ঢাকা ০৭:১২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি গুদামে ধান বিক্রিতে আগ্রহ নেই তানোরের কৃষকদের

সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না কৃষকেরা

রাজশাহীপ্রতিনিধিঃ  রাজশাহীর তানোরে সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না কৃষকেরা। ধান সংগ্রহ অভিযান শুরুর দেড় মাসে মাত্র ৬৬ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে।

নির্বাচিত কৃষকদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও লাভ হচ্ছে না। খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, স্থানীয় বাজার ও সরকারি দামের তেমন কোনো পার্থক্য নেই।

এ কারণে সরকারি নানা প্রক্রিয়ায় ঝক্কি এড়িয়ে বাজারেই ধান বিক্রি করছেন না কৃষকরা। স্থানীয় কৃষকদের ভাষ্য, ধানের বর্তমান বাজারদর ও গুদামে ধান ক্রয়ের সরকার নির্ধারিত দাম প্রায় সমান।

গুদামে আর্দ্রতার কথা বলে প্রতি মণে এক-দুই কেজি করে বেশি ধান নেওয়া হয়। অনেক সময় ধান ফেরতও দেওয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় বাজারে এসব ঝক্কি-ঝামেলা নেই।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে তানোর উপজেলায় লটারির মাধ্যমে ১৭৭৯ জন নির্বাচিত-

কৃষকদের কাছ থেকে সরকারি গুদামে ধান ক্রয় করা হবে। প্রতি মণ ১০৪০ টাকা (২৬ টাকা কেজি) দরে ১৪ শতাংশ নিচের আর্দ্রতার ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গত ১৫ এপ্রিল থেকে উপজেলায় সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। ২০ জুন শনিবার পর্যন্ত উপজেলার গোল্লাপাড়া সদর ও কাঁমারগা বাজার দুই সরকারি খাদ্যগুদামে মাত্র ৬৬ টন ধান কেনা হয়েছে।

উপজেলার কাঁমারগা ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের কৃষক তাজমুল ইসলাম এ বছর ১১ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেন।

বিঘা প্রতি গড়ে ২২ মণ করে মোট ২৪২ মণ ধান পেয়েছেন তিনি। মৌসুমের শুরুতে বাজারে ধানের দাম কম থাকায় সরকারি গুদামে ধান বিক্রির জন্য লটারিতে নাম লেখান।

গুদামে ধান দেওয়ার জন্য লটারিতে তিনি নির্বাচিতও হন। কিন্তু কিছুদিন পরেই বাজারে ধানের দাম বেড়ে যায়। এখন সরকারি গুদামে ধান বিক্রিতে তার কোনো আগ্রহ নেই।

তাজমুলের মতো তানোরের কৃষকেরা সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। গুদাম কর্তৃপক্ষ কৃষকদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করে ধান বিক্রির জন্য অনুরোধ জানিয়েও কোনো সাড়া পাচ্ছেন না।

উপজেলার সদর গোল্লাপাড়া খাদ্যগুদামের ওসিএলএসডি কর্মকর্তা তারিক উজ জামান বলেন, সরকারি যে দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছে, স্থানীয়-

বাজারেও সেই দামে ধান বেচাকেনা হচ্ছে। যে কারণে খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে নির্বাচিত কৃষকেরা আর আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলাওল কবির বলেন, কৃষকেরা সরকারি গুদামে ধান দিতে কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছেন। তবে ধান সংগ্রহের এখনো বেশ সময় রয়েছে।

আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধান সংগ্রহ করা হবে। আশা করছি, এ সময়ের মধ্যে তালিকাভুক্ত সব কৃষক গুদামে ধান দেবেন এবং সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ হবে।

ট্যাগস

সরকারি গুদামে ধান বিক্রিতে আগ্রহ নেই তানোরের কৃষকদের

আপডেট সময় ০৫:৩০:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ জুন ২০২০

রাজশাহীপ্রতিনিধিঃ  রাজশাহীর তানোরে সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না কৃষকেরা। ধান সংগ্রহ অভিযান শুরুর দেড় মাসে মাত্র ৬৬ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে।

নির্বাচিত কৃষকদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও লাভ হচ্ছে না। খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, স্থানীয় বাজার ও সরকারি দামের তেমন কোনো পার্থক্য নেই।

এ কারণে সরকারি নানা প্রক্রিয়ায় ঝক্কি এড়িয়ে বাজারেই ধান বিক্রি করছেন না কৃষকরা। স্থানীয় কৃষকদের ভাষ্য, ধানের বর্তমান বাজারদর ও গুদামে ধান ক্রয়ের সরকার নির্ধারিত দাম প্রায় সমান।

গুদামে আর্দ্রতার কথা বলে প্রতি মণে এক-দুই কেজি করে বেশি ধান নেওয়া হয়। অনেক সময় ধান ফেরতও দেওয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় বাজারে এসব ঝক্কি-ঝামেলা নেই।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে তানোর উপজেলায় লটারির মাধ্যমে ১৭৭৯ জন নির্বাচিত-

কৃষকদের কাছ থেকে সরকারি গুদামে ধান ক্রয় করা হবে। প্রতি মণ ১০৪০ টাকা (২৬ টাকা কেজি) দরে ১৪ শতাংশ নিচের আর্দ্রতার ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গত ১৫ এপ্রিল থেকে উপজেলায় সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। ২০ জুন শনিবার পর্যন্ত উপজেলার গোল্লাপাড়া সদর ও কাঁমারগা বাজার দুই সরকারি খাদ্যগুদামে মাত্র ৬৬ টন ধান কেনা হয়েছে।

উপজেলার কাঁমারগা ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের কৃষক তাজমুল ইসলাম এ বছর ১১ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেন।

বিঘা প্রতি গড়ে ২২ মণ করে মোট ২৪২ মণ ধান পেয়েছেন তিনি। মৌসুমের শুরুতে বাজারে ধানের দাম কম থাকায় সরকারি গুদামে ধান বিক্রির জন্য লটারিতে নাম লেখান।

গুদামে ধান দেওয়ার জন্য লটারিতে তিনি নির্বাচিতও হন। কিন্তু কিছুদিন পরেই বাজারে ধানের দাম বেড়ে যায়। এখন সরকারি গুদামে ধান বিক্রিতে তার কোনো আগ্রহ নেই।

তাজমুলের মতো তানোরের কৃষকেরা সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। গুদাম কর্তৃপক্ষ কৃষকদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করে ধান বিক্রির জন্য অনুরোধ জানিয়েও কোনো সাড়া পাচ্ছেন না।

উপজেলার সদর গোল্লাপাড়া খাদ্যগুদামের ওসিএলএসডি কর্মকর্তা তারিক উজ জামান বলেন, সরকারি যে দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছে, স্থানীয়-

বাজারেও সেই দামে ধান বেচাকেনা হচ্ছে। যে কারণে খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে নির্বাচিত কৃষকেরা আর আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলাওল কবির বলেন, কৃষকেরা সরকারি গুদামে ধান দিতে কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছেন। তবে ধান সংগ্রহের এখনো বেশ সময় রয়েছে।

আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধান সংগ্রহ করা হবে। আশা করছি, এ সময়ের মধ্যে তালিকাভুক্ত সব কৃষক গুদামে ধান দেবেন এবং সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ হবে।