ঢাকা ১২:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে

সংলাপের দাওয়াত অনিশ্চিত জাতীয় পার্টিসহ ২৮ দলের

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সংলাপে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ২৮টি দলের আমন্ত্রণ পাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত। এসব দল গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ ও ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। আমন্ত্রণ না পাওয়া দলগুলোর মধ্যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের শরিক দলগুলো ছাড়াও নতুন কিছু রাজনৈতিক দলও রয়েছে। রয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী বিএনপি নেতৃত্বাধীন আন্দোলন থেকে বের হয়ে হঠাৎ নির্বাচনে অংশ নেওয়া নেতাদের দলও।

নতুন ও ছোট রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন, ‘দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে আমাদের দলের নিবন্ধন বাতিল করার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া আমাদের দলের প্রতীকে যাঁরা প্রার্থী হয়েছিলেন তাঁদের অনেককেই আমরা চিনি না। চাপের মুখে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছিলাম।’বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের সংগঠন প্রধান আবু লায়েস মুন্না গতকাল শনিবার  বলেন, ‘আমাদের দল আওয়ামী লীগের লেজুড়বৃত্তি করে না।দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে  আমরা বিরত ছিলাম।

নির্বাচনী আইন অনুসারে পর পর তিনটি সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে নিবন্ধন বাতিল হতে পারে—এই আইন দেখিয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে আমাদের বলা হয়েছিল, নির্বাচনে অংশ না নিলে নিবন্ধন বাতিল করা হবে।এ ছাড়া আমাদের দলের প্রতীক ব্যবহার করে যাঁরা প্রার্থী হয়েছিলেন তাঁদের অনেককেই আমরা চিনি না। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে চিঠি দিয়ে আমাদের সংলাপে ডাকার অনুরোধ করেছি।আশা করছি পরবর্তী সংলাপে ডাক পাব।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধন পাওয়া দল বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা দুইবার চিঠি দিয়ে কোনো সাড়া পাইনি।’সংলাপের জন্য জাতীয় পার্টিকে (জাপা) এখনো আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের পক্ষ থেকে দলটির ব্যাপারে আপত্তি এসেছে। এই আপত্তির পেছনে অভিযোগ হচ্ছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সহযোগী ছিল জাপা।

এ ছাড়া যেসব দল ২০১৪ ও ২০২৪ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন একতরফা নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে প্রার্থী দিয়েছিল তাদের আপাতত সংলাপে না-ও ডাকা হতে পারে।নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিপপের প্রধান অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ এ বিষয়ে গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সংলাপে যেসব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে তাতে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বার্তা পাওয়া যাচ্ছে।

এই বার্তার মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে গ্রিন সিগন্যাল পাচ্ছে আওয়ামী লীগের স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে যেসব দল আন্দোলন করেছিল সেসব দল।আর আওয়ামী লীগ ও দলটির নেতৃত্বাধীন জোটের দলগুলোর জন্য রেড সিগন্যাল মিলছে। এসব দলের নেতারা এরই মধ্যে গণহত্যার মামলায় অভিযুক্ত। এ ছাড়া একপাক্ষিক দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেসব দল অংশ নিয়ে ওই নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক বলে চালানোর মদদ জুগিয়েছিল সেসব দলও গুরুত্ব হারিয়েছে।

যেসব দল, জোট ও সংগঠন সংলাপে আমন্ত্রণ পেয়েছে

গত ৫ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, বাম গণতান্ত্রিক জোট, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি (আমার বাংলাদেশ) পার্টির সংলাপ হয়।গতকাল শনিবার গণফোরাম, এলডিপি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দল, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, লেবার পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) আলোচনায় অংশ নেয়। সংলাপে আমন্ত্রণ পাওয়া দলগুলো আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিল। সংগঠন হিসেবে আমন্ত্রণ পাওয়া হেফাজতে ইসলামের সদস্যরাও আওয়ামী লীগ সরকার আমলে নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ট্যাগস

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে

সংলাপের দাওয়াত অনিশ্চিত জাতীয় পার্টিসহ ২৮ দলের

আপডেট সময় ১১:৫৮:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সংলাপে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ২৮টি দলের আমন্ত্রণ পাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত। এসব দল গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ ও ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। আমন্ত্রণ না পাওয়া দলগুলোর মধ্যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের শরিক দলগুলো ছাড়াও নতুন কিছু রাজনৈতিক দলও রয়েছে। রয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী বিএনপি নেতৃত্বাধীন আন্দোলন থেকে বের হয়ে হঠাৎ নির্বাচনে অংশ নেওয়া নেতাদের দলও।

নতুন ও ছোট রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন, ‘দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে আমাদের দলের নিবন্ধন বাতিল করার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া আমাদের দলের প্রতীকে যাঁরা প্রার্থী হয়েছিলেন তাঁদের অনেককেই আমরা চিনি না। চাপের মুখে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছিলাম।’বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের সংগঠন প্রধান আবু লায়েস মুন্না গতকাল শনিবার  বলেন, ‘আমাদের দল আওয়ামী লীগের লেজুড়বৃত্তি করে না।দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে  আমরা বিরত ছিলাম।

নির্বাচনী আইন অনুসারে পর পর তিনটি সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে নিবন্ধন বাতিল হতে পারে—এই আইন দেখিয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে আমাদের বলা হয়েছিল, নির্বাচনে অংশ না নিলে নিবন্ধন বাতিল করা হবে।এ ছাড়া আমাদের দলের প্রতীক ব্যবহার করে যাঁরা প্রার্থী হয়েছিলেন তাঁদের অনেককেই আমরা চিনি না। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে চিঠি দিয়ে আমাদের সংলাপে ডাকার অনুরোধ করেছি।আশা করছি পরবর্তী সংলাপে ডাক পাব।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধন পাওয়া দল বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা দুইবার চিঠি দিয়ে কোনো সাড়া পাইনি।’সংলাপের জন্য জাতীয় পার্টিকে (জাপা) এখনো আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের পক্ষ থেকে দলটির ব্যাপারে আপত্তি এসেছে। এই আপত্তির পেছনে অভিযোগ হচ্ছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সহযোগী ছিল জাপা।

এ ছাড়া যেসব দল ২০১৪ ও ২০২৪ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন একতরফা নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে প্রার্থী দিয়েছিল তাদের আপাতত সংলাপে না-ও ডাকা হতে পারে।নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিপপের প্রধান অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ এ বিষয়ে গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সংলাপে যেসব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে তাতে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বার্তা পাওয়া যাচ্ছে।

এই বার্তার মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে গ্রিন সিগন্যাল পাচ্ছে আওয়ামী লীগের স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে যেসব দল আন্দোলন করেছিল সেসব দল।আর আওয়ামী লীগ ও দলটির নেতৃত্বাধীন জোটের দলগুলোর জন্য রেড সিগন্যাল মিলছে। এসব দলের নেতারা এরই মধ্যে গণহত্যার মামলায় অভিযুক্ত। এ ছাড়া একপাক্ষিক দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেসব দল অংশ নিয়ে ওই নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক বলে চালানোর মদদ জুগিয়েছিল সেসব দলও গুরুত্ব হারিয়েছে।

যেসব দল, জোট ও সংগঠন সংলাপে আমন্ত্রণ পেয়েছে

গত ৫ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, বাম গণতান্ত্রিক জোট, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি (আমার বাংলাদেশ) পার্টির সংলাপ হয়।গতকাল শনিবার গণফোরাম, এলডিপি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দল, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, লেবার পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) আলোচনায় অংশ নেয়। সংলাপে আমন্ত্রণ পাওয়া দলগুলো আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিল। সংগঠন হিসেবে আমন্ত্রণ পাওয়া হেফাজতে ইসলামের সদস্যরাও আওয়ামী লীগ সরকার আমলে নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ রয়েছে।