আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইতালিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক বাংলাদেশি (৫৫) মারা গেছেন। দেশটির উত্তরাঞ্চলের লম্বারদিয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার স্থানীয় সময় আনুমানিক রাত ৮টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
জানা যায়, ওই ব্যক্তি অনেক দিন ধরে সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। পরীক্ষার পর তার শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এরপর থেকে মিলানোর নিগোয়ারদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তিনি ইতালির মিলান শহরে বসবাস করতেন। তার দেশের বাড়ি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানায়। তার মৃত্যুতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। এছাড়া প্রবাসীদের মাঝে আতঙ্ক বেড়ে গেছে।
এদিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে একদিনে মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে ইতালিতে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে এ যাবৎকালের রেকর্ড ৬২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৩২ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৯৮৬ জন। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার ২১ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন প্রায় পাঁচ হাজার ১২৯ জন।
ইউরোপের দেশটিতে এখনও ৩৭ হাজার ৮৬০ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদের মধ্যে অন্তত দুই হাজার ৬৫৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবারই করোনায় মৃত্যুর সংখ্যায় চীনকে ছাড়িয়ে যায় ইতালি। সেদিন দেশটিতে মৃত্যু হয়েছিল ৪২৭ জনের। আর গত বুধবার প্রাণ হারিয়েছিলেন ৪৭৫ জন কোভিড-১৯ রোগী। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেটাই ছিল যেকোনো দেশের জন্য একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। শুক্রবার নিজেদের সেই রেকর্ডকেও ছাড়িয়েছে গেল তারা।
এদিকে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দিয়ে গিয়ে ইতালিতে এখন পর্যন্ত ১৩ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। গিম্বে হেলথ ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত চিকিৎসাকর্মীর সংখ্যা মোট আক্রান্তের ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। হাতে গ্লাভস না পরাসহ অন্যান্য অসচেতনতার কারণে ভাইরাস আক্রান্ত হচ্ছেন তারা।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহানে প্রথমবারের মতো শনাক্ত হয় নভেল করোনাভাইরাস। এ পর্যন্ত সেখানে মারা গেছেন ৩ হাজার ২৪৮ জন, আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ হাজার ৯৬৭ জন। সংক্রমণ শুরুর পায় দুই মাস পর গত ২১ ফেব্রুয়ারি ইতালিতে প্রবেশ করে প্রাণঘাতী করোনা। এরপর মাত্র একমাসের মধ্যেই মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে দেশটি। করোনা মহামারি দিন দিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় অবরুদ্ধের সময়সীমা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বাড়িয়েছে ইতালি।