ঢাকা ০৯:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চোরাগোপ্তা হামলা করে সরকার হটানো যায় না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে সরকার হটানো যায় না। তারা অবরোধের নাম করে বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়ে মানুষকে আহত করছে। পুলিশ ও সাংবাদিকের ওপর হামলা করছে। বিএনপি’র এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আমরা যুগ যুগ ধরে দেখে আসছি।

গতকাল বিকালে নরসিংদীর মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, তারা পুলিশ হাসপাতালে আক্রমণ করে এম্বুলেন্স পুড়িয়ে দিয়েছে। কেউ কি হাসপাতালে আক্রমণ করে? তারেক জিয়ার চামচারা এসব হামলা করছে

জনসভায় উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, কেউ যদি বাসে আগুন দিতে যায় তাকে ধরে সেই আগুনে ফেলে দেবেন। সে বুঝুক আগুনের কতো জ্বালা। নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় জনসভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, শিল্পমন্ত্রী এডভোকেট নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান প্রমুখ।

এর আগে নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা (জিপিইউএফএফ) উদ্বোধন পরবর্তী নাগরিক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো অগ্নিসন্ত্রাস বা মানবসৃষ্ট সকল দুর্যোগ অতিক্রম করেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে কৃষক সারের জন্য আন্দোলন করেছিল। গাইবান্ধার মহিমাগঞ্জ এবং টাঙ্গাইলের ঘাটাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় সার চাওয়ায় কৃষকদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। তখনই কথা দিয়েছিলাম কৃষকদের সারের জন্য ছুটতে হবে না। সার কৃষকের ঘরে পৌঁছে যাবে। এ জন্য ২০০৯ সালে সরকারে আসার পর যত কষ্টই হোক সারের কোনো ঘাটতি আমরা হতে দেইনি।

এ সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনরতদের ওপর গুলি চালিয়ে ২০ জনকে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে সরকার প্রধান বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসার পর সেখানে বেসরকারি খাতে একটি এবং সরকারিভাবেও একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে দিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য ২০১৩ সালে বিএনপি আজকের মতো অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করে এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র পুড়িয়ে দেয়। কর্মরত প্রকৌশলী সেই আগুনে পুড়ে মারা যায়। এভাবেই দেশের সম্পদ সে সময় একে একে তারা ধ্বংস করেছে। এখন আবারো তখনকার মতো অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৯৬তে আমরা যখন সরকারে এসে জাতীয় সংসদে দেশকে বিএনপি’র রেখে যাওয়া খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে পরিণত করার ঘোষণা দিই তখন খালেদা জিয়া ও তার সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান বলেছিলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো নয় তাহলে বিদেশি সাহায্য পাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ আমাদের সহযোগিতা করেছে। এটি অত্যন্ত আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর।

যেখানে পরিবেশের কোনো দূষণ হবে না। পরিবেশ দূষণকারী কার্বন-ডাই অক্সাইডকেও কাজে লাগিয়ে ১০ শতাংশ বেশি ইউরিয়া সার উৎপাদন করা হবে। এটি বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি সার আমদানি হ্রাস করবে এবং কর্মসংস্থানও বাড়াবে। প্রধানমন্ত্রী সার্বিক খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, দেশবাসীকে বলবো এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। খাদ্যের জন্য যেন কারও কাছে হাত পাততে না হয়।

এ সময় দেশের আর্থসামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যা কিছু করেছি তা জনগণের স্বার্থে এবং কল্যাণেই করেছি। আর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন একটা সুন্দর জীবন পায় সেই লক্ষ্য নিয়েই করেছি। আমাদের সরকার দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছে। আগামীর বাংলাদেশ হবে স্মার্ট। যা আর কখনো পিছিয়ে যাবে না।

নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানাটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম এবং বার্ষিক ৯ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন সার উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন পরিবেশবান্ধব, জ্বালানি সাশ্রয়ী ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর। যা দেশের মোট ইউরিয়ার চাহিদার ৩৫ শতাংশ। এর মাধ্যমে ইউরিয়া সার আমদানিতে বছরে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বাংলাদেশের।

চোরাগোপ্তা হামলা করে সরকার হটানো যায় না: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় ১১:৪৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে সরকার হটানো যায় না। তারা অবরোধের নাম করে বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়ে মানুষকে আহত করছে। পুলিশ ও সাংবাদিকের ওপর হামলা করছে। বিএনপি’র এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আমরা যুগ যুগ ধরে দেখে আসছি।

গতকাল বিকালে নরসিংদীর মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, তারা পুলিশ হাসপাতালে আক্রমণ করে এম্বুলেন্স পুড়িয়ে দিয়েছে। কেউ কি হাসপাতালে আক্রমণ করে? তারেক জিয়ার চামচারা এসব হামলা করছে

জনসভায় উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, কেউ যদি বাসে আগুন দিতে যায় তাকে ধরে সেই আগুনে ফেলে দেবেন। সে বুঝুক আগুনের কতো জ্বালা। নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় জনসভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, শিল্পমন্ত্রী এডভোকেট নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান প্রমুখ।

এর আগে নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা (জিপিইউএফএফ) উদ্বোধন পরবর্তী নাগরিক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো অগ্নিসন্ত্রাস বা মানবসৃষ্ট সকল দুর্যোগ অতিক্রম করেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে কৃষক সারের জন্য আন্দোলন করেছিল। গাইবান্ধার মহিমাগঞ্জ এবং টাঙ্গাইলের ঘাটাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় সার চাওয়ায় কৃষকদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। তখনই কথা দিয়েছিলাম কৃষকদের সারের জন্য ছুটতে হবে না। সার কৃষকের ঘরে পৌঁছে যাবে। এ জন্য ২০০৯ সালে সরকারে আসার পর যত কষ্টই হোক সারের কোনো ঘাটতি আমরা হতে দেইনি।

এ সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনরতদের ওপর গুলি চালিয়ে ২০ জনকে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে সরকার প্রধান বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসার পর সেখানে বেসরকারি খাতে একটি এবং সরকারিভাবেও একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে দিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য ২০১৩ সালে বিএনপি আজকের মতো অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করে এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র পুড়িয়ে দেয়। কর্মরত প্রকৌশলী সেই আগুনে পুড়ে মারা যায়। এভাবেই দেশের সম্পদ সে সময় একে একে তারা ধ্বংস করেছে। এখন আবারো তখনকার মতো অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৯৬তে আমরা যখন সরকারে এসে জাতীয় সংসদে দেশকে বিএনপি’র রেখে যাওয়া খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে পরিণত করার ঘোষণা দিই তখন খালেদা জিয়া ও তার সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান বলেছিলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো নয় তাহলে বিদেশি সাহায্য পাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ আমাদের সহযোগিতা করেছে। এটি অত্যন্ত আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর।

যেখানে পরিবেশের কোনো দূষণ হবে না। পরিবেশ দূষণকারী কার্বন-ডাই অক্সাইডকেও কাজে লাগিয়ে ১০ শতাংশ বেশি ইউরিয়া সার উৎপাদন করা হবে। এটি বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি সার আমদানি হ্রাস করবে এবং কর্মসংস্থানও বাড়াবে। প্রধানমন্ত্রী সার্বিক খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, দেশবাসীকে বলবো এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। খাদ্যের জন্য যেন কারও কাছে হাত পাততে না হয়।

এ সময় দেশের আর্থসামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যা কিছু করেছি তা জনগণের স্বার্থে এবং কল্যাণেই করেছি। আর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন একটা সুন্দর জীবন পায় সেই লক্ষ্য নিয়েই করেছি। আমাদের সরকার দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছে। আগামীর বাংলাদেশ হবে স্মার্ট। যা আর কখনো পিছিয়ে যাবে না।

নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানাটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম এবং বার্ষিক ৯ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন সার উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন পরিবেশবান্ধব, জ্বালানি সাশ্রয়ী ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর। যা দেশের মোট ইউরিয়ার চাহিদার ৩৫ শতাংশ। এর মাধ্যমে ইউরিয়া সার আমদানিতে বছরে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বাংলাদেশের।