যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার পদ থেকে স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থিকে অপসারণ করা হয়েছে।।রিপাবলিকান পার্টির কয়েকজন আইনপ্রণেতার বিদ্রোহে এ বিষয়টি সম্ভব হয়েছে। কয়েকদিন আগেই ডেমোক্র্যাট সরকার ‘শাটডাউন’ এড়ানোর পর প্রতিপক্ষ রিপাবলিকান পার্টির এই অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বিষয়টি বড় আকারে সবার সামনে এলো।
ম্যাকার্থিকে অপসারণের পক্ষে ২১৬ ও বিপক্ষে ২১০টি ভোট পড়ে। যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এবারই প্রথম হাউস (সংসদের নিম্ন কক্ষ) থেকে স্পিকার বা নেতাকে অপসারণের ঘটনা ঘটল। ২০৮ ডেমোক্র্যাটের পাশাপাশি এক নজিরবিহীন উদাহরণ সৃষ্টি করে ৮ রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা নিজ দলের স্পিকার অপসারণের পক্ষে ভোট দেন।
ম্যাকার্থি ইতোমধ্যে সাংবাদিকদের জানান, তিনি আর স্পিকার হওয়ার দৌড়ে যোগ দেবেন না।ম্যাকার্থি বলেন, ‘আমি যা বিশ্বাস করি, তার জন্য লড়েছি। আমার বিশ্বাস আমি আমার সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে পারব, তবে ভিন্ন কোনো ভূমিকা নিয়ে।’
বিশ্লেষকদের মতে, হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস প্রায় সপ্তাহখানিক নেতাবিহীন থাকবে। রিপাবলিকানরা জানিয়েছে, তারা ১০ অক্টোবর ম্যাকার্থির উত্তরসূরি বেছে নিতে বৈঠক করবে। ১১ অক্টোবর আবারও ভোটের মাধ্যমে নতুন স্পিকার নির্বাচন করা হবেমঙ্গলবার রিপাবলিকান বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কট্টর ডানপন্থী রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ম্যাট গেৎজ। শনিবার সরকারের আংশিক ‘শাটডাউন’ ঠেকাতে ম্যাকার্থি ডেমোক্র্যাট ভোটের সহায়তা নেওয়ায় ম্যাট স্পিকারের বিরোধিতা করেন।
মঙ্গলবার রিপাবলিকান বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কট্টর ডানপন্থী রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ম্যাট গেৎজ। ছবি: রয়টার্স
মঙ্গলবার রিপাবলিকান বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কট্টর ডানপন্থী রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ম্যাট গেৎজ। ছবি: রয়টার্স
রিপাবলিকান পার্টির নিয়ন্ত্রণাধীন থাকা অবস্থায় গত এক বছরে বেশ কিছু নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে মার্কিন হাউজে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণের পরিমাণ ৩১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে গেলে আরও একবার শাটডাউন পরিস্থিতির উদ্রেক হয়।
হাউজে রিপাবলিকানরা ২২১ আসন নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও ডেমোক্র্যাট পার্টির সঙ্গে তাদের ব্যবধান ন্যুনতম—ডেমোক্র্যাটদের হাতে ২১২টি আসন রয়েছে। যার ফলে, মাত্র ৫টি ভোট এদিক-ওদিক হলেই রিপাবলিকানদের যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যা দেখা দেয়।কংগ্রেস থেকে বাড়তি তহবিলের অনুমোদন না পেলে ১৭ আবারও নভেম্বর শাটডাউনের মুখে পড়তে পারে মার্কিন সরকার, যদি না । নতুন স্পিকার নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত হাউজের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।
বৈঠকের আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।ভারত-যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে হরদীপ সিং হত্যা নিয়ে আলোচনাহোয়াইট হাউস জানিয়েছে, তারা আশা করছে হাউস দ্রুত নতুন স্পিকার নির্বাচন করবে। পদাধিকারবলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের পরেই স্পিকারের স্থান।ম্যাকার্থির উত্তরসূরি কে হবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
সাম্প্রতিক সময় ডেমোক্র্যাটদের জন্য বিরক্তির কারণ হন ম্যাকার্থি। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিরুদ্ধে অভিশংসন তদন্ত শুরু করেন এবং শনিবার তড়িঘড়ি করে একটি বিল পাস করেন, যার মাধ্যমে শাটডাউন এড়ানো যায়।যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তহবিলের উৎস নিশ্চিত না হলে ‘শাটডাউন’ পরিস্থিতির উদ্রেক হয়।