যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয় এবং পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের সম্মুখীন করা হয় তাহলে ৫০ শতাংশ সমস্যা এমনিতেই সমাধান হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে কোনো আপস নেই। ভারতকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে হবে তারা যদি বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র বন্ধ না করে, খুনি শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে না দেয় তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।
শুক্রবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মিরপুর ১০ নম্বরের ফকির বাড়ি লেনে জুলাই আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ এবং আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নুরুল হক নুর বলেন, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল আমলীগকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে মিনমিন করে কথা বলছে। অর্ধেক পেটে রেখে আর বাকি অর্ধেক বলে। কারণ তারা চায় না রাজনীতির মাঠে নতুন শক্তি উত্থান হোক। নতুন রাজনৈতিক দল নেতৃত্ব দিক। তারা চায় আগে আমি আর মামু খাইছি, এখনও আমরাই খামু।
নুর বলেন, এই জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের আর্তনাদ এখনো থামে নাই। যারা আহত হয়েছেন তাদের দগদগে ঘা এখনো শুকায়নি। দেয়াল লিখন এখনও জ্বলজ্বল করছে। রাজপথে রক্তের দাগ। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই রক্তের দাগ শুকানোর আগেই শুনছি রাজনীতিতে পুনর্বহাল করার জন্য দেশি-বিদেশি অনেক চক্রান্ত চলছে। পৃথিবীর যে-সব দেশেই বিপ্লব হয়েছে সেখানেই কয়েক মাসের মধ্যেই এই ধরনের ষড়যন্ত্র চক্রান্ত চলেছে, সেটি বাংলাদেশেও এখন চলছে।
ভারত উসকানি দিচ্ছে জানিয়ে ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, একটি দেশের অন্য দেশে স্থাপনা মানে সেটি সে দেশের অংশ। আপনারা দেখেছেন কলকাতায় এবং আগরতলায় আমাদের দুটো মিশন আক্রান্ত হয়েছে। আমাদের জাতীয় পতাকায় আগুন দিয়েছে এবং সেই মিশনগুলোতে কাজ করা কর্মকর্তাদের উপর হামলা করেছে। যার মধ্য দিয়ে ভারত অপপ্রচার, প্রোপাগান্ডা ও সাম্প্রদায় উসকানির পাশাপাশি একটি যুদ্ধ পরিস্থিতির তৈরির চেষ্টা করছে।
নুর বলেন, রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক হয় ন্যায্যতার ভিত্তিতে। কিন্তু তারপর বিদ্বেষমূলক আচরণ এবং বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে ষড়যন্ত্র করছে। কারণ পরিষ্কার, গত ১৬ বছরে শেখ হাসিনা ছিল ভারতের দাসী আর আওয়ামী লীগ ছিল ভারতের সেবা দাস। এই দেশের জনগণ যখন গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ভারতের দাসী ও সেবা দাসকে পরাজিত করেছে তখন সেটি ভারতের গায়ে লেগেছে। যার ফলে এই দাসী এবং সেবা দাসকে পুনর্বহাল করার জন্য ভারতের গণমাধ্যম ভারতের সুশীল সমাজ একতাবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ইউনূস সাহেবের বন্ধুরা বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে কাজ করেন। তাদেরকে আপনি এই দেশে সাত দিনের জন্য আমন্ত্রণ জানান। তাদেরকে পুরো বাংলাদেশ হেলিকপ্টার দিয়ে সাত দিন ঘুরিয়ে দেখান এবং তাদেরই প্রমাণ দেখুক ভারত অপ্রচার চালাচ্ছে।
নুরুল হক নুর বলেন, এই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বাংলাদেশের মানুষের অনেক প্রত্যাশা। কিন্তু সেই সরকারকে প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে দেখছি না। দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে। দেশের সহজ সরল মানুষ সংস্কার সংবিধান এতকিছু বোঝে না। তারা বুঝে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার জন্য বাজার স্বাভাবিক আছে কি না। কাজেই আপনাদের অনুরোধ করবো, ভর্তুকি দিয়ে হলেও দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনুন। পৃথিবীতে যত আন্দোলন হয়েছে কোথাও এমপি মন্ত্রীর বাচ্চা রাজপথে নেমে জীবন দেয় নাই। জীবন দিয়েছে এই সাধারণ মানুষেরা।