বরেন্দ্র জনপদজুড়ে আজ যেন উৎসবের আমেজ। কৃষিনির্ভর এই জনপদে নতুন ধানের ঘ্রাণ আর নবান্নের আনন্দ একাকার হয়ে উঠেছে। নতুন চালের পিঠা-পায়েস, ঘরে অতিথি বরণ, আর সামাজিক সংগঠনের রঙিন আয়োজন—সব মিলিয়ে অগ্রহায়নের প্রথম দিনটি যেন হয়ে ওঠে বরেন্দ্রর প্রাণের উৎসব।
বরেন্দ্রর মাঠে এখন চারদিকে সোনালি সমারোহ। পাকা ধানের শীষে ভরে ওঠা মাঠ থেকে ভেসে আসছে মৌ মৌ ঘ্রাণ। কৃষক-কৃষাণীর ব্যস্ততা বেড়েছে। এই নতুন ধান দিয়েই ঘরে ঘরে তৈরি হয় বাহারি পিঠা-পায়েস। অগ্রহায়নের প্রথম দিনটিতে প্রতিটি ঘরেই যেন থাকে আলাদা আনন্দ। খেজুর গাছের রস নামানোর ভোরের দৃশ্য, আর সেই রস দিয়ে তৈরি পায়েস ও পিঠা— বাঙালি জীবনের চিরচেনা শিকড়ের উষ্ণতা আবারও ছড়িয়ে দেয় প্রতিটি পরিবারে।
এদিকে নবান্নের প্রথম প্রহর থেকেই জেলা সামাজিক সংগঠনগুলো আয়োজন করেছে রঙিন নানা অনুষ্ঠান।শহরের মুক্তির মোড়ে শিশু-কিশোরদের নবান্নের জয়োগান “ধান কাটি কাটি ধান—নবান্ন এলো গান। মঞ্চে শিল্পীদের বর্ণিল পোশাকের নবান্নের আগমনী আহবানের লোকনৃত্য, আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। ফুটে ওঠে বাংলার শতশত বছরের লোকজ ঐতিহ্য—
সংস্কৃতি কর্মী নওরিন বলেন, আমাদের বরেন্দ্র জনপদে নবান্ন আলাদা জৌলুস ছড়ায়। কারণ কৃষি নির্ভর এ জনপদে ধানের সাথে জীবিকার রংমিশিয়ে তৈরী হয় নবান্ন উৎসব।
নওগাঁ সংগীত নিকেতনের পরিচালক অখিল চন্দ্র বলেন, এবার আমরা নবান্ন নিয়ে অনেক প্রস্ততি নিয়েছি। শিশু কিশোরদের নবান্ন আমেজ পৌছে দিতে বর্ণিল আয়োজন থাকছে সপ্তাহ ব্যাপী। 
কৃষিনির্ভর বরেন্দ্র জনপদের মানুষ এই দিনটির অপেক্ষা থাকে বছরজুড়ে। নতুন ধানকে ঘিরে গড়ে ওঠা উৎসবের আবহ শুধু আনন্দই নয়—এটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে চলা বাংলার শিকড় । সংস্কৃতিক কর্মীরা বলছেন— এই বৈচিত্রময় সংস্কৃতি নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরাই নবান্নের আসল সার্থকতা।
বরেন্দ্র জনপদে পহেলা অগ্রহায়ন মানেই নবান্নের সূচনা।এই আয়োজন চলবে সপ্তাহজুড়ে—লোকসংগীত, নাচ, আবৃত্তি, পিঠা উৎসবসহ নানা সাংস্কৃতিক প্রদর্শনীতে মুখর থাকবে শহর ও গ্রাম।

স্টাফ রিপোর্টার নওগাঁ: 




















