ঢাকা ০৬:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুলিশের ফেসবুক পেজে পাঠানো বার্তায় ধরা পড়লেন ভুয়া ডাক্তার

ডেক্স রিপোর্ট :রাজধানীর দক্ষিণখানের হাজী সিদ্দিক মার্কেটে একজন ডেন্টাল চিকিৎসকের চেম্বারে নিয়মিত চিকিৎসা নেন স্থানীয় এক গৃহবধূ। নিয়মিত চিকিৎসার পরে ফল না পাওয়ায় ওই চিকিৎসকের বিষয়ে ভুক্তভোগীর খটকা লাগে।

ভুক্তভোগী স্বামীসহ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন ওই চিকিৎসক স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী, তার বিষয়ে কিছুই বলা যাবে না। তবে ভুক্তভোগী বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পরিচালিত বাংলাদেশ পুলিশের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে বিষয়টি জানিয়ে বার্তা পাঠান।

তিনি অনুরোধ করেন- যেন ভুয়া চিকিৎসকের বিষয়টি একটু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হয়। পরে পুলিশ তদন্ত করে দেখে ওই দাঁতের চিকিৎসকের কোনো সার্টিফিকেট নেই। তিনি ভুয়া; ডাক্তার সেজে এতদিন ধরে লোক ঠকিয়ে আসছিলেন। পরে পুলিশ তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

বুধবার (১২ মে) পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা এসব তথ্য জানান।

সোহেল রানা বলেন, রাজধানীর দক্ষিণখানে এক গৃহবধূ গিয়েছিলেন দাঁতের ডাক্তারের কাছে। হাজী সিদ্দিক মার্কেটে তার চেম্বার। দামি আসবাবপত্র ও সুন্দর ডেকোরেশনে সাজানো চেম্বারটি। কয়েকবার তাকে দাঁতও দেখিয়েছেন। খরচ করেছেন হাজার হাজার টাকা। কিন্তু, চিকিৎসায় তার খটকা লাগে।

তার মনে হচ্ছিল তিনি সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তাই, তিনি গিয়েছেন অন্য একজন ডাক্তারের কাছে। সেই ডাক্তার পূর্বের ডাক্তারের চিকিৎসা সঠিক নয় এবং সন্দেহজনক বলে মত ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, ভদ্রমহিলা তার স্বামীকে জানালে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পরামর্শ দেন। কেননা, সেই ভুয়া ডাক্তার ও তার পরিবার এলাকায় প্রভাবশালী। এখানে তাদের বাড়ি, সম্পত্তি ও অনেক আত্মীয়-স্বজন রয়েছে। তাদের সঙ্গে ঝামেলায় গিয়ে এলাকায় টিকে থাকতে পারবেন না। কিন্তু, ভদ্রমহিলা বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলেন না।

পরে মঙ্গলবার (১১ মে) তিনি বাংলাদেশ পুলিশের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে বিষয়টি জানিয়ে বার্তা পাঠান। তিনি অনুরোধ করেন যেন ওই ডাক্তারের বিষয়টি একটু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হয়। তবে, ভদ্রমহিলা কোনোভাবেই থানায় কোনো নিয়মিত অভিযোগ বা মামলা করতে অস্বীকার করেন।

ভদ্রমহিলার বার্তাটি দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিকদার মো. শামীম হোসেনকে পাঠিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয় মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং। পাশাপাশি, দক্ষিণখান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) বিপ্লব কুমার গোস্বামীকে পরামর্শ দেন বিষয়টি সুপারভাইজ করতে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে, ইন্সপেক্টর অপারেশন্স মো. আফতাব উদ্দিন শেখের নেতৃত্বে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোশাররফ হোসেনসহ পুলিশের একটি টিম সাদা পোশাকে বিষয়টি তদন্তে নামে।

তদন্তে তারা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হন অভিযুক্ত ডাক্তার পাস করা কোনো চিকিৎসক নন। দাঁতের ডাক্তার হিসেবে তার কোনো প্রফেশনাল সার্টিফিকেটও নেই। এই ব্যক্তি এভাবে দীর্ঘদিন ধরে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন।

এআইজি সোহেল রানা আরও বলেন, ভুয়া ওই দাঁতের ডাক্তার দাবি করেন, তিনি তার ডাক্তার বন্ধুদেরকে চিকিৎসায় সহায়তা করে থাকেন মাত্র। কিন্তু, সরেজমিনে দেখা গেছে, অনুমোদিত ডাক্তার না হয়েও তিনি দাঁতের চিকিৎসা করছেন। এ বিষয়ে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ট্যাগস

সর্বাধিক পঠিত

পুলিশের ফেসবুক পেজে পাঠানো বার্তায় ধরা পড়লেন ভুয়া ডাক্তার

আপডেট সময় ০১:৫২:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মে ২০২১

ডেক্স রিপোর্ট :রাজধানীর দক্ষিণখানের হাজী সিদ্দিক মার্কেটে একজন ডেন্টাল চিকিৎসকের চেম্বারে নিয়মিত চিকিৎসা নেন স্থানীয় এক গৃহবধূ। নিয়মিত চিকিৎসার পরে ফল না পাওয়ায় ওই চিকিৎসকের বিষয়ে ভুক্তভোগীর খটকা লাগে।

ভুক্তভোগী স্বামীসহ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন ওই চিকিৎসক স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী, তার বিষয়ে কিছুই বলা যাবে না। তবে ভুক্তভোগী বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পরিচালিত বাংলাদেশ পুলিশের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে বিষয়টি জানিয়ে বার্তা পাঠান।

তিনি অনুরোধ করেন- যেন ভুয়া চিকিৎসকের বিষয়টি একটু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হয়। পরে পুলিশ তদন্ত করে দেখে ওই দাঁতের চিকিৎসকের কোনো সার্টিফিকেট নেই। তিনি ভুয়া; ডাক্তার সেজে এতদিন ধরে লোক ঠকিয়ে আসছিলেন। পরে পুলিশ তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

বুধবার (১২ মে) পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা এসব তথ্য জানান।

সোহেল রানা বলেন, রাজধানীর দক্ষিণখানে এক গৃহবধূ গিয়েছিলেন দাঁতের ডাক্তারের কাছে। হাজী সিদ্দিক মার্কেটে তার চেম্বার। দামি আসবাবপত্র ও সুন্দর ডেকোরেশনে সাজানো চেম্বারটি। কয়েকবার তাকে দাঁতও দেখিয়েছেন। খরচ করেছেন হাজার হাজার টাকা। কিন্তু, চিকিৎসায় তার খটকা লাগে।

তার মনে হচ্ছিল তিনি সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তাই, তিনি গিয়েছেন অন্য একজন ডাক্তারের কাছে। সেই ডাক্তার পূর্বের ডাক্তারের চিকিৎসা সঠিক নয় এবং সন্দেহজনক বলে মত ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, ভদ্রমহিলা তার স্বামীকে জানালে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পরামর্শ দেন। কেননা, সেই ভুয়া ডাক্তার ও তার পরিবার এলাকায় প্রভাবশালী। এখানে তাদের বাড়ি, সম্পত্তি ও অনেক আত্মীয়-স্বজন রয়েছে। তাদের সঙ্গে ঝামেলায় গিয়ে এলাকায় টিকে থাকতে পারবেন না। কিন্তু, ভদ্রমহিলা বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলেন না।

পরে মঙ্গলবার (১১ মে) তিনি বাংলাদেশ পুলিশের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে বিষয়টি জানিয়ে বার্তা পাঠান। তিনি অনুরোধ করেন যেন ওই ডাক্তারের বিষয়টি একটু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হয়। তবে, ভদ্রমহিলা কোনোভাবেই থানায় কোনো নিয়মিত অভিযোগ বা মামলা করতে অস্বীকার করেন।

ভদ্রমহিলার বার্তাটি দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিকদার মো. শামীম হোসেনকে পাঠিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয় মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং। পাশাপাশি, দক্ষিণখান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) বিপ্লব কুমার গোস্বামীকে পরামর্শ দেন বিষয়টি সুপারভাইজ করতে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে, ইন্সপেক্টর অপারেশন্স মো. আফতাব উদ্দিন শেখের নেতৃত্বে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোশাররফ হোসেনসহ পুলিশের একটি টিম সাদা পোশাকে বিষয়টি তদন্তে নামে।

তদন্তে তারা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হন অভিযুক্ত ডাক্তার পাস করা কোনো চিকিৎসক নন। দাঁতের ডাক্তার হিসেবে তার কোনো প্রফেশনাল সার্টিফিকেটও নেই। এই ব্যক্তি এভাবে দীর্ঘদিন ধরে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন।

এআইজি সোহেল রানা আরও বলেন, ভুয়া ওই দাঁতের ডাক্তার দাবি করেন, তিনি তার ডাক্তার বন্ধুদেরকে চিকিৎসায় সহায়তা করে থাকেন মাত্র। কিন্তু, সরেজমিনে দেখা গেছে, অনুমোদিত ডাক্তার না হয়েও তিনি দাঁতের চিকিৎসা করছেন। এ বিষয়ে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।


Notice: ob_end_flush(): Failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/visionnewstoday/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471