চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ লকডাউনের মধ্যেই বাংলাদেশ ও ভারত থেকে দুবাই প্রবাসী এক বাংলাদেশিকে ফোন করে চাঁদা দাবির পর চট্টগ্রামে তার বাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার ভোরে বন্দরনগরীর পাঁচলাইশ থানার বিবিরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া জানান।
ওই বাড়ির মালিক দুই ভাই নুরুল আবসার ও নুরুল আক্কাস সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে থাকেন বহু বছর ধরে। তবে আক্কাস গত কয়েক মাস ধরে চট্টগ্রামে আছেন।
তিনি বলেন, নগরীর চান্দগাঁও হাজীরপুল এলাকায় তাদের পৈত্রিক জমিতে গত আট মাস ধরে ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। “গতকাল বিকালে নগরীর আলোচিত সন্ত্রাসী ঢাকাইয়া আকবরের নাম করে এক লোক দুবাইয়ে আমার বড় ভাইকে ফোন দিয়ে বলে, ‘ভারত থেকে সাজ্জাদ ভাই’ ফোন করবে, ফোন যেন উনি রিসিভ করেন।
“পরে শিবিরের ক্যাডার সাজ্জাদের পরিচয় দিয়ে ভারতীয় এক নম্বর থেকে আমার বড় ভাইকে ফোন করে আরেক লোক। সে বলে আমাদের ভবন থেকে একটি ফ্ল্যাট না হয় এক কোটি টাকা দিতে হবে তাকে।”
আক্কাস বলেন, সোমবার ওই ফোন পাওয়ার পর দুবাই থেকে আবসার তাকে বিষয়টি জানান। কিন্তু ততক্ষণে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় তারা আর পুলিশকে কিছু জানাতে পারেননি।
“ভেবেছিলাম সকালে গিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানাব। তার আগেই ভোরে আমাদের বাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হল।”
পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে জানিয়ে পাঁচলাইশ থানার ওসি কাশেম বলেন, “ভবন নির্মাণ কাজে কেউ বাধা দেয়নি। কিন্তু ভারতীয় নম্বর থেকে দুবাইতে ফোন করেছে। এর পেছনে কারা জড়িত আমরা জানার চেষ্টা করছি।”
চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে ২০০০ সালে ছাত্রলীগের ছয় নেতা-কর্মীসহ আটজনকে গুলি করে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শিবিরকর্মী সাজ্জাদ হোসেন খান বহু বছর ধরে পলাতক। বর্তমানে তিনি ভারতের কারাগারে বন্দি আছেন বলে বিভিন্ন সময়ে খবর এসেছে সংবাদমাধ্যমে।
চট্টগ্রাম নগরীতে সাজ্জাদ এবং তার সহযোগী সরোয়ার ও ম্যাক্সনের নাম দিয়ে ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবির ঘটনা আগেও ঘটেছে। সে সময়ও বাড়ি গিয়ে পেট্রোল বোমা হামলা কিংবা গুলি করার মত ঘটনা ঘটেছে।
গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ বোস্তামি থানার নয়াহাট এলাকায় এক গাড়ির যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা দাবির পর তার বাড়িতে পেট্রোলে বোমা ছোড়া হয়েছিল। পাশাপাশি আরেক ব্যবসায়ীর কাছে সাজ্জাদের পরিচয়ে ফোন করে চাঁদা দাবি করা হয়েছিল।
ওই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাজ্জাদের সহযোগী সরোয়ারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তার আগে আগেই তিনি দুবাই থেকে দেশে ফিরেছিলেন।