ঢাকা ০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৪২ লাখ টাকায় বিক্রি হলো মাশরাফির ব্রেসলেট

মাশরাফি ও তার ব্রেসলেট

ক্রীড়া ডেস্কঃ  মহামারি করোনা ভাইরাসের শুরু থেকে অসহায় হয়ে পড়া মানুষদের অসহায়দের সহায়তার জন্য তহবিল গঠন করতে নিজের পছন্দের ব্রেসলেটটি নিলামে তোলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক।

গত ১৮ বছর ধরে ব্রেসলেটে খোদাই করে ‘মাশরাফি’ লেখা ব্রেসলেটটি শোভা পাচ্ছিল বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের হাতে। মাশরাফির সেই ব্রেসলেটটি নিলামে ৪২ লাখ টাকায় বিক্রি হলো।

করোনা যুদ্ধে শামিল হতে প্রিয় এই ব্রেসলেট নিলামে তুলেছিলেন মাশরাফি। আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে শেষ হয় নিলামের সময়। আয়োজক ছিল ‘অকশন ফর অ্যাকশন’।

নিলামের সময় শেষেই লাইভে ব্রেসলেটের চূড়ান্ত দাম জানানোর কথা ছিল তাদের। কারিগরি সমস্যায় লাইভে আসতে প্রায় ঘন্টাখানেক দেরি হয়। উপস্থাপকেরা জানান, মাশরাফি এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন।

উপস্থাপকদের একজন জানান, আজ সকাল থেকে দাম লাখে লাখে বেড়েছে। লাইভ শুরুর কিছুক্ষণ পর সর্বোচ্চ দাম ছিল ১৫ লাখ টাকা। এক পর্যায়ে লাইভে আসতে সমর্থ হন সাদা টুপি ও টি-শার্ট পরা মাশরাফি।

ব্রেসলেটটির ইতিহাস নিয়ে তিনি জানান, এটি স্টেইনলেস স্টিলের। বন্ধুর মামার মাধ্যমে পেয়েছিলেন। প্রায় সব সময়ই এই ব্রেসলেট সঙ্গে ছিল মাশরাফির।

অস্ত্রোপচারের সময় ধাতব কোনোকিছু রাখার নিয়ম না থাকায় তখন খুলে রাখতে হয়েছিল। মাশরাফি এ কথাগুলো বলার মাঝে নিলামে তাঁর ব্রেসলেটের দাম ১৬ লাখ ছাড়িয়ে যায়।

এক ফাঁকে যোগ দেন মাশরাফির জাতীয় দল সতীর্থ তামিম ইকবাল। তাঁর সঙ্গে আলাপের মাঝে দাম চড়া শুরু হয় নিলামের। এক পর্যায়ে ১৮ লাখ থেকে ১৯ লাখ ৫০ হাজার সেখান থেকে ২৩ লাখ।

চমকের এখানেই শেষ নয়। আলাপচারিতার এক ফাঁকে উপস্থাপক জানান, এক ব্যবসায়ী মাশরাফির ব্রেসলেটের দাম হেঁকেছেন ৩০ লাখ টাকা।

সেখান থেকে দাম ওঠে ৪২ লাখ টাকা। মাশরাফি জানান, নিলামে পাওয়া টাকা তিনি নড়াইল এবং তার বাইরের এলাকায় নিজের ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সেবামূলক কাজে লাগাবেন।

শেষ পর্যন্ত ৪২ লাখ টাকায় মাশরাফির ব্রেসলেট কিনে নেন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানি অ্যাসোসিয়েশন। এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হিসেবে লাইভ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন মুমিনুল ইসলাম।

দাম চূড়ান্ত হওয়ার পর মাশরাফি তাঁর হাত থেকে ব্রেসলেটটি খুলে ফেলেন। এরপরই বড় চমকটা হাজির করেন মুমিনুল। তিনি জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মাশরাফিকে ‘উপহার’ হিসেবে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। সেটিও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।

মাশরাফি জবাব দেন, সে অনুষ্ঠান হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি হাত থেকে ব্রেসলেট খুলে রাখবেন। অনুষ্ঠানে পরিয়ে দেওয়ার আগ পর্যন্ত ওটা হাতে উঠবে না।

মুমিনুল বলেন, আপাতত ওটা আপনার (মাশরাফি) জিম্মায় রইল। করোনা যুদ্ধে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নিলামে তোলা ক্রীড়াসরঞ্জামের মধ্যে মাশরাফির ব্রেসলেটেই সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হলো।

নিলামে মাশরাফির এ ব্রেসলেটের ভিত্তিমূল্য ছিল ৫ লাখ টাকা। এটি বিক্রির অর্থ ব্যবহার করা হবে করোনাদুর্গতদের সাহায্যার্থে। মাশরাফি ক্যারিয়ারের ‍শুরতে লাল-সবুজ রঙে ‘বাংলাদেশ’ লেখা রিস্ট ব্যান্ড পরে মাঠে নামতেন। পরে ব্যান্ড বদলে ব্রেসলেট পরা শুরু করেন এ পেসার।

এর আগে করোনাদূর্গতের সাহায্যে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অন্যান্য ক্রিকেটারও এগিয়ে এসেছেন। মুশফিকুর রহিমের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির ব্যাট ১৭ লাখ টাকায় কিনে নেয় পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদির ফাউন্ডেশন।

সাকিব আল হাসান তাঁর ২০১৯ বিশ্বকাপের ব্যাট নিলামে ২০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন।এ ছাড়া তাসকিন আহমেদ, সৌম্য সরকার, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আকবর আলীসহ দেশের অন্য ক্রীড়াবিদেরা নিজ নিজ পছন্দের স্মারক নিলামে তুলেছেন।

