আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বিশ্বজুড়ে হাসপাতালগুলো যখন করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের বাঁচাতে প্রাণপণে লড়ে যাচ্ছে, তখন আরেকটি গ্রুপ সক্রিয় এটিকে পুঁজি করে মুনাফা লুটতে।
আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, বিশ্বজুড়ে যে সব হাসপাতাল করোনা চিকিৎসা দিচ্ছে সে সব হাসপাতালে ব্যাপকভাবে বেড়েছে সাইবার হামলা। এসব হামলা রোগীদের সরাসরি মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
কভিড-১৯ নিয়ে এমন এক সময় হাসপাতালগুলো লড়ছে যখন বিপুল রোগী সামলাতে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি তাদের হাতে নেই। ফলে স্বল্প সরঞ্জাম নিয়েই তাদের লড়তে হচ্ছে।
এ অবস্থায় সাইবার সন্ত্রাসীরা ক্রিটিক্যাল কেয়ার সিস্টেম হ্যাক করে দিচ্ছে। যাতে মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসায় সংকট তৈরী হয়। এভাবে রোগী জিম্মি করে তারা হাসপাতাল ও রোগীর পরিবার থেকে মুনাফা লুটতে চায়।
এ অবস্থায় ১৯৪ সদস্য রাষ্ট্রকে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে ইন্টারপোল। নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হাসপাতালগুলোকে জোরালো সহায়তা করার।
ইন্টারপোল জানিয়েছে, যে সব প্রতিষ্ঠান সামনের সারিতে থেকে কভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াই করছে এমন বেশকিছু প্রতিষ্ঠানে ‘র্যামসওয়্যার’ হামলা পাওয়া গেছে।
যা উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে। র্যামসওয়্যার হল এক ধরনের ম্যালওয়্যার যা একটি কম্পিউটার ডিভাইসকে আক্রান্ত করার পর ব্যবহারকারীকে তার মেশিনে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখে এবং ব্যবহারকারীর প্রবেশগম্যতা সীমাবদ্ধ করে দেয় এবং এই সীমাবদ্ধতা দূর করার জন্য ব্যবহারকারীর কাছ থেকে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
অথচ এসব হামলার এক মাসেরও কম সময় আগে হামলা চালানো দুটি গ্রুপ জানিয়েছিরো তারা কভিড-১৯ সংক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবাকে টার্গেট করবে না।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউিএইচও)জানিয়েছে, কভিড-১৯ মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এ সংশ্লিষ্ট তাদের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলা বেড়েছে পাঁচগুণ।
গত সপ্তাহে তাদের ৪৫০ টি সক্রিয় ইমেইল অ্যাড্রেস ও পাসওয়ার্ড ফাঁস করে দেয়া হয়েছে অনলাইনে। তবে সংস্থার সিস্টেম ঝুঁকিতে পড়েনি।
ইন্টারপোলের সেক্রেটারি জেনারেল জারজেন স্টক বলেন, ‘করোনা রোগীদের কাছ থেকে যে সব হাসপাতাল মুনাফা করছে সে সব হাসপাতালই বেশি হামলার শিকার হয়েছে।
’ তিনি বলেন, ‘ আমি ইতিমধ্যে রিপোর্ট করেছি যে, একটি মেডিক্যাল ফেসিলিটি যেটি করোনার টিকা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে সেটি একটি র্যামসওয়্যার গ্রুপ দ্বারা হামলার শিকার হয়েছে।
একইভাবে সরাসরি স্বাস্থ্যকর্মীরাও এ হামলার শিকার হচ্ছে। এভাবে একটি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল সিস্টেম অচল করে রাখলে রোগীর চিকিৎসাই শুধু দেরি হয় না, সরাসরি মৃত্যুও ঘটতে পারে।’
সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান সাইবারইজন এর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা স্যাম কারি বলেন, ‘এটা খুবই লজ্জার বিষয় যে হাসপাতালগুলো যখন কভিড-১৯ মোকাবেলা করছে তখন ব্যাপকভাবে র্যামসওয়্যার হামলার শিকার হচ্ছে।
আশার বিষয় হচ্ছে অনেক হাসপাতালই ইতিমধ্যে তাদের সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।’ সূত্র: ফোর্বস ম্যাগাজিন