আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির বিরুদ্ধে ১৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরির অভিযোগ তুলেছে দেশটির বর্তমান নিরাপত্তা বাহিনী প্রধান।
সোমবার ডন এক প্রতিবেদনে জানায়, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থার এক তদন্ত প্রতিবেদনে ঘানির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠে। সেখানে বলা হয় তালিবান কাবুল দখল করার পর সেখান থেকে পালানোর সময় ১৬৯ মিলিয়ন ডলার সাথে করে নিয়ে যান ঘানি।
এরই প্রেক্ষিতে রবিবার ঘানি সরকারের এক জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা দাবি করেন, এই চুরির ঘটনার ভিডিও ফুটেজ আছে তার কাছে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পিরাজ আতা শারিফি নামের ওই কর্মকর্তা আশরাফ ঘানির দেহরক্ষীদের প্রধান ছিলেন।
আফগানিস্তানের একটি গোপন স্থান থেকে ডেইলি মেইলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তিনি নিজ চোখে আশরাফ ঘানিকে বড় বড় ব্যাগে করে নগদ অর্থ নিয়ে যেতে দেখেছেন। শুধু তাই না, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও জোগাড় করেছেন তিনি।
শারিফি জানান, “প্রেসিডেন্ট আসার আগে তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে মন্ত্রণালয়ের প্রহরায় নিয়োজিত সেনা সদস্যদের কাছ থেকে অস্ত্র জমা নেয়ার দায়িত্ব থাকত আমার ওপর। সেদিন আমরা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেসিডেন্টের জন্য অপেক্ষা করছিলাম, পরে শুনলাম তিনি সেখানে না এসে সোজা বিমানবন্দরে গেছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রীও পালিয়েছেন। প্রেসিডেন্টের সকল নিকটাত্মীয় আর সঙ্গী-সাথীরাও।”
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শারিফিকে খুঁজছে তালিবান, তার সন্ধান পেতে দশ লাখ ডলার পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছে।
শারিফি আরও জানান, আশরাফ ঘানি কাবুল ছাড়ার আগে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ তুলে তাকে পৌঁছে দেয় এক ব্যক্তি। প্রাসাদের সিসিটিভি ক্যামেরায় এই ঘটনার রেকর্ড আছে, যা শারিফি জোগাড় করেছেন বলে দাবি করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে প্রেসিডেন্টকে তিনি পছন্দ করতেন, ফলে তার এই কর্মকাণ্ডে তিনি হতাশ বলেও জানান শারিফি।
তিনি বলেন, “এই অর্থ কারেন্সি এক্সচেঞ্জ মার্কেটের। প্রতি বৃহস্পতিবার এই উদ্দেশ্যেই সেগুলো আনা হতো। কিন্তু এবার প্রেসিডেন্ট সেগুলো নিয়ে গেলেন। তিনি জানতেন কি ঘটতে যাচ্ছে, তাই তিনি সব অর্থ নিয়ে পালিয়ে যান।”
আশরাফ ঘানি অবশ্য এই অর্থ চুরির অভিযোগ প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছেন। রক্তপাত এড়াতেই অনানুষ্ঠানিকভাবে কাবুল ছেড়েছেন বলে দাবি তার। তার এই দেশত্যাগের পরেই কাবুল পুরোপুরি তালিবানের দখলে চলে যায়, যেখানে আর মাত্র দুই সপ্তাহ পরেই সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের।
এদিকে আফগানিস্তানের জন্য পাঠানো সহায়তার অপব্যবহার নিয়ে মার্কিন সরকারের চলমান তদন্তের দায়িত্বে থাকা প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা (ইন্সপেক্টর জেনারেল) জন সপকো কংগ্রেসকে এ সপ্তাহের গোড়াতেই জানান, পালানোর সময় ঘানি ও তার সঙ্গীরা বিপুল অর্থ সাথে করে এনেছেন বলে অভিযোগ পেয়েছেন তারা।
তবে প্রতিনিধি পরিষদের শুনানিতে ইন্সপেক্টর জেনারেল জন সপকো জানান, তাদের হাতে এখনো প্রমাণ নেই।