টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ মাত্র ২০০ টাকার জন্য ছেলে-মেয়ে-স্ত্রীসহ নৃশংসভাবে খুন হন টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার আব্দুল গণি। তাদের হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এমন তথ্যই দিয়েছেন এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত সাগর আলী।
মঙ্গলবার (২১ জুলাই) দুপুরে টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি জবানবন্দি দেন। এ হত্যা মামলার আসামি রিকশাচালক-
সাগরকে (২৮) গত রোববার (১৯ জুলাই) আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। পরে সোমবার তাকে মধুপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নিহত আব্দুল গণির বাসার কাছেই মাস্টারপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকেন তিনি। টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানভীর অহমেদ জানান, সাগরকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে তাকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হয়। পরে সাগর তিনি এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসুল আলম তার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বুধবার (১৫ জুলাই) ঘটনার দিন সকালে সাগর দুইশ’ টাকা ধার চাইলে আব্দুল গণি তাকে খুব অপমান করেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আব্দুল গণিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সাগর। পরে তার এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে চেতনা নাশক সংগ্রহ করেন তিনি।
রাতে আব্দুল গণির বাড়িতে গিয়ে চেতনা নাশক দিয়ে তাকে, তার স্ত্রী এবং দুই ছেলে-মেয়েকে অচেতন করে হত্যা করেন। পরে ওই বাড়ি থেকে কিছু মালপত্রও লুট করেন তারা।
এদিকে রোববার মধুপুর থানা পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জোয়াদ আলী (৩০) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তিনি মধুপুরের ব্রাহ্মণবাড়ি গ্রামের আজগর আলীর ছেলে।
জোয়াদ আলীকে সোমবার টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। পরে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ডে জোয়াদ আলীর জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিক কামাল জানান, জিজ্ঞাসাবাদে জোয়াদ আলীর কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তার দেয়া তথ্য যাচাই করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১৭ জুলাই) মধুপুর উপজেলা সদরের মাস্টার পাড়ার বাড়ি থেকে ব্যবসায়ী আব্দুল গণি (৫২), তার স্ত্রী তাজিরন বেগম (৪২), ছেলে তরিকুল ওরফে তাজেল (১৮) ও মেয়ে সাদিয়ার (৭) মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তাদের প্রত্যেকের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। ওই দিনই নিহত আব্দুল গণির বড় মেয়ে সোনিয়া বেগম বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।