ট্যাগস

৪২ লাখ টাকায় বিক্রি হলো মাশরাফির ব্রেসলেট

আপডেট সময় ১১:৫৩:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ মে ২০২০

ক্রীড়া ডেস্কঃ  মহামারি করোনা ভাইরাসের শুরু থেকে অসহায় হয়ে পড়া মানুষদের অসহায়দের সহায়তার জন্য তহবিল গঠন করতে নিজের পছন্দের ব্রেসলেটটি নিলামে তোলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক।

গত ১৮ বছর ধরে ব্রেসলেটে খোদাই করে ‘মাশরাফি’ লেখা ব্রেসলেটটি শোভা পাচ্ছিল বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের হাতে। মাশরাফির সেই ব্রেসলেটটি নিলামে ৪২ লাখ টাকায় বিক্রি হলো।

করোনা যুদ্ধে শামিল হতে প্রিয় এই ব্রেসলেট নিলামে তুলেছিলেন মাশরাফি। আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে শেষ হয় নিলামের সময়। আয়োজক ছিল ‘অকশন ফর অ্যাকশন’।

নিলামের সময় শেষেই লাইভে ব্রেসলেটের চূড়ান্ত দাম জানানোর কথা ছিল তাদের। কারিগরি সমস্যায় লাইভে আসতে প্রায় ঘন্টাখানেক দেরি হয়। উপস্থাপকেরা জানান, মাশরাফি এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন।

উপস্থাপকদের একজন জানান, আজ সকাল থেকে দাম লাখে লাখে বেড়েছে। লাইভ শুরুর কিছুক্ষণ পর সর্বোচ্চ দাম ছিল ১৫ লাখ টাকা। এক পর্যায়ে লাইভে আসতে সমর্থ হন সাদা টুপি ও টি-শার্ট পরা মাশরাফি।

ব্রেসলেটটির ইতিহাস নিয়ে তিনি জানান, এটি স্টেইনলেস স্টিলের। বন্ধুর মামার মাধ্যমে পেয়েছিলেন। প্রায় সব সময়ই এই ব্রেসলেট সঙ্গে ছিল মাশরাফির।

অস্ত্রোপচারের সময় ধাতব কোনোকিছু রাখার নিয়ম না থাকায় তখন খুলে রাখতে হয়েছিল। মাশরাফি এ কথাগুলো বলার মাঝে নিলামে তাঁর ব্রেসলেটের দাম ১৬ লাখ ছাড়িয়ে যায়।

এক ফাঁকে যোগ দেন মাশরাফির জাতীয় দল সতীর্থ তামিম ইকবাল। তাঁর সঙ্গে আলাপের মাঝে দাম চড়া শুরু হয় নিলামের। এক পর্যায়ে ১৮ লাখ থেকে ১৯ লাখ ৫০ হাজার সেখান থেকে ২৩ লাখ।

চমকের এখানেই শেষ নয়। আলাপচারিতার এক ফাঁকে উপস্থাপক জানান, এক ব্যবসায়ী মাশরাফির ব্রেসলেটের দাম হেঁকেছেন ৩০ লাখ টাকা।

সেখান থেকে দাম ওঠে ৪২ লাখ টাকা। মাশরাফি জানান, নিলামে পাওয়া টাকা তিনি নড়াইল এবং তার বাইরের এলাকায় নিজের ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সেবামূলক কাজে লাগাবেন।

শেষ পর্যন্ত ৪২ লাখ টাকায় মাশরাফির ব্রেসলেট কিনে নেন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানি অ্যাসোসিয়েশন। এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হিসেবে লাইভ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন মুমিনুল ইসলাম।

দাম চূড়ান্ত হওয়ার পর মাশরাফি তাঁর হাত থেকে ব্রেসলেটটি খুলে ফেলেন। এরপরই বড় চমকটা হাজির করেন মুমিনুল। তিনি জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মাশরাফিকে ‘উপহার’ হিসেবে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। সেটিও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।

মাশরাফি জবাব দেন, সে অনুষ্ঠান হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি হাত থেকে ব্রেসলেট খুলে রাখবেন। অনুষ্ঠানে পরিয়ে দেওয়ার আগ পর্যন্ত ওটা হাতে উঠবে না।

মুমিনুল বলেন, আপাতত ওটা আপনার (মাশরাফি) জিম্মায় রইল। করোনা যুদ্ধে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নিলামে তোলা ক্রীড়াসরঞ্জামের মধ্যে মাশরাফির ব্রেসলেটেই সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হলো।

নিলামে মাশরাফির এ ব্রেসলেটের ভিত্তিমূল্য ছিল ৫ লাখ টাকা। এটি বিক্রির অর্থ ব্যবহার করা হবে করোনাদুর্গতদের সাহায্যার্থে। মাশরাফি ক্যারিয়ারের ‍শুরতে লাল-সবুজ রঙে ‘বাংলাদেশ’ লেখা রিস্ট ব্যান্ড পরে মাঠে নামতেন। পরে ব্যান্ড বদলে ব্রেসলেট পরা শুরু করেন এ পেসার।

এর আগে করোনাদূর্গতের সাহায্যে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অন্যান্য ক্রিকেটারও এগিয়ে এসেছেন। মুশফিকুর রহিমের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির ব্যাট ১৭ লাখ টাকায় কিনে নেয় পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদির ফাউন্ডেশন।

সাকিব আল হাসান তাঁর ২০১৯ বিশ্বকাপের ব্যাট নিলামে ২০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন।এ ছাড়া তাসকিন আহমেদ, সৌম্য সরকার, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আকবর আলীসহ দেশের অন্য ক্রীড়াবিদেরা নিজ নিজ পছন্দের স্মারক নিলামে তুলেছেন।