অর্থনীতি ডেস্ক: ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে ব্যবসা করতে ব্যবসা পরিকল্পনা জমা দিয়ে নিবন্ধন নিতে হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
ই-কমার্স নিয়ে রোববার (১৮ জুলাই) অংশীজনদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘অনলাইন প্লাটফর্মে ব্যবসা করতে গেলে তাকে অবশ্যই বাধ্যতামূলক নিবন্ধন করতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আমরা একটি সেন্ট্রাল নিবন্ধনের ব্যবস্থা রাখব।
সেখান থেকে ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর নিতে হবে প্রত্যেককে। এটি সহজ একটি রেজিস্ট্রেশন প্রসেস হবে, অনলাইনের মাধ্যমে সবাই এই নিবন্ধন নিতে পারবে।
এটি যখন সম্পূর্ণ হবে, রেজিস্ট্রেশনবিহীন যে কোম্পানিগুলো ব্যবসা করছে তা বন্ধ করে দেয়ার জন্য আমরা বিটিআরসিকে অনুরোধ করব।’
সচিব বলেন, ‘ফেসবুকের মাধ্যমে করা ব্যবসা নিয়ে খুব বেশি আলোচনা হয়নি। তবে সামগ্রিকভাবে এটি যাতে সরকারের তথ্য ভান্ডারে থাকে কে কি ব্যবসা করছে, সে জন্য যারা ফেসবুকে ব্যবসা করবেন তাদেরকেও ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর নিতে হবে। আমাদের এই সিস্টেমটা তৈরি করতে হয়তো একটু সময় লাগবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সব জায়গায় এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেব। প্রত্যেককে যে ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর নিতে হবে বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধিত হতে হবে সে বিষয়টি সবাই যখন জানবেন, তখন আমরা এটা বাধ্যতামূলক করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘এতে একটু সময় লাগবে। সফটওয়্যার ডেভেলপ করতে হবে এবং প্রচার করতে হবে। সবাইকে এটা জানতে হবে। আমরা ব্যবসা বন্ধ হোক বা এটাকে সীমাবদ্ধ করতে চাই না।
যথেষ্ট প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে সবাইকে সচেতন করে তারপর নিবন্ধনের ব্যবস্থা আমরা করব। যার জন্য আমাদের দুই-এক মাস সময় লাগবে।’
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ই-কমার্স ব্যবসাকে কিভাবে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা যায়, সে বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। এ ধরনের ব্যবসা করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিজনেস পরিকল্পনা দিতে বলা হবে।
এখন তারা যেটা ফলো করছেন, সেটা ফলো করে কিভাবে বিজনেস সাসটেইনেবল করবেন। তারা যে বিজনেস মডেল জমা দেবেন তা যদি বাংলাদেশের প্রচলিত ব্যবসা সংক্রান্ত যেসব আইন আছে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য পূর্ণ না হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ই-কমার্সে কোনো গ্রাহক যদি প্রতারিত হয় সে ক্ষেত্রে তাদের অর্থ ফেরতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি প্রতারিত হন তাহলে তিনি প্রচলিত আইনে কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন।
সে ক্ষেত্রে আদালত ঠিক করে দেবেন তিনি কীভাবে ক্ষতিপূরণ পাবেন। আদালত থেকে একটি নির্দেশনা আসতে হবে ভোক্তাদের অর্থ কীভাবে উদ্ধার করা যাবে। উনার (কোম্পানির) ব্যাংক হিসেবে যদি টাকা থাকে সেটা উদ্ধার করে ভোক্তাকে দিতে হলেও আদালতের নির্দেশনা লাগবে।’
ইভ্যালি নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত দল ইভ্যালির ৬৫ কোটি টাকার সম্পদ তথ্য পেয়েছে। এর বাইরে উনার সম্পদ আছে কি না আমরা এখনও জানি না।
বাইরেও সম্পদ থাকতে পারে। এ বিষয়টি আরও অধিকতর তদন্ত চলছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। আমার মনে হয় সেই তদন্তে প্রকৃত সম্পদ কত আছে সেটা জানার পরে এটার ব্যবস্থা নেয়া যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেসব গ্রাহক প্রতারিত হয়েছেন তারা প্রচলিত আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। কারণ ব্যবসায়ী হোক অথবা ভোক্তা হোক, উনি যদি প্রতারিত হন দেশে কিন্তু প্রতারণার জন্য পেনাল কোড অনুযায়ী আইনগত আশ্রয় নিতে পারেন।’
এ সময় ই-ক্যাবের মহাসচিব বলেন, ‘কিছু কোম্পানিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছি। আরও দশটি কোম্পানিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হবে, এক সপ্তাহের মধ্যে।
তারা নতুন পলিসি গ্রহণ করেছে কি না এবং কিভাবে তারা টাকাটা পরিশোধ করবে, আমরা জানতে চেয়েছি। তাদের বিজনেস মডেল টা কী হবে, জানতে চেয়েছি।’