স্টাফ রিপোর্টারঃ রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের হুজুরপাড়া এলাকায় দুর্বৃত্তের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সেলিনা বেগম (৩৫) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত নারীর আত্