আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের দেশ বতসোয়ানায় কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই কমপক্ষে ৩৫০টি হাতির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এমনটি জানিয়েছে স্থানীয় কর্মকর্তারা।
কর্মকর্তারা জানায়, বতসোয়ানার উত্তরাঞ্চলীয় ওকাভাঙ্গো ব-দ্বীপ অঞ্চলে গত মে মাস থেকে এই মৃত্যু মিছিল শুরু হয়েছে। জুনের মাঝামাঝি হাতির মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৬৯ । যা এখন দ্বিগুণ বেড়ে ৩৫০টিতে দাঁড়িয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মৃত হাতির শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে।
রিপোর্ট আসার পরই হাতিদের রহস্য মৃত্যুর কারণ জানা যাবে । তবে সরকারের ধারণা, বিষ প্রয়োগ অথবা অ্যানথ্রাক্স রোগ থেকেই হাতিদের এমন মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
ব্রিটেনের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ন্যাশনাল পার্ক রেসকিউ মাস দুয়েক আগেই বতসোয়ানা সরকারকে হাতির মৃত্যুর বিষয়ে সতর্ক করেছিল।
ওই অঞ্চল আকাশপথে পরিদর্শন করে ১৬৯টি হাতির মৃত দেহের সন্ধান করেছিল এই ব্রিটিশ সংস্থা। মে মাসের ওই পরিদর্শনের পর জুলাইয়ের শুরুতে হাতি মৃত্যুর সংখ্যা ৩৫০টিতে পৌঁছেছে।
ব্রিটেনের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ন্যাশনাল পার্ক রেসকিউ’র পরিচালক ডা. নিয়াল ম্যাককান বিরাট সংখ্যায় হাতির মৃত্যুর ঘটনায় করোনা হানার আশঙ্কা করছেন।
তিনি জানান , খরা ছাড়া এত হাতির মৃত্যুর ঘটনা এর আগে দেখা যায়নি। শুধু হাতিরই মৃত্যু হচ্ছে। যদি চোরা শিকারিদেরই কাজ হতো, তাহলে সায়ানাইড ব্যবহারের কারণে আরও অনেক পশুর মৃত্যু হতো।
তবে এক্ষেত্রে একসঙ্গে এত হাতির মৃত্যুর নেপথ্য অন্য কোনো কারণ রয়েছে বলেই আশঙ্কা চিকিৎসক নিয়াল ম্যাককানের।
মাটি বা পানিবাহিত রোগ থেকেও হাতির মৃত্যু হতে পারে বলে মনে করছেন তিনি। একই সঙ্গে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কথাও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না এই চিকিৎসক।
তবে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, রিপোর্ট আসতে অন্তত আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে।
এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছে, তারা অনেক দুর্বল হাতি দেখেছে। আর এ থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে, হাতি মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
পুরো আফ্রিকায় হাতির সংখ্যা ধীরে ধীরে হ্রাস পেলেও বতসোয়নায় প্রাণীটির সংখ্যা বেড়েছে। ১৯৯০ সালে দেশটিতে হাতির সংখ্যা ছিলো ৮০ হাজার। যা এখন বেড়ে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজারে দাঁড়িয়েছে। বিবিসি, স্কাই নিউজ।