ঢাকা ১০:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনায় কাজ না পেয়ে ক্ষুধার জালায় চুরি করতে গিয়ে ধরা খেল যুবক

স্টাফ রিপোর্টার :  ‘করোনায় কাম হারাইছি, দুই দিন যাবৎ কিছুই খাই নাই—তাই চুরি করছি। ’ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মানিবাগ চুরির অভিযোগে আটক জুয়েল (২২) নামে এক যুবক পুলিশ সদস্যদের কাছে এ কথা বলেন।

সোমবার (৬ জুলাই) দুপুরের দিকে হাসপাতালের নতুন ভবনের অষ্টম তলা থেকে এক রোগীর মানিব্যাগ চুরির অভিযোগে জুয়েলকে আটক করেন আনসার সদস্যরা।

আটকের পর কয়েকজন আনসার সদস্য তার হাত বেঁধে গলায় ‘আমি চোর, আমাকে চিনে রাখুন’ লেখা একটি কাগজের প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে পুরো হাসপাতালে ঘোরান।

এক পর্যায়ে আটক জুয়েলকে ওই অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পে নেওয়া হয়। তখন তিনি পুলিশ সদস্যদের বলেন—‘করোনার সময় আমি কাম হারাইছি, দুই দিন যাবত তেমন কিছু খাই নাই। তাই চুরি করতে হাসপাতালে আসছি’।

আটক জুয়েলের কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) বাচ্চু মিয়া তার হাতের বাঁধন খুলে তাকে খাবার খেতে দেন।

আটক জুয়েল জানান, তার বাড়ি বরিশালের কাউখালী উপজেলার। তিনি গুলিস্তানের ফুটপাতে হোটেলে ভাত রান্নার কাজ করতেন। করোনাকালে সেই হোটেল বন্ধ হয়ে গেছে।

তার হাতে কোনো কাজ নেই। গত দুই দিন যাবত তেমন কিছুই খেতে পাননি তিনি। তাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলেন খাবারের সন্ধানে। পরে নতুন ভবনে এক রোগীর পাশে মানিব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে, সেটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়েন জুয়েল।

এ ব্যাপারে কথা হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসারের প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) আব্দুল আউয়ালের সঙ্গে। তিনি জানান, বাদী জুয়েলকে ধরিয়ে দিয়েছেন মানিব্যাগ চুরির অপরাধে। একটি কাগজে চোর লিখে জুয়েলের গলায় ঝুলিয়ে হাসপাতালে ঘোরানো হয়েছে। যেন সবাই তাকে চিনে রাখেন।

এক প্রশ্নের জবাবে প্লাটুন কমান্ডার বলেন, হাসপাতালে প্রায়ই রোগীদের টাকা-পয়সা চুরি হয়ে যায়। সতর্কতার জন্য ওই জুয়েলের গলায় লেখাটি ঝুলিয়ে হাসপাতালে ঘোরানো হয়েছে।

হাসপাতালের নতুন ভবনের রোগী তাইজুল ইসলাম হৃদয় বলেন, আমি হাসপাতালের বিছানায় চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ দেখতে পাই আমার মানিব্যাগটা নিয়ে ওই যুবক নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তখন তাকে ধরে ফেলি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান ঘটনার বিস্তারিত শুনে বলেন, ঘটনাটি সংস্থার নিজস্ব ব্যাপার। তবে যুবকের গলায় চোর লিখে পুরো হাসপাতালে ঘোরানো—এটা আইনে নেই।

ট্যাগস

করোনায় কাজ না পেয়ে ক্ষুধার জালায় চুরি করতে গিয়ে ধরা খেল যুবক

আপডেট সময় ০৮:০২:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ জুলাই ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার :  ‘করোনায় কাম হারাইছি, দুই দিন যাবৎ কিছুই খাই নাই—তাই চুরি করছি। ’ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মানিবাগ চুরির অভিযোগে আটক জুয়েল (২২) নামে এক যুবক পুলিশ সদস্যদের কাছে এ কথা বলেন।

সোমবার (৬ জুলাই) দুপুরের দিকে হাসপাতালের নতুন ভবনের অষ্টম তলা থেকে এক রোগীর মানিব্যাগ চুরির অভিযোগে জুয়েলকে আটক করেন আনসার সদস্যরা।

আটকের পর কয়েকজন আনসার সদস্য তার হাত বেঁধে গলায় ‘আমি চোর, আমাকে চিনে রাখুন’ লেখা একটি কাগজের প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে পুরো হাসপাতালে ঘোরান।

এক পর্যায়ে আটক জুয়েলকে ওই অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পে নেওয়া হয়। তখন তিনি পুলিশ সদস্যদের বলেন—‘করোনার সময় আমি কাম হারাইছি, দুই দিন যাবত তেমন কিছু খাই নাই। তাই চুরি করতে হাসপাতালে আসছি’।

আটক জুয়েলের কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) বাচ্চু মিয়া তার হাতের বাঁধন খুলে তাকে খাবার খেতে দেন।

আটক জুয়েল জানান, তার বাড়ি বরিশালের কাউখালী উপজেলার। তিনি গুলিস্তানের ফুটপাতে হোটেলে ভাত রান্নার কাজ করতেন। করোনাকালে সেই হোটেল বন্ধ হয়ে গেছে।

তার হাতে কোনো কাজ নেই। গত দুই দিন যাবত তেমন কিছুই খেতে পাননি তিনি। তাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলেন খাবারের সন্ধানে। পরে নতুন ভবনে এক রোগীর পাশে মানিব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে, সেটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়েন জুয়েল।

এ ব্যাপারে কথা হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসারের প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) আব্দুল আউয়ালের সঙ্গে। তিনি জানান, বাদী জুয়েলকে ধরিয়ে দিয়েছেন মানিব্যাগ চুরির অপরাধে। একটি কাগজে চোর লিখে জুয়েলের গলায় ঝুলিয়ে হাসপাতালে ঘোরানো হয়েছে। যেন সবাই তাকে চিনে রাখেন।

এক প্রশ্নের জবাবে প্লাটুন কমান্ডার বলেন, হাসপাতালে প্রায়ই রোগীদের টাকা-পয়সা চুরি হয়ে যায়। সতর্কতার জন্য ওই জুয়েলের গলায় লেখাটি ঝুলিয়ে হাসপাতালে ঘোরানো হয়েছে।

হাসপাতালের নতুন ভবনের রোগী তাইজুল ইসলাম হৃদয় বলেন, আমি হাসপাতালের বিছানায় চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ দেখতে পাই আমার মানিব্যাগটা নিয়ে ওই যুবক নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তখন তাকে ধরে ফেলি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান ঘটনার বিস্তারিত শুনে বলেন, ঘটনাটি সংস্থার নিজস্ব ব্যাপার। তবে যুবকের গলায় চোর লিখে পুরো হাসপাতালে ঘোরানো—এটা আইনে নেই।