নওগাঁয় ১৩ টাকার বিনিময়ে নিম্ন আয়ের ২০০ পরিবার ‘ঐক্যমতের বাজারে’ বাজার থেকে প্রায় ১ হাজার টাকার ব্যাগভর্তি বাজার করতে পেরেছেন। গতকাল বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী এমনই এক ভ্রাম্যমাণ বাজার বসানো হয়েছিল নওগাঁর সদর উপজেলা হলরুমে। যার নাম দেওয়া হয় ‘ঐক্যমতের বাজার’।
সেখানে সারি সারি সাজানো চাল, ডাল, তেল, লবণ, আটা, সুজি, ডিম, মাছ, মাংস ও শীতবস্ত্র নিজের পছন্দ মতো বাজার করে নিয়ে যান নিম্ন আয়ের মানুষরা। এর আগে বেলা ১১টায় এর উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিল্টন চন্দ্র রায়। এর আয়োজন করেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নওগাঁ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার এস এম রবিন শীষ, নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি কায়েস উদ্দিন, জেলা টেলিভিশন জার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রায়হান আলম, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও বেলা শেষে প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠিাতা তসলিমা ফেরদৌসসহ ফাউন্ডেশনের সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবীরা।
সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়- চাল ১ টাকা, ডাল ২ টাকা, চিনি ৩ টাকা, মাছ ৫ টাকা, মুরগি ৫ টাকা, এক ডজন ডিম ২ টাকা, কম্বল ৪ টাকা, শীতবস্ত্র ১ টাকা, ছোলা ১ টাকা, তেল ৫ টাকা, লবণ ১ টাকা, আটা ৩ টাকা ও সুজি ১ টাকা নাম মাত্র মূল্যে ছিল। প্রতিজন ১৩ টাকায় কিনতে পেরেছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্য। বর্তমান বাজারে যখন নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির তখন এমন দামে নিত্যপণ্য ক্রয় করতে পেরে খুশি নিম্ন আয়ের এসব মানুষ।
বাজার করতে আসা লায়লা বেগম বলেন, আমি একজন অসহায় মানুষ। বর্তমান বাজারে যে অবস্থা এতে করে আমরা গরিব মানুষ বাঁচতে পারব না। আজকে ১৩ টাকায় চাল, ডাল, মুরগির ও শীতের কাপড় পেলাম। এতে আমার খুব উপকার হলো।
আয়শা বেগম বলেন, আমি তেল, ডাল, মুরগি, আমার বাচ্চার জন্য কাপড় নিলাম। এখানে কম দামে পেয়ে আমি অনেক খুশি।শুকবার আলী নামে আরেক জন বলেন, এখন বাজারে সবকিছুর দাম অনেক। ডিম, মাছ-গোস্ত আমাদের মতো গরিব মানুষের পক্ষে কিনে খাওয়া খুবই কষ্টকর। তবে আজ ১৩ টাকায় ইচ্ছামতো বাজার করতে পেরেছি। মুরগি, ডিম, চাল, ডাল, তেল, গেঞ্জি অনেক কিছু কিনেছি।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ বলেন, ‘ঐক্যমতের বাজার’ করোনার পর থেকেই চালু করা হয়েছে। মানুষের পরিবারের ছোট ছোট অমিল থেকে বড় ধরনের বিভেদ তৈরি হয় সে বিভেদ মোচনের জন্য ঐক্যমতের বাজার নামে এ প্রকল্পটি চালু করা হয়। এছাড়াও শিক্ষা, খাদ্য, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে কাজ করছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন শুরু থেকেই। বিশেষ করে হত দরিদ্র মানুষের প্রয়োজন সেগুলো নিয়ে কাজ করছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।
তিনি আরও বলেন, আজকে আমাদের এই বাজার থেকে ১৩ টাকায় বিনিময়ে ১৪টি নিত্যপণ্য প্রায় ১ হাজার টাকায় কেবল মাত্র কিনতে পারছে। ঐক্যমতের মিল থাকলেই স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই এই বাজার থেকে বাজার করার সুযোগ পায় একটি প্রতীকী মূল্যে। যাতে ব্যাগ ভর্তি বাজার করে হাসিমুখে বাসায় ফিরতে পারে।