স্টাফ রিপোর্টার: আইন-আদালত না মেনে বিএনপি লাগামহীন ও দায়িত্বহীন কথা বলছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে শঙ্করমঠ ও মিশনের শতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের পঞ্চমদিনে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ মন্তব্য করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কথায় মনে হচ্ছে সরকার চাইলেই খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে পারে। সরকারের আইন-আদালত কোনো কিছুরই দরকার নেই। আসলে নিজেরা তো কোনো আইন আদালত মানেন না, সেই কারণেই তারা এ ধরনের লাগামহীন ও দায়িত্বহীন কথা বলতে পারেন।
ড. হাছান বলেন, দুর্গাপূজার সময় যারা দেশে বিভেদ সৃষ্টি করতে চেয়েছে, এরা স্বাধীনতার শত্রু। এদের পূর্বপুরুষ আমাদের স্বাধীনতা চায়নি। এরা আমাদের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না। এরা এখনো পাকিস্তানি ভাবধারা মনে ধারণ করে। এরা দেশের শত্রু এবং এদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
খালেদা জিয়ার একটি অসুখ হলেই বিদেশ কেন নিতে হবে প্রশ্ন রেখে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও অনেক প্রাইভেট হাসপাতাল আছে, যেখানে ভালো চিকিৎসা হয়। সেখানে লক্ষ-কোটি মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার অন্যদেশ থেকেও এখানে অনেকে চিকিৎসা নিতে আসেন।
অথচ বেগম খালেদা জিয়ার পেটে-হাঁটুতে বা অন্য কোনো সমস্যা হলেই বিদেশ নিয়ে যাবার জন্য তারা জিকির তোলেন কেন, সেটাই হচ্ছে প্রশ্ন। আইনমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন, আইনানুযায়ী খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, এভাবে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার দাবি তোলার মাধ্যমে তারা আমাদের চিকিৎসক এবং হাসপাতালগুলোকে অবজ্ঞা করছেন। বিশেষ করে চিকিৎসকদের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করছেন। আর মির্জা ফখরুলের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে আইন-আদালত কোনো কিছু দরকার নাই এবং সরকারকে হাইকোর্ট, জজকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টসহ সবকিছুর ভূমিকা পালন করতে হবে। যেটি কখনো সম্ভব নয় এবং সমীচীন নয়।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সাম্প্রদায়িক পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম আমরা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনা করার জন্য। দেশবিভাগ হয়েছিল সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে, মুসলমানদের জন্য একটি রাষ্ট্র, হিন্দুদের জন্য একটি রাষ্ট্র। আমরা যখন পাকিস্তান রাষ্ট্রব্যবস্থায় ছিলাম তখন আমরা অনুধাবন করেছি, এই রাষ্ট্র ব্যবস্থা আমরা বাঙালিদের জন্য নয়।
কারণ আমরা মনে করি, আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা বাঙালি, আমাদের দ্বিতীয় পরিচয় আমরা কে কোন ধর্মাবলম্বী। কিন্তু পাকিস্তান রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ধর্মীয় পরিচয়কে মুখ্য করে নেওয়া হয়েছিল। সেটির সাথে আমরা বাঙালিরা মানিয়ে নিতে পারিনি।
শ্রীমৎ তপনানন্দ গিরি মহারাজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন, শ্রীমৎ পরমানন্দ মহারাজ, বিমল কান্তি দাশ, কাউন্সিলর শফিউল আলম মুরাদ, দুলাল দে প্রমুখ।