আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ গালওয়ান উপত্যকায় চীনের হাতে অন্তত ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যুর পর নড়েচড়ে বসেছে নয়া দিল্লি। রুলস অব এনগেজমেন্ট অর্থাৎ, যুদ্ধনীতির ক্ষেত্রে বড় বদল এনেছে ভারতীয় বাহিনী।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় মোতায়েন থাকা কমান্ডারদের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।
অর্থাৎ, চীন সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখায় বন্দুক ব্যবহারে আর কোনো বিধিনিষেধ অবশিষ্ট নেই। রবিবার (২১ জুন) সামরিক বাহিনীর দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাতে করা প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছ সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুস্তান টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন থেকে খুব প্রয়োজন পড়লে নিজেদের হাতে যা আছে তার সবই জওয়ানরা ব্যবহার করতে পারবেন।
সর্বদলীয় সভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও জানিয়েছেন, সীমান্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জওয়ানদের পুরো স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি এরই মধ্যে প্রতিবেশী চীনকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন, নিয়ম পরিবর্তন হওয়ার ফলে নিয়ন্ত্রণ রেখায় আর ভারতীয় কমান্ডারদের হাত বাঁধা থাকবে না। তারা যেটা ঠিক মনে করবেন, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গত কিছুদিন ধরেই নিয়ম বদল করার প্রয়োজনীয়তা বোধ হচ্ছিল। তবে গালওয়ানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরই বিষয়টিতে সম্মতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
প্যাংগং সো-তে গত মাসের ৫-৬ তারিখ ও গালওয়ান উপত্যকায় মধ্য মে-তে ছোটোখাটো সংঘর্ষ হয়।
প্রতিবারই দল বেঁধে ডাণ্ডা ও লোহার আংটা লাগানো রড নিয়ে ভারতীয় জওয়ানদের তাড়া করেছিল চীনা বাহিনী। তবে দিল্লির দাবি, প্রতিবারই যোগ্য জবাব দিতে সমর্থ হয়েছে ভারতীয় বাহিনী।
সর্বদলীয় বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও দাবি করেছেন, লাদাখে চীনকে চরম শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, তার এমন দাবি নিয়ে যদিও নিজ দেশেই ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে।
গালওয়ানে সংঘর্ষের সময় কেন সেনাদের কাছে বন্দুক ছিল না, এমন প্রশ্ন করেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাহিনীর কাছে বন্দুক থাকলেও ১৯৯৬ ও ২০০৫-এর বোঝাপড়া অনুযায়ী সংঘর্ষের ক্ষেত্রে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয় না।
১৯৯৬ ও ২০০৫ সালের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দুই কিলোমিটারের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অবকাশ ছিল না। সেই অনুযায়ী এতোদিন নিয়ম মানত ভারত। কিন্তু চীনের হামলার মুখে এবার রণনীতিতে পরিবর্তন আনল দিল্লি।