ঢাকা ০১:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় : নেহার পাঁচ দিনের রিমান্ড

স্টাফ রিপোর্টারঃ  রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তার বান্ধবী ফারজানা জামান নেহার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) নেহাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বৃহস্পতিবার রাতে (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আজিমপুর এলাকার একটি বাসা থেকে নেহাকে গ্রেফতার করা হয়। নিহত শিক্ষার্থীর বাবার করা মামলায় তিনি এজাহারভুক্ত আসামি। এ নিয়ে এ মামলায় মোট তিনজন গ্রেফতার হয়ে রিমান্ডে গেলেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসির আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন শাফায়াত জামিল (২২)।

এদিন আদালতে হলফনামা দিয়ে মামলায় সম্পৃক্ততার ইচ্ছা প্রকাশ করেন শাফায়াত। এরপর বিচারক ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

হলফনামায় শাফায়াত দাবি করেন, ‘গত ২৮ জানুয়ারি বন্ধু আরাফাতের নিমন্ত্রণে উত্তরার ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন তিনি। রেস্টুরেন্টে আরাফাত ও তার আরেক বন্ধু মুর্তজা রায়হান চৌধুরী তার বান্ধবীকে নিয়ে আসেন।’

মুর্তজা ও তার বান্ধবী পূর্বপরিচিত ছিলেন না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘তারা হালকা নাস্তার পর মদ পান করে চলে যান। আমি অসুস্থ বোধ করলে রেস্টুরেন্ট থেকে বাসায় চলে যাই। ৩০ জানুয়ারি আরাফাত মারা যান।’

গণমাধ্যমে মুর্তজা রায়হানের বান্ধবীর মৃত্যুর কথা জেনেছেন দাবি করে শাফায়াত বলেন, ‘এরপর পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আমার বাসায় অভিযান চালায়।

আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, আরাফাতসহ চারজন ও অজ্ঞাতনামা একজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

যেহেতু পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা আমার বাসায় অভিযান চালায়, সেহেতু অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে আমি নিজেকে সন্দেহ করছি। আমি নিজেকে এ মামলায় সম্পৃক্ত হতে ইচ্ছুক।’

শাফায়াত রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউল্যাবের শিক্ষার্থী।

এর আগে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি তার দুই বন্ধু মুর্তজা রায়হান চৌধুরী ও নুহাত আলম তাফসীরের পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

ওইদিনই চারজনকে আসামি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেছিলেন নিহত তরুণীর বাবা। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও একজনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল চারটায় মর্তুজা রায়হান ওই তরুণীকে নিয়ে মিরপুর থেকে আরাফাতের বাসায় যান।

সেখানে স্কুটার রেখে আরাফাত, ওই তরুণী এবং রায়হান একসঙ্গে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা এবং একজন সহপাঠী উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আসামিরা ওই তরুণীকে জোর করে ‘অধিক মাত্রায়’ মদপান করান।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, মদপানের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী তরুণী অসুস্থ বোধ করলে রায়হান তাকে মোহাম্মদপুরে তার এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে নুহাতের বাসায় নিয়ে যান।

সেখানে তরুণীকে ধর্ষণ করেন রায়হান। এ সময় রায়হানের বন্ধুরাও কক্ষে ছিলেন। ধর্ষণের পর রাতে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে বমি করলে রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খানকে ফোন দেন।

সেই বন্ধু পরদিন এসে তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর তার মৃত্যু হয়।

ট্যাগস

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় : নেহার পাঁচ দিনের রিমান্ড

আপডেট সময় ০৫:২১:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১

স্টাফ রিপোর্টারঃ  রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তার বান্ধবী ফারজানা জামান নেহার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) নেহাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বৃহস্পতিবার রাতে (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আজিমপুর এলাকার একটি বাসা থেকে নেহাকে গ্রেফতার করা হয়। নিহত শিক্ষার্থীর বাবার করা মামলায় তিনি এজাহারভুক্ত আসামি। এ নিয়ে এ মামলায় মোট তিনজন গ্রেফতার হয়ে রিমান্ডে গেলেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসির আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন শাফায়াত জামিল (২২)।

এদিন আদালতে হলফনামা দিয়ে মামলায় সম্পৃক্ততার ইচ্ছা প্রকাশ করেন শাফায়াত। এরপর বিচারক ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

হলফনামায় শাফায়াত দাবি করেন, ‘গত ২৮ জানুয়ারি বন্ধু আরাফাতের নিমন্ত্রণে উত্তরার ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন তিনি। রেস্টুরেন্টে আরাফাত ও তার আরেক বন্ধু মুর্তজা রায়হান চৌধুরী তার বান্ধবীকে নিয়ে আসেন।’

মুর্তজা ও তার বান্ধবী পূর্বপরিচিত ছিলেন না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘তারা হালকা নাস্তার পর মদ পান করে চলে যান। আমি অসুস্থ বোধ করলে রেস্টুরেন্ট থেকে বাসায় চলে যাই। ৩০ জানুয়ারি আরাফাত মারা যান।’

গণমাধ্যমে মুর্তজা রায়হানের বান্ধবীর মৃত্যুর কথা জেনেছেন দাবি করে শাফায়াত বলেন, ‘এরপর পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আমার বাসায় অভিযান চালায়।

আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, আরাফাতসহ চারজন ও অজ্ঞাতনামা একজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

যেহেতু পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা আমার বাসায় অভিযান চালায়, সেহেতু অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে আমি নিজেকে সন্দেহ করছি। আমি নিজেকে এ মামলায় সম্পৃক্ত হতে ইচ্ছুক।’

শাফায়াত রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউল্যাবের শিক্ষার্থী।

এর আগে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি তার দুই বন্ধু মুর্তজা রায়হান চৌধুরী ও নুহাত আলম তাফসীরের পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

ওইদিনই চারজনকে আসামি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেছিলেন নিহত তরুণীর বাবা। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও একজনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল চারটায় মর্তুজা রায়হান ওই তরুণীকে নিয়ে মিরপুর থেকে আরাফাতের বাসায় যান।

সেখানে স্কুটার রেখে আরাফাত, ওই তরুণী এবং রায়হান একসঙ্গে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা এবং একজন সহপাঠী উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আসামিরা ওই তরুণীকে জোর করে ‘অধিক মাত্রায়’ মদপান করান।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, মদপানের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী তরুণী অসুস্থ বোধ করলে রায়হান তাকে মোহাম্মদপুরে তার এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে নুহাতের বাসায় নিয়ে যান।

সেখানে তরুণীকে ধর্ষণ করেন রায়হান। এ সময় রায়হানের বন্ধুরাও কক্ষে ছিলেন। ধর্ষণের পর রাতে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে বমি করলে রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খানকে ফোন দেন।

সেই বন্ধু পরদিন এসে তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর তার মৃত্যু হয়।