ইসরায়েলকে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করতে দেয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ইতিহাসের সমালোচনা করে শনিবার (১৮ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি এ আহ্বান জানান তুর্কি প্রেসিডেন্ট। খবর আনাদোলুর।
তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলের আদানাত এলাকায় দলের প্রাদেশিক কংগ্রেসে এরদোগান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, নানা অজুহাতে ইসরায়েলের, বিশেষ করে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের বহু রেকর্ড রয়েছে। এবার আর এটি হতে দেয়া উচিত নয়।
গাজায় ইসরায়েলের ৪৬৭ দিনের হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, হামলায় গাজায় ৪৭ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। এত মানুষ যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু নিহত হওয়ার পরও গাজাবাসী আত্মসর্পণ করেননি। তাদের দমন করা যায়নি। তারা বীরের জাতি, গাজাবাসী নিপীড়কদের কাছে মাথা নত করেননি।
ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধের অপরাধীদের জবাবদিহি করার জন্য তুরস্কের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন এরদোগান। তিনি বলেন, যুদ্ধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধীদের একের পর এক বিচারের আওতায় আনার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার হবে।
এরদোগান আরো বলেন, যুদ্ধবিরতিকালীন গাজার ক্ষত সারাতে তুরস্ক সর্বাত্মকভাবে কাজ করবে।অবরুদ্ধ গাজাবাসীর জন্য বহুল প্রতীক্ষিত দিন আজ রবিবার (১৯ জানুয়ারি)। স্থানীয় সময় রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে।
এর মধ্য দিয়ে গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাস ধরা চলা এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান হতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি শেষ পর্যন্ত কার্যকর হচ্ছে।রবিবার ভোরে আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার রাফাহ অঞ্চল থেকে মিশর ও গাজার সীমান্তবর্তী ফিলাডেলফি করিডোরের দিকে তাদের সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ে নিজেদের কব্জায় থাকা ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেবে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। রবিবার বিকেলে ছাড়া পাবে ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মি।এর বিনিময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ৭৩৭ ফিলিস্তিনিদের মধ্যে থেকে প্রথম দফায় রবিবার ছাড়া পাবেন ৯৫ জন ফিলিস্তিনি।
তিনটি ধাপে অন্তর্ভুক্ত যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপটি ছয় সপ্তাহের তথা ৪২ দিনের একটি প্রাথমিক যুদ্ধবিরতির সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।এই সময়কালে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়া হবে। যাদের মধ্যে নারী, শিশু ও ৫০ বছরের বেশি বয়সি পুরুষ রয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ৭৩৭ জন ফিলিস্তিনিকে বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের বিচার মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।