নানা প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ব্যর্থ হওয়ার পর ভারতের উত্তরাখণ্ডে ধসে পড়া নির্মাণাধীন টানেলে আটকেপড়া শ্রমিকদের উদ্ধারে ডাকা হয়েছে সেনাবাহিনীকে। গত ১২ নভেম্বর পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলটিতে আটকা পড়েন ৪১ জন শ্রমিক। এরপর থেকে সেখানেই আটকে আছেন তারা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, টানেলে আটকা শ্রমিকদের উদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি ড্রিলিং মেশিন আনা হয়। সেটি দিয়ে ধ্বংসস্তূপে ৬০ মিটার লম্বা একটি পাইপ বসানোর কাজ চলছিল। কিন্তু ড্রিলিং মেশিনটি অকেজো হয়ে পড়ায় রোববার (২৬ নভেম্বর) থেকে হাত দিয়ে ড্রিলিংয়ের কাজ করা হচ্ছে। মূলত এই কাজ করার জন্যই সেনাবাহিনীকে ডাকা হয়েছে।
এনডিটিভি বলছে, হাত দিয়ে ড্রিলিং করার কাজে অংশ নেবেন সেনাবাহিনীর একাধিক সদস্য। একজন ড্রিলিং করা শেষে অপর একজন কাজে নামবেন। এরপর পর্যায়ক্রমে প্রায় ১৫ মিটার অংশ ড্রিল করা হবে। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, টানেলে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধারে আরও কয়েকদিন, এমনকি কয়েক সপ্তাহও অপেক্ষা করতে হতে পারে। তবে তারা সুস্থ আছেন ও একটি সরু পাইপের মাধ্যমে তাদের অক্সিজেন, খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানো হচ্ছে।
এর আগে, শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) শ্রমিকদের বের করে আনতে গিয়ে নতুন করে বাধার মুখে পড়ে উদ্ধারকারী দল। এদিন সন্ধ্যায় উদ্ধারকারীরা জানান, কারিগরি ত্রুটির কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে সুড়ঙ্গে আটকেপড়া শ্রমিকদের উদ্ধারকাজ। ড্রিলিং মেশিনে ‘প্রযুক্তিগত ত্রুটি’ দেখা দেয়ার পর যে কাঠামোর ওপর দাঁড় করিয়ে যন্ত্রটিকে চালানো হচ্ছিল, তাতেও ত্রুটি দেখা দেয়। এতে ব্যাহত হয় উদ্ধারকাজ। এমন পরিস্থিতিতে, শ্বাসরুদ্ধকর এ অভিযান শেষ হতে ঠিক কতদিন লাগবে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
তবে শুক্রবার আন্তর্জাতিক টানেল বিশেষজ্ঞ আর্নল্ড ডিক্স গণমাধ্যমকে জানান ‘অগার মেশিন’ ভেঙে গেছে। তাই কীভাবে কাজ করা হবে, তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। তবে আমি আত্মবিশ্বাসী যে, আটকেপড়া সব শ্রমিক নিরাপদে ফিরে আসবেন। কত দিন সময় লাগবে- প্রশ্নের জবাবে ডিক্স বলেন, আশা করি, ক্রিসমাস অর্থাৎ বড় দিনের আগেই সবাই বাড়ি ফিরবেন।’
গত ১২ নভেম্বর সকালে ব্রহ্ম খাল-য়ামুনোত্রী মহাসড়কে নির্মাণাধীন টানেলে এই ধসের ঘটনা ঘটে। এই টানেলের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ভূমিধসের কারণে এই টানেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই ধসের পর পেরিয়ে গেছে ১৪ দিন।