স্টাফ রিপোর্টার ,নওগাঁঃ নওগাঁর রানীনগরে এলাকাবাসীর অর্থায়নে প্রায় দুই কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক তৈরি করা হয়েছে। উপজেলার একডালা ইউনিয়নের তালিমপুর গ্রাম থেকে কাঁঠালগাড়ী পর্যন্ত স্বেচ্ছাশ্রম ও অর্থ দিয়ে রাস্তাটি নির্মাণ করেছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর দিকে অবস্থিত তালিমপুর গ্রাম। পাশেই বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রাম।
এ দুই গ্রামে প্রায় সাতশ পরিবারের বসবাস। গ্রামের মানুষদের চলাচলের জন্য আবাদপুকুর-বগুড়া রাস্তার চয়েনের মোড়ের পূর্ব দিকে কাঁঠালগাড়ী নামকস্থানে একমাত্র সরু রাস্তা মিলিত হয়েছে।
এলাকাবাসী তাদের চলাচলের সুবিধার জন্য স্থানীয় মেম্বার-চেয়ারম্যানের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোনো ফল পাননি।২০০৪ সালে স্থানীয় সরকারের বরাদ্দ থেকে ভ্যান চলাচলের জন্য মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণ করা হয়।
এরপর দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর অতিবাহিত হলেও কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় বর্ষার পানিতে আবারও জমির সঙ্গে মিশে আইলের মতো হয়ে যায় রাস্তাটি।
ফলে ওই গ্রাম দুটি থেকে কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন মালামাল পরিবহনে দুই কিলোমিটার রাস্তা পারি দিতে অসহনীয় ভোগান্তি পোহাতে হয়।
অবশেষে গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অর্থায়নে প্রায় ২০ হাজার টাকা দিয়ে গত মঙ্গলবার (২৩ জুন) থেকে এক্সাভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। পাশাপাশি গ্রামের লোকজন স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করছেন।
ওই গ্রামের মিজানুর রহমান, ছামসুজ্জামান, সানোয়ারসহ কয়েকজন বলেন, এটি এ দুই গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা।
গ্রাম থেকে বের হওয়ার একটি রাস্তা ছিল আমাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা। স্থানীয় মেম্বার-চেয়ারম্যানের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোনো প্রতিকার মিলেনি।
আমাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এছাড়াও বর্ষা মৌসুমে হাঁটু পানি ভেঙে দুই কিলোমিটার রাস্তা পারি দিয়ে ছেলেমেয়েরা স্কুল-কলেজে যাওয়া আসা করে।
গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে তাকে কাঁধে করে হাসপাতালে নিতে হয়। তাই বাধ্য হয়ে চাঁদা তুলে নিজেরা শ্রম দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করছি।
স্থানীয় একডালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল ইসলাম বলেন, রাস্তা না থাকায় গ্রামের মানুষদের বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
চার বছর আগেও রাস্তাটির আংশিক কাজ করা হয়েছে। এছাড়া প্রায় চারবার প্রকল্প আকারে দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। তারপরও চেষ্টা করে যাচ্ছি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী শাইদুর রহমান মিঞা বলেন, গ্রামীণ রাস্তাঘাট নির্মাণ ও পাকাকরণের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানকে প্রকল্প আকারে দিতে হয়।
যেহেতু রাস্তার কাজ এক ধাপ এগিয়েছে। তাই সংস্কারের জন্য প্রকল্প আকারে দিলে আগামী বরাদ্দে পাকা করে দেয়া হবে।
রানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে রাস্তা নির্মাণ ও পাকাকরণে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে। তিনি গ্রামবাসীর এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানান।