স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁ : নওগাঁর রাণীনগরে দাবিকৃত যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন ও লাথি মেরে পেটের সন্তান হত্যার অভিযোগে স্বামী,শ্বশুড়,শ্বাশুড়ী,ভাসুরসহ ৬জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ ঘটনায় থানাপুলিশ অভিযান চালিয়ে স্বামী সিবলু (২২) কে গ্রেফতার করে রোববার সকালে আদালতে প্রেরণ করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পশ্চিম বালুভরা গ্রামে। স্ত্রী সাথী (২০) বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার অন্তাহার গ্রামের শাহিন মন্ডলের মেয়ে।
মামলার বাদী সাথী আক্তারের বাবা শাহিন মন্ডল মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের বলেন,তার মেয়ে সাথীকে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পশ্চিম বালুভরা গ্রামের শাকবর রহমানের ছেলে সিবলুর সাথে গত বছরের ২০মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেয়া হয়।
বিয়েতে ১ লক্ষ ৪৯ হাজার ৯৯৯ টাকা দেনমোহর ধার্য করে এবং মেয়ে-জামাযের সুখের জন্য ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ও বেশ কিছু আসবাবপত্র দেয়।
এর কিছু দিন পর থেকেই ব্যবসার জন্য জামায় সিবলু সাথীর নিকট ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় নানান ভাবে সাথীর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলতে থাকে।
এরইমধ্যে বেশ কয়েক বার স্থানীয়ভাবে সমাধানও করে। তার পরেও গত ৩০ মে সিবলু তার তার বাবা,মা.বড়ভাইসহ নিকট আত্মীয়দের কুপরামর্শে যৌতুকের দাবিতে সাথীকে মারপিট করতে থাকে এবং পেটে লাথি মারলে রক্তক্ষরণ শুরু হয়।
ওই দিনই খবর পেয়ে সাথীর পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। এরপর আল্ট্রাসনোগ্রাফী করে দেখতে পান লাথির আঘাতে ৪ মাসের সন্তান পেটের মধ্যে মারা গেছে।
এর পরেও বিষয়গুলো নিয়ে স্থানীয় ভাবে মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে দাবিকৃত যৌতুকের টাকা না পাওয়ায় লাথি মেরে পেটের সন্তান হত্যার অভিযোগ এনে সাথী নিজেই বাদী হয়ে গত ২৬ জুন নওগাঁ আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন।
আদালতের বিচারক অভিযোগটি আমলে নিয়ে রাণীনগর থানাপুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহনপূর্বক আসামি গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণের নির্দেশ দেয়।
শনিবার রাতে রাণীনগর থানাপুলিশ আদালত থেকে প্রেরিত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গন্য করে ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে স্বামী সিবলুকে গ্রেফতার করে।
রাণীনগর থানার ওসি মো: শাহিন আকন্দ বলেন,এঘটনার মূল আসামি স্বামী সিবলুকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করে রোববার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।