ঢাকা ০২:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিল-জলাশয়গুলোতে পানি স্বল্পতায় শুরু হয়েছে মাছ ধরার মৌসুম




গাইবান্ধা প্রতিনিধি:   গাইবান্ধার গ্রামাঞ্চলের বিল জলাশয়ে এখন চলছে বৈদ নামের ঐতিহ্যবাহী আনন্দময় দলবদ্ধ মাছ শিকার, বিল জলাশয় পানি স্বল্পতায় গাইবান্ধার গ্রামাঞ্চলে এখন চলছে মাছ ধরার মৌসুম।

সেই সাথে বিল জলাশয়গুলোতেও শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী আর আনন্দময় ‘বৈদ’ নামের দলবদ্ধ মাছ শিকার হারিয়ে যাচ্ছে।

সোমবার সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের ঝিনিয়ার বিল ও কুপতলা ইউনিয়নের নলিগলির বিলে মাছ শিকারের মধ্য দিয়েই এবার শুরু হয়েছে বৈদ নামে দলবদ্ধ মাছ শিকারের পর্ব।

উল্লেখ্য, প্রাচীনকাল থেকেই এতদাঞ্চলে বৈদ নামের এই মাছ ধরা চলে আসছে। বৈদ নামে প্রকৃত অর্থ কি জানা না গেলেও এর বিশেষ শিংগার ফুৎকার আর দলবদ্ধ মাছ ধরার আঞ্চলিক ভাষার সাথে এই নামের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সাধারণত: কার্তিক মাসের প্রথমদিক থেকে শুরু করে মাঘ মাস অবধি যখন বড় বড় বিল, নদী ও খালে পানি কম থাকে তখনি এই দলবদ্ধ বৈদ নামের মাছ ধরার প্রকৃত মৌসুম।

জেলার ৬টি উপজেলাতেই রয়েছে পৃথক পৃথক সৌখিন এই মাছ শিকারীর দল। বৈদ দলের আলোচনার ভিত্তিতে মাছ শিকারের নির্দিষ্ট জলাশয়, তারিখ, সময়, যাত্রার স্থান নির্ধারণ করে গ্রামের হাট-বাজারে ঢোল শহরৎ করে তা জানিয়ে দেয়া হয়। এই বৈদের দলের একজন দলনেতা থাকে।



যার কাছে থাকে মহিষের শিং দিয়ে তৈরি বড় একটি বাঁশি। যাকে বলা হয় বৈদের শিংগা। যা দিয়ে বিউগলের মতো উচ্চ স্বরে শব্দ বের হয় এবং অনেক দূর থেকে তা শোনা যায়। নির্ধারিত স্থানে যথাসময়ে শিংগায় ফুৎকার দেয়া হয় বার বার। আর শিংগার আহবানে নিজ নিজ পছন্দ মতো মাছ ধরার নানা সরঞ্জাম নিয়ে সমবেত হতে থাকে মৎস্য শিকারীরা।

সাধারণত: পূর্ব নির্ধারিত বিল জলাশয়ে দলবদ্ধ হয়ে মাছ শিকার চলে দিনভর। এতে কোন বাধ্যবাধকতা নেই, যে কেউ এতে সামিল হতে পারে। সে কারণে একটি বৈদের দল যখন কোন বিল বা নদীতে একযোগে সারিবদ্ধভাবে মাছ শিকারে নামে তখন একটি বৈদের দলে মাছ শিকারীর সংখ্যা কমপক্ষে ৫শ’ থেকে দাঁড়ায় এক হাজার বা তারও বেশি হয়ে যায়।

বৈদে সাধারণত: মাছ ধরার সরঞ্জামের মধ্যে পলো, হ্যাংগার জালি, পলো জালি, হ্যাগা, মুঠ জাল, কোঁচা, ক্যাটা, তৌরা জাল, ঝাঁকি জাল ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বৈদে মাছ মারা চলে সকাল থেকে বিকেল ৫টা অবধি এক জলাশয় থেকে অন্য জলাশয়ে। এতে অনেক মাছ পায় আবার অনেকে একটি মাছও পায় না। কিন্তু তাতে বৈদ শিকারীদের কোন দুঃখবোধ নেই। কেননা এখানে দলবদ্ধ ভাবে মাছ ধরতে যাওয়ার আনন্দটাই মুখ্য, মাছ প্রাপ্তিটাই মূল বিষয় নয়।

ট্যাগস

বিল-জলাশয়গুলোতে পানি স্বল্পতায় শুরু হয়েছে মাছ ধরার মৌসুম

আপডেট সময় ০৬:৫৪:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ অক্টোবর ২০২০




গাইবান্ধা প্রতিনিধি:   গাইবান্ধার গ্রামাঞ্চলের বিল জলাশয়ে এখন চলছে বৈদ নামের ঐতিহ্যবাহী আনন্দময় দলবদ্ধ মাছ শিকার, বিল জলাশয় পানি স্বল্পতায় গাইবান্ধার গ্রামাঞ্চলে এখন চলছে মাছ ধরার মৌসুম।

সেই সাথে বিল জলাশয়গুলোতেও শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী আর আনন্দময় ‘বৈদ’ নামের দলবদ্ধ মাছ শিকার হারিয়ে যাচ্ছে।

সোমবার সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের ঝিনিয়ার বিল ও কুপতলা ইউনিয়নের নলিগলির বিলে মাছ শিকারের মধ্য দিয়েই এবার শুরু হয়েছে বৈদ নামে দলবদ্ধ মাছ শিকারের পর্ব।

উল্লেখ্য, প্রাচীনকাল থেকেই এতদাঞ্চলে বৈদ নামের এই মাছ ধরা চলে আসছে। বৈদ নামে প্রকৃত অর্থ কি জানা না গেলেও এর বিশেষ শিংগার ফুৎকার আর দলবদ্ধ মাছ ধরার আঞ্চলিক ভাষার সাথে এই নামের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সাধারণত: কার্তিক মাসের প্রথমদিক থেকে শুরু করে মাঘ মাস অবধি যখন বড় বড় বিল, নদী ও খালে পানি কম থাকে তখনি এই দলবদ্ধ বৈদ নামের মাছ ধরার প্রকৃত মৌসুম।

জেলার ৬টি উপজেলাতেই রয়েছে পৃথক পৃথক সৌখিন এই মাছ শিকারীর দল। বৈদ দলের আলোচনার ভিত্তিতে মাছ শিকারের নির্দিষ্ট জলাশয়, তারিখ, সময়, যাত্রার স্থান নির্ধারণ করে গ্রামের হাট-বাজারে ঢোল শহরৎ করে তা জানিয়ে দেয়া হয়। এই বৈদের দলের একজন দলনেতা থাকে।



যার কাছে থাকে মহিষের শিং দিয়ে তৈরি বড় একটি বাঁশি। যাকে বলা হয় বৈদের শিংগা। যা দিয়ে বিউগলের মতো উচ্চ স্বরে শব্দ বের হয় এবং অনেক দূর থেকে তা শোনা যায়। নির্ধারিত স্থানে যথাসময়ে শিংগায় ফুৎকার দেয়া হয় বার বার। আর শিংগার আহবানে নিজ নিজ পছন্দ মতো মাছ ধরার নানা সরঞ্জাম নিয়ে সমবেত হতে থাকে মৎস্য শিকারীরা।

সাধারণত: পূর্ব নির্ধারিত বিল জলাশয়ে দলবদ্ধ হয়ে মাছ শিকার চলে দিনভর। এতে কোন বাধ্যবাধকতা নেই, যে কেউ এতে সামিল হতে পারে। সে কারণে একটি বৈদের দল যখন কোন বিল বা নদীতে একযোগে সারিবদ্ধভাবে মাছ শিকারে নামে তখন একটি বৈদের দলে মাছ শিকারীর সংখ্যা কমপক্ষে ৫শ’ থেকে দাঁড়ায় এক হাজার বা তারও বেশি হয়ে যায়।

বৈদে সাধারণত: মাছ ধরার সরঞ্জামের মধ্যে পলো, হ্যাংগার জালি, পলো জালি, হ্যাগা, মুঠ জাল, কোঁচা, ক্যাটা, তৌরা জাল, ঝাঁকি জাল ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বৈদে মাছ মারা চলে সকাল থেকে বিকেল ৫টা অবধি এক জলাশয় থেকে অন্য জলাশয়ে। এতে অনেক মাছ পায় আবার অনেকে একটি মাছও পায় না। কিন্তু তাতে বৈদ শিকারীদের কোন দুঃখবোধ নেই। কেননা এখানে দলবদ্ধ ভাবে মাছ ধরতে যাওয়ার আনন্দটাই মুখ্য, মাছ প্রাপ্তিটাই মূল বিষয় নয়।