ঢাকা ১১:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নওগাঁর বদলগাছীতে প্রবেশ পথে বাঁশের বেড়া ভোগান্তিতে গ্রামবাসী

স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁ : নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় একটি গ্রামে প্রবেশের সবপথ বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে প্রভাবশালী আমিনুর ইসলাম ও তার স্বজনরা।

এতে গত তিনমাস থেকে উপজেলার মিঠাপুর ইউনিয়নের উত্তর মিঠাপুর কাঁঠালতলী গ্রামে যাতায়াতের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে অর্ধশতাধিক পরিবারকে।

মাতব্বররা তাদের বুঝিয়েও সমস্যার কোনো সমাধান করতে পারেনি। স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, কাঁঠালতলী গ্রামের রশিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে একটি বাড়ি দেয়া হয়। তার বাড়িটি রাস্তা থেকে প্রায় দেড়শ ফুট ভেতরে।

রাস্তা থেকে গ্রামে প্রবেশ করার জন্য আগে থেকেই সরু গলির পথ ছিল। রশিদুল ইসলামের বাড়ি ভেতরে হওয়ায় ভ্যান নিয়ে যেতে পারেন না। ভ্যান নিয়ে বাড়ি যাওয়ার বিকল্প রাস্তা থাকলেও তিনি সেদিক দিয়ে যাবেন না।

বরং গলির পাশে রেজাউল নামে এক ব্যক্তির বাড়ি ভেঙে তিনি জোরপূর্বক রাস্তা নেয়ার চেষ্টা করছেন। গলির আশপাশে বাড়ির মালিক রেজাউল, রাজ্জাক, ইউনুস ও বাবলুসহ কয়েকজন এতে বাঁধা দেয়। বাড়ি ভেঙ্গে রেজাউল রাস্তা দিতে রাজি হয়নি।

রাস্তা না দেয়ায় রশিদুল ইসলামের স্বজন প্রভাবশালী আমিনুর ইসলামের পরামর্শে সুলতান হোসেন, বিদ্যুৎ হোসেন, হাসিদুল ইসলামসহ কয়েকজন গ্রামের মানুষের যাতায়াতের রাস্তাগুলো বাঁশ দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।

এতে ওই গ্রামের একটি বাড়ি থেকে আর একটি বাড়িতে যাওয়া আসা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে গত তিনমাস থেকে যাতায়াতের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে অর্ধশতাধিক পরিবারকে।

গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি গ্রামের প্রবেশ করার জন্য সরু গলির রাস্তা আছে।

আগে যেমন ছিল, এখনও তেমনই আছে। গ্রামের লোকজন যাতায়াত করে। কিন্তু রশিদুল ইসলামকে সরকার থেকে একটি বাড়ি দেয়ার পর তার বাড়িতে ভ্যান যেতে পারে না।

‘আমি যদি বাড়ি ভেঙে রাস্তা না দেই তাহলে রশিদুল ইসলাম বিভিন্নভাবে মারপিটসহ খুন জখমের হুমকি দিচ্ছে।

রশিদুলের স্বজন প্রভাবশালী আমিনুর ইসলামের সহযোগিতায় বাঁশের বেড়া দিয়ে পুরো রাস্তার অলিগলি বন্ধ করে দিয়েছে। মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আপসের চেষ্টা করা হলেও তারা মানছেন না।’

এ ব্যাপারে রশিদুল ইসলাম বলেন, সরকার থেকে একটি ইটের বাড়ি পাওয়ার পর ভ্যান নিয়ে বাড়িতে যেতে পারছি না। গলির রাস্তার একটু প্রসস্ত করার জন্য বলা হলে তারা জায়গা ছেড়ে দিতে রাজি হচ্ছে না।

আমি আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে গ্রামের সকল রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছি। আমি ভ্যান নিয়ে অনেক কষ্ট করে যাতায়াত করছি। আমার বাড়িতে ভ্যান নিয়ে যাওয়া-আসার রাস্তা দিলে সব বাঁশের বেড়া খুঁলে দেয়া হবে।

এ ব্যাপারে আমিনুর ইসলাম বলেন, রশিদুল ইসলাম আমার আত্মীয় হয়। তার বাড়িতে ভ্যান যাওয়ার মতো রাস্তা না দিলে যত বড় কেউ আসুক না কেন বাঁশের বেড়া খুঁলে দেয়া হবে না।

গ্রামের মাতব্বর এমদাদুল হোসেন ও ফিরোজ হোসেন বলেন, বাঁশের বেড়া দেয়ায় এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়িতে মানুষ যাওয়া আসা করতে পারছে না।

রশিদুল ইসলামের আত্মীয়-স্বজন আমিনুরকে নিয়ে অনেক বার আলোচনা করেও সমাধান করা সম্ভব হয়নি। তারা চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কথা মানে না। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

স্থানীয় মিঠাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেন বলেন, আমিনুর কাউকে মানে না। তাই সমাধান করা সম্ভব হয়নি।

বদলগাছী থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ কর্মকর্তাকে তদন্ত করার জন্য পাঠানো হয়েছে।

জায়গা-জমি নিয়ে তাদের কয়েকজনের শরিকদের মধ্যে ঝামেলা আছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে এ পর্যন্ত কোনো পক্ষই অভিযোগ দেয়নি।

ট্যাগস

নওগাঁর বদলগাছীতে প্রবেশ পথে বাঁশের বেড়া ভোগান্তিতে গ্রামবাসী

আপডেট সময় ১১:৪৩:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ জুলাই ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁ : নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় একটি গ্রামে প্রবেশের সবপথ বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে প্রভাবশালী আমিনুর ইসলাম ও তার স্বজনরা।

এতে গত তিনমাস থেকে উপজেলার মিঠাপুর ইউনিয়নের উত্তর মিঠাপুর কাঁঠালতলী গ্রামে যাতায়াতের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে অর্ধশতাধিক পরিবারকে।

মাতব্বররা তাদের বুঝিয়েও সমস্যার কোনো সমাধান করতে পারেনি। স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, কাঁঠালতলী গ্রামের রশিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে একটি বাড়ি দেয়া হয়। তার বাড়িটি রাস্তা থেকে প্রায় দেড়শ ফুট ভেতরে।

রাস্তা থেকে গ্রামে প্রবেশ করার জন্য আগে থেকেই সরু গলির পথ ছিল। রশিদুল ইসলামের বাড়ি ভেতরে হওয়ায় ভ্যান নিয়ে যেতে পারেন না। ভ্যান নিয়ে বাড়ি যাওয়ার বিকল্প রাস্তা থাকলেও তিনি সেদিক দিয়ে যাবেন না।

বরং গলির পাশে রেজাউল নামে এক ব্যক্তির বাড়ি ভেঙে তিনি জোরপূর্বক রাস্তা নেয়ার চেষ্টা করছেন। গলির আশপাশে বাড়ির মালিক রেজাউল, রাজ্জাক, ইউনুস ও বাবলুসহ কয়েকজন এতে বাঁধা দেয়। বাড়ি ভেঙ্গে রেজাউল রাস্তা দিতে রাজি হয়নি।

রাস্তা না দেয়ায় রশিদুল ইসলামের স্বজন প্রভাবশালী আমিনুর ইসলামের পরামর্শে সুলতান হোসেন, বিদ্যুৎ হোসেন, হাসিদুল ইসলামসহ কয়েকজন গ্রামের মানুষের যাতায়াতের রাস্তাগুলো বাঁশ দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।

এতে ওই গ্রামের একটি বাড়ি থেকে আর একটি বাড়িতে যাওয়া আসা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে গত তিনমাস থেকে যাতায়াতের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে অর্ধশতাধিক পরিবারকে।

গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি গ্রামের প্রবেশ করার জন্য সরু গলির রাস্তা আছে।

আগে যেমন ছিল, এখনও তেমনই আছে। গ্রামের লোকজন যাতায়াত করে। কিন্তু রশিদুল ইসলামকে সরকার থেকে একটি বাড়ি দেয়ার পর তার বাড়িতে ভ্যান যেতে পারে না।

‘আমি যদি বাড়ি ভেঙে রাস্তা না দেই তাহলে রশিদুল ইসলাম বিভিন্নভাবে মারপিটসহ খুন জখমের হুমকি দিচ্ছে।

রশিদুলের স্বজন প্রভাবশালী আমিনুর ইসলামের সহযোগিতায় বাঁশের বেড়া দিয়ে পুরো রাস্তার অলিগলি বন্ধ করে দিয়েছে। মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আপসের চেষ্টা করা হলেও তারা মানছেন না।’

এ ব্যাপারে রশিদুল ইসলাম বলেন, সরকার থেকে একটি ইটের বাড়ি পাওয়ার পর ভ্যান নিয়ে বাড়িতে যেতে পারছি না। গলির রাস্তার একটু প্রসস্ত করার জন্য বলা হলে তারা জায়গা ছেড়ে দিতে রাজি হচ্ছে না।

আমি আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে গ্রামের সকল রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছি। আমি ভ্যান নিয়ে অনেক কষ্ট করে যাতায়াত করছি। আমার বাড়িতে ভ্যান নিয়ে যাওয়া-আসার রাস্তা দিলে সব বাঁশের বেড়া খুঁলে দেয়া হবে।

এ ব্যাপারে আমিনুর ইসলাম বলেন, রশিদুল ইসলাম আমার আত্মীয় হয়। তার বাড়িতে ভ্যান যাওয়ার মতো রাস্তা না দিলে যত বড় কেউ আসুক না কেন বাঁশের বেড়া খুঁলে দেয়া হবে না।

গ্রামের মাতব্বর এমদাদুল হোসেন ও ফিরোজ হোসেন বলেন, বাঁশের বেড়া দেয়ায় এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়িতে মানুষ যাওয়া আসা করতে পারছে না।

রশিদুল ইসলামের আত্মীয়-স্বজন আমিনুরকে নিয়ে অনেক বার আলোচনা করেও সমাধান করা সম্ভব হয়নি। তারা চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কথা মানে না। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

স্থানীয় মিঠাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেন বলেন, আমিনুর কাউকে মানে না। তাই সমাধান করা সম্ভব হয়নি।

বদলগাছী থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ কর্মকর্তাকে তদন্ত করার জন্য পাঠানো হয়েছে।

জায়গা-জমি নিয়ে তাদের কয়েকজনের শরিকদের মধ্যে ঝামেলা আছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে এ পর্যন্ত কোনো পক্ষই অভিযোগ দেয়নি।