ঢাকা ০৪:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo সাদপন্থী নেতা মোয়াজ বিন নূরের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর Logo ৯ দফা দাবিতে নওগাঁ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের অবস্থান Logo ’’বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর’ নাম পরিবর্তন’’ নতুন নাম যমুনা রেলসেতু Logo নওগাঁ এডুকেশন ফাউন্ডেশন এর ৫ম তম বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত Logo ইজতেমা ময়দানে সাদপন্থীদের হামলার প্রতিবাদে নওগাঁয় মানববন্ধন Logo অ্যাটলির সিনেমায় সালমান খান Logo রূপালী ব্যাংকের শাখায় ডাকাত, জিম্মি কর্মকর্তারা Logo ফিফা আন্তঃমহাদেশীয় কাপে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ Logo প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক Logo যথাসময়ে ইজতেমা, সহিংসতাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

’’বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর’ নাম পরিবর্তন’’ নতুন নাম যমুনা রেলসেতু

যমুনা নদীতে নির্মিত রেলসেতুর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামাঙ্কিত এ সেতুর নাম ‘যমুনা রেলসেতু’ করা হয়েছে। আজ রোববার এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘যমুনা নদীতে নির্মিত রেলসেতুর নাম বঙ্গবন্ধু রেল সেতু থাকছে না। এটি এখন যমুনা রেলসেতু নামেই উদ্বোধন করা হবে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে এই রেলসেতু উদ্বোধন করা হতে পারে। সেইভাবেই কাজ চলছে।’

রেলের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, ‘রেলে ইঞ্জিনের সংকট রয়েছে, চাইলেও নতুন ট্রেন দিতে পারছি না। তবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি অনুরোধ করেছিলেন, পাবনাবাসীর জন্য কোনো নতুন ট্রেন পরিচালনা করা যায় কি না। সেটি নিয়ে আমরা ভাবছি।’এর আগে গত শুক্রবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফাহিমুল ইসলাম রেলসেতু পরিদর্শন করেন। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, স্ব-স্ব এলাকার জায়গার নামেই বিভিন্ন স্থাপনার নাম দিতে আগ্রহী তারা। যমুনা নদীর ওপর নবনির্মিত রেলওয়ে সেতুটির ক্ষেত্রেও তা–ই হতে পারে। যমুনা নদীর ওপর নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নাম বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

রেলওয়ের তথ্যমতে, এখন যমুনার বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুতে মিটারগেজের যে রেল সংযোগ রয়েছে তাতে সর্বোচ্চ ৪৩ দশমিক ৭০ কিলো-নিউটন/মিটার ওজন বহনের অনুমতি রয়েছে। ট্রেনে বেশি বগি যুক্ত করার সুযোগ নেই; সঙ্গে রয়েছে এক লাইনের সীমাবদ্ধতা। বেশি ট্রেন পরিচালনা করা রেলওয়ের পক্ষে সম্ভব নয়। এই সেতুতে মাত্র ২০ কিলোমিটার গতিতে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার সেতু পার হতে একেকটি ট্রেনের ২৫ মিনিটের মতো সময় লেগে যায়।

সেতুর ওপর একটি লাইন হওয়ায় দুই পাড়ের স্টেশনে সিগন্যালের জন্য অপেক্ষা করতে হতো দীর্ঘক্ষণ। সব মিলিয়ে মাত্র ৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে লাগছে যেত এক ঘণ্টার বেশি। বঙ্গবন্ধু রেলসেতু উদ্বোধন হলে এ রুটে গড়ে সময় বাঁচবে এক ঘণ্টা। ক্রসিংয়েও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করা লাগবে না। ফলে ভোগান্তির হাত থেকে বেঁচে যাবেন রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলা এবং খুলনা বিভাগের ১০ জেলার যাত্রীরা।এই দুর্ভোগ থেকে যাত্রীদের মুক্তি দিতে বিগত সরকার ২০২০ সালের ৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুর সমান্তরালে ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকের ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা অনুমোদন করে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ৪ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা এবং জাপানের জাইকা ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা অর্থায়ন করে।

রেলের তথ্যমতে, বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরাল ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকসহ প্রায় ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার এই রেলসেতুতে ৭ দশমিক ৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন ছুটতে পারবে। তবে শুরুতে (উদ্বোধনের এক বছর) ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলবে। সেতু পার হতে সাড়ে তিন থেকে চার মিনিট লাগবে।

সেতুটির প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ডব্লিউডি-১ ও ডব্লিউডি-২ নামে দুটি প্যাকেজে জাপানি পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ডব্লিউডি-১ প্যাকেজটি বাস্তবায়ন করছে জাপানি আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওবাইসি, টোআ করপোরেশন ও জেইসি (ওটিজে) জয়েন্ট ভেঞ্চার। সেতুর উভয় প্রান্তের দুই স্টেশনে সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনে ডব্লিউডি-৩ প্যাকেজের কাজ করছে জাপানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইয়াশিমা।

সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান জানিয়েছেন, নতুন এই রেলসেতু দিয়ে ব্রডগেজ ট্রেন প্রতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার ও মিটারগেজ ট্রেন ১০০ কিলোমিটার গতিতে পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।যমুনার পুরোনো সেতু দিয়ে বর্তমানে দিনে ৩৮টি ট্রেন চলাচল করছে। নতুন সেতু চালুর পরে আন্তনগর, লোকাল, কমিউটার ও মালবাহী ট্রেনসহ ৮৮টি ট্রেন পরিচালনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল রেলওয়ে। তবে সেই বাস্তবতা নেই রেলওয়েতে।

ট্যাগস
সর্বাধিক পঠিত

সাদপন্থী নেতা মোয়াজ বিন নূরের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

’’বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর’ নাম পরিবর্তন’’ নতুন নাম যমুনা রেলসেতু

আপডেট সময় ০৩:৪১:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

যমুনা নদীতে নির্মিত রেলসেতুর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামাঙ্কিত এ সেতুর নাম ‘যমুনা রেলসেতু’ করা হয়েছে। আজ রোববার এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘যমুনা নদীতে নির্মিত রেলসেতুর নাম বঙ্গবন্ধু রেল সেতু থাকছে না। এটি এখন যমুনা রেলসেতু নামেই উদ্বোধন করা হবে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে এই রেলসেতু উদ্বোধন করা হতে পারে। সেইভাবেই কাজ চলছে।’

রেলের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, ‘রেলে ইঞ্জিনের সংকট রয়েছে, চাইলেও নতুন ট্রেন দিতে পারছি না। তবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি অনুরোধ করেছিলেন, পাবনাবাসীর জন্য কোনো নতুন ট্রেন পরিচালনা করা যায় কি না। সেটি নিয়ে আমরা ভাবছি।’এর আগে গত শুক্রবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফাহিমুল ইসলাম রেলসেতু পরিদর্শন করেন। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, স্ব-স্ব এলাকার জায়গার নামেই বিভিন্ন স্থাপনার নাম দিতে আগ্রহী তারা। যমুনা নদীর ওপর নবনির্মিত রেলওয়ে সেতুটির ক্ষেত্রেও তা–ই হতে পারে। যমুনা নদীর ওপর নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নাম বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

রেলওয়ের তথ্যমতে, এখন যমুনার বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুতে মিটারগেজের যে রেল সংযোগ রয়েছে তাতে সর্বোচ্চ ৪৩ দশমিক ৭০ কিলো-নিউটন/মিটার ওজন বহনের অনুমতি রয়েছে। ট্রেনে বেশি বগি যুক্ত করার সুযোগ নেই; সঙ্গে রয়েছে এক লাইনের সীমাবদ্ধতা। বেশি ট্রেন পরিচালনা করা রেলওয়ের পক্ষে সম্ভব নয়। এই সেতুতে মাত্র ২০ কিলোমিটার গতিতে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার সেতু পার হতে একেকটি ট্রেনের ২৫ মিনিটের মতো সময় লেগে যায়।

সেতুর ওপর একটি লাইন হওয়ায় দুই পাড়ের স্টেশনে সিগন্যালের জন্য অপেক্ষা করতে হতো দীর্ঘক্ষণ। সব মিলিয়ে মাত্র ৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে লাগছে যেত এক ঘণ্টার বেশি। বঙ্গবন্ধু রেলসেতু উদ্বোধন হলে এ রুটে গড়ে সময় বাঁচবে এক ঘণ্টা। ক্রসিংয়েও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করা লাগবে না। ফলে ভোগান্তির হাত থেকে বেঁচে যাবেন রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলা এবং খুলনা বিভাগের ১০ জেলার যাত্রীরা।এই দুর্ভোগ থেকে যাত্রীদের মুক্তি দিতে বিগত সরকার ২০২০ সালের ৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুর সমান্তরালে ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকের ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা অনুমোদন করে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ৪ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা এবং জাপানের জাইকা ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা অর্থায়ন করে।

রেলের তথ্যমতে, বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরাল ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকসহ প্রায় ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার এই রেলসেতুতে ৭ দশমিক ৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন ছুটতে পারবে। তবে শুরুতে (উদ্বোধনের এক বছর) ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলবে। সেতু পার হতে সাড়ে তিন থেকে চার মিনিট লাগবে।

সেতুটির প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ডব্লিউডি-১ ও ডব্লিউডি-২ নামে দুটি প্যাকেজে জাপানি পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ডব্লিউডি-১ প্যাকেজটি বাস্তবায়ন করছে জাপানি আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওবাইসি, টোআ করপোরেশন ও জেইসি (ওটিজে) জয়েন্ট ভেঞ্চার। সেতুর উভয় প্রান্তের দুই স্টেশনে সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনে ডব্লিউডি-৩ প্যাকেজের কাজ করছে জাপানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইয়াশিমা।

সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান জানিয়েছেন, নতুন এই রেলসেতু দিয়ে ব্রডগেজ ট্রেন প্রতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার ও মিটারগেজ ট্রেন ১০০ কিলোমিটার গতিতে পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।যমুনার পুরোনো সেতু দিয়ে বর্তমানে দিনে ৩৮টি ট্রেন চলাচল করছে। নতুন সেতু চালুর পরে আন্তনগর, লোকাল, কমিউটার ও মালবাহী ট্রেনসহ ৮৮টি ট্রেন পরিচালনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল রেলওয়ে। তবে সেই বাস্তবতা নেই রেলওয়েতে।