ক বা সরকারি কবরস্থান নির্মান করা হোক। যদি ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মান বন্ধ না করা হয়, তবে আগামীতে এলাকাবাসী তীব্র আন্দোলনে নামবে।

জেলা সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আসিকুজ্জামান আশিক জানান, জানুয়ারি মাসের ৭তারিখে সরকারী প্রায় ১৪ বিঘা জমি জেলা ট্রাক পরিবহন মালিক গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করেন সাবেক জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদ। বর্তমানে মাটি ভরাট করে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মান কাজ চলছে। শহরবাসীকে যানজট থেকে মুক্তি দিতেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এখন যারা বাঁধা দিচ্ছে বা আপত্তি জানাচ্ছে তাদের হয়তো কোন অসৎ উদ্দেশ্যে আছে।

জেলা ট্রাক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণত সম্পাদক শেখ ফরিদ উদ্দীন বলেন, শহরের ভিতর দিয়ে যে প্রধান রাস্তা তা অনেক ছোট। আর এই জন্য শহরে অনেক যানজট দেখা যায়। শহরের মধ্যে কোন টার্মিনাল না থাকায় রাস্তার ধারে ট্রাক ও সিএনজি সহ অন্যান্য যানবাহন রাখার জন্য যানজটের সৃষ্টি হয়। আর এ টার্মিনালটি চালু হলে শহরের যানজট অনেকটাই কমে যাবে। যার কারনেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের ১৪বিঘা সরকারি জমিতে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মানের জন্য জমি দেয়া হয়েছে। এখন গুটিকয়েক মানুষ কেন আপত্তি জানাচ্ছে তা বুঝলাম না। শুধু আমাদের সুবিধার জন্য নয়, শহরবাসী যাতে যানজট থেকে মুক্তি পায় তার জন্য টার্মিনাল নির্মান করা হচ্ছে। যেহতু আমাদের জায়গাটি হস্থান্তর করা হয়েছে যার কারনে আমরা টার্মিনাল নির্মান করছি।

নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিল্টন চন্দ্র রায় বলেন, গত জানুয়ারি মাসের শুরুতে পার-নওগাঁ টি এ্যান্ড টি অফিসের পাশে সরকারী প্রায় ১৪ বিঘা জমি জেলা ট্রাক পরিবহন মালিক গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শহরের যানজট নিরসনে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর আগে স্থানীয় এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়েই জায়গাটি হস্তান্তর করা হয়। সে সময় তো এলাকাবাসীর কোন বাঁধা বা আপত্তি ছিলনা। এখন যদি এলাকাবাসীর আপত্তি থাকে তাহলে আমাদের লিখিতভাবে জানালে পরবর্তী কি প্রদক্ষেপ নেয়া যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করে সিন্ধান্ত নেয়া হবে।

ট্যাগস

নওগাঁয় আবাসিক এলাকায় ট্রাক-সিএনজি টার্মিনাল নির্মান বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

আপডেট সময় ০৭:৫১:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ মার্চ ২০২২

নওগাঁ প্রতিনিধি:  নওগাঁ শহর যাবযট ও মাদকমুক্ত করতে পার-নওগাঁ মহল্লার টিএনটি পাড়ার আবাসিক এলাকায় ট্র্যাক-সিএনজি টারর্মিনালের সিদ্ধান্ত বাতিল করে উক্ত স্থানে শেখ রাশেল মিনি স্টেডিয়াম বা শিশুদের বিনোদনের জন্য জননেতা আব্দুল জলিল শিশু পার্ক নির্মানের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার বেলা সাড়ে ১২টায় শহরের পার-নওগাঁ টিএনটি পাড়া (সিএমবি ইটভাটা) এলাকায় পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সর্বস্তরের জনসাধারণ আয়োজনে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোফাখখারুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নওগাঁ পৌরসভার প্যানেল মেয়র সারোয়ার তানজীদ সম্রাট, ৯ নং পৌর কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান সাগর, ৮নং রবিউল ইসলাম রুবেল, উত্তরাঞ্চল উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুর রহমান সহ, স্থানীয় বাসিন্দা মিতা খাতুন, জাভেদ হোসেন প্রমুখ। এসময় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে এলাকার শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে।

মানববন্ধনে নওগাঁ পৌরসভার প্যানেল মেয়র সারোয়ার তানভীর সম্রাট বলেন, এটি একটি আবাসিক এলাকা। এখানে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল গড়ে তোলা হলে এলাকার পরিবেশ বিনষ্ট হবে, কারন যারা ড্রাইভার বা হেলপার তারা অনেকেই মাদক গ্রহণ করে থাকে। এখানে অনেক মানুষের সমাগম হবে। যা আবাসিক এলাকার সার্বিক পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরুপ। গত জানুয়ারি মাসের ৭তারিখে ১৪বিঘা সরকারি জমিতে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মানের অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন। এর আগে এলাকার মানুষ বার বার এটার বিরোধিতা করে আসছে তবুও ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মানের অনুমতি দেয়া হয়েছে। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে টার্নিমাল নির্মান বন্ধ করা হোক। প্রয়োজনে এখানে পার্ক বা কবরস্থান নির্মান করা হোক।

৮নং রবিউল ইসলাম রুবেল বলেন, এখানে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মান অযৌক্তিক। কিভাবে জেলা প্রশাসন সরকারি জমিতে অনুমতি দিলো বুঝলাম না। এখানে সরকারি প্রায় ১৪বিঘা জমি আছে। এখানে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মানের অনুমতি বাতিল করে আব্দুল জলিল শিশু পার্ক, শেখ রাসেল শিশু পার্ক বা সরকারি কবরস্থান নির্মান করা হোক। যদি ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মান বন্ধ না করা হয়, তবে আগামীতে এলাকাবাসী তীব্র আন্দোলনে নামবে।

জেলা সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আসিকুজ্জামান আশিক জানান, জানুয়ারি মাসের ৭তারিখে সরকারী প্রায় ১৪ বিঘা জমি জেলা ট্রাক পরিবহন মালিক গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করেন সাবেক জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদ। বর্তমানে মাটি ভরাট করে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মান কাজ চলছে। শহরবাসীকে যানজট থেকে মুক্তি দিতেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এখন যারা বাঁধা দিচ্ছে বা আপত্তি জানাচ্ছে তাদের হয়তো কোন অসৎ উদ্দেশ্যে আছে।

জেলা ট্রাক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণত সম্পাদক শেখ ফরিদ উদ্দীন বলেন, শহরের ভিতর দিয়ে যে প্রধান রাস্তা তা অনেক ছোট। আর এই জন্য শহরে অনেক যানজট দেখা যায়। শহরের মধ্যে কোন টার্মিনাল না থাকায় রাস্তার ধারে ট্রাক ও সিএনজি সহ অন্যান্য যানবাহন রাখার জন্য যানজটের সৃষ্টি হয়। আর এ টার্মিনালটি চালু হলে শহরের যানজট অনেকটাই কমে যাবে। যার কারনেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের ১৪বিঘা সরকারি জমিতে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মানের জন্য জমি দেয়া হয়েছে। এখন গুটিকয়েক মানুষ কেন আপত্তি জানাচ্ছে তা বুঝলাম না। শুধু আমাদের সুবিধার জন্য নয়, শহরবাসী যাতে যানজট থেকে মুক্তি পায় তার জন্য টার্মিনাল নির্মান করা হচ্ছে। যেহতু আমাদের জায়গাটি হস্থান্তর করা হয়েছে যার কারনে আমরা টার্মিনাল নির্মান করছি।

নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিল্টন চন্দ্র রায় বলেন, গত জানুয়ারি মাসের শুরুতে পার-নওগাঁ টি এ্যান্ড টি অফিসের পাশে সরকারী প্রায় ১৪ বিঘা জমি জেলা ট্রাক পরিবহন মালিক গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শহরের যানজট নিরসনে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর আগে স্থানীয় এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়েই জায়গাটি হস্তান্তর করা হয়। সে সময় তো এলাকাবাসীর কোন বাঁধা বা আপত্তি ছিলনা। এখন যদি এলাকাবাসীর আপত্তি থাকে তাহলে আমাদের লিখিতভাবে জানালে পরবর্তী কি প্রদক্ষেপ নেয়া যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করে সিন্ধান্ত নেয়া হবে।