স্টাফ রিপোর্টার : হাসি-খুশি পরিবেশ যেন হঠাৎ করেই থমকে গেছে। সুন্দর পৃথিবীর বুকে নেমে এসেছে নিস্তব্ধতা আর মৃত্যুর মিছিল। সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে পুরো বিশ্ব। চীনের উহান শহরকে লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে গত ২৩ জানুয়ারি। সে সময় শহরটি করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২০ হাজার।
লক ডাউনের সে সময়ে মস্ত বিপদে পড়েছিল উহান শহরের এক ছোট্ট শিশু। পাঁচ বছর বয়সী শিশু ইউয়ানইউয়ানের মা-বাবা, দাদা-দাদি সবাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে একে একে ভর্তি হয় হাসপাতালে। বাসায় কেবল ছিল সে। অথচ এই শিশুটি খাবার, গোসল সবকিছুর জন্য নির্ভরশীল ছিল বাবা-মা এর ওপর।
জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) সম্প্রতি এই শিশুটির ছবিসহ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। চীনের উহান প্রদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ইউয়ানইউয়ানকেও হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাকে একটি নির্দিষ্ট কক্ষে রাখা হয়েছিল। তার দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল একজন স্বাস্থ্যকর্মীকে। তাকে নিয়মিত খাবার দেওয়া হতো আর সে নিয়ম করে খেত।
একা থাকার দিনগুলোর ছাপ ছড়িয়ে রয়েছে তার জীবনযাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রে। যে স্বাস্থ্যকর্মী তার দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তিনি তাকে কীভাবে ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে হবে, সেই পরামর্শ দিয়েছিলেন।
কীভাবে খাবে, ঘুমাবে, সময় কাটাবে সব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল শিশুটিকে। সে নিখুঁতভাবে সব অনুসরণ করেছিল। একা থাকার সময় শিশুটি বেশ কিছু ছবি এঁকেছে । কীভাবে করোনা ভাইরাসের সঙ্গে মোকাবিলার কথা ভাবছে তা উঠে এসেছে তার চিত্রকর্মে।
মা আর দাদিকে নিয়ে পার্কে বেড়াতে যাওয়া, সাঁতার কাটা ইত্যাদি স্মৃতিও উঠে এসেছে তার ছবিতে। করোনাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলা, সূর্যের তাপ দিয়ে পুড়িয়ে ফেলার দৃশ্যও সে কল্পনা করেছে।
তবে শিশুটি কত দিন হাসপাতালের ওই কক্ষে একা ছিল, তার বাবা-মা আদৌ সুস্থ হয়েছিল কি না কিংবা শিশুটি বাসায় ফিরেছে কি না তার কোনো তথ্য ইউনিসেফের এই প্রতিবেদনে উঠে আসেনি।
মূলত একটি শিশুকে একলা রাখতে হলে কীভাবে তা করতে হবে, সে বিষয়ে একটি নির্দেশনা ও চিত্র উঠে এসেছে। ইউনিসেফ বলছে, এ থেকে অন্য আক্রান্ত দেশগুলো শিক্ষা নিতে পারে।
সূত্র : ইউনিসেফ