অর্থনীতি ডেস্কঃ গত কয়েক বছর কোরবানির ঈদের আনন্দ স্পর্শ করেনি গরুর ব্যাপারীদের। রাজধানীর বিভিন্ন হাটে লোকসান গুণতে হয়েছে তাদের।
সারা দেশের চিত্রও একই। কেউ ৫ লাখ, কেউ ১০ লাখ, কেউ আবার ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত লোকসান গুণেছেন। মূলত হাটে যে ব্যাপারী যত বেশি গরু তুলেছেন তার লোকসান হয়েছে তত বেশি।
এবারও পশুর হাটে ব্যাপারী ও গৃহস্থরা গরু তুলে বিপাকে পড়েছেন। কোরবানির ঈদের বাকি মাত্র দুই দিন অথচ আশানুরূপ দাম বলছেন না ক্রেতারা। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন করোনা সংকটে আয় কমে যাওয়ায় কোরবানির বাজেট কমে গেছে।
বুধবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর ৩০০ ফুট রোড সংলগ্ন অস্থায়ী পশুর হাট দেশীয় গরুতে পরিপূর্ণ দেখা যায়। মস্তল-ডুমনী সড়কের উভয় পাশে সারি সারি গরু দেখা গেছে।
এই হাটে ১৮টি দেশি গরু তুলেছেন চুয়াডাঙ্গা সদরের আব্দুর রাজ্জাক ব্যাপারী। বিগত দুই দিনে একটি গরুও বিক্রি হয়নি তার। হাতেগোনা কয়েকজন ক্রেতা দাম-
বললেও তারা কেনা দরের চেয়ে অনেক কম দাম বলেছেন বলে জানান রাজ্জাক ব্যাপারীর। ১৮টি গরু হাটে তুলতে তার পরিবহন খরচ পড়েছে ৩৫ হাজার টাকা। এর বাইরে আছে দৈনিক অন্যান্য খরচ।
গরুর ব্যাপারী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘গরু কেউ নিচ্ছে না। খইদ্দির করোনায় দোস দেছে আর কম দামে গরু কিনার জন্য ঘুরছে। গরুর দাম বলেনে। ১১০ (এক লাখ ১০ হাজার) এর গরুর দাম বলে ৯০ হাজার।
হাট ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় গরুর দাম কম। তিন মণ মাংস পাওয়া যাবে এমন গরু ৬০ হাজার টাকায় মিলছে। কোরবানির গরুর দাম সব সময় একটু বেশি হয়। তবে করোনা সংকটের কারণে এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের আনোয়ার ব্যাপারী হাটে ৩৫টি গরু তুলেছেন এবার। দুই দিন চলে গেছে। এর মধ্যে ৪টি গরু বিক্রি করেছেন লোকসানে।
আরও ৩১টি গরু রয়ে গেছে। অবিক্রিত থেকে গেলে কসাইদের কাছে বিক্রি করলে আরও টাকা লোকসান হবে বলে জানান তিনি।
আনোয়ার হোসেন বলেন, ১৬ বছর ধরে গরুর ব্যাবসা করি। এবারের মতো ডাউন হাট কখনও দেখিনি। মানুষ এবার গরু কম কোরবানি দেবে। করোনার কারণে আমার মনে হয় মানুষের হাতে টাকা নেই। থাকলে আমার এমন অবস্থা হতো না।
বাজারে গরুর দাম অন্যান্য বারের চেয়ে কম হলেও করোনার কারণে আর্থিক সংকটে রয়েছেন ক্রেতারা। মধ্য বাড্ডা থেকে গরু কিনতে এসেছেন হাজী মিয়াজান আলী।
গাউসিয়ায় শাড়ির দোকান রয়েছে তার। অন্যান্য বছর দুই গরু ও দুই ছাগল কোরবানি দেন তিনি। তবে এবার এতগুলো পশু কোরবানি দেবেন না মিয়াজান আলী।
তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় গরুর দাম কম অস্বীকার করছি না। তারপরও কোরবানির দেয়ার সক্ষমতা আমাদের কমে গেছে। করোনা আমাদের শেষ করে ফেলেছে। সব ব্যবসা প্রায় বন্ধ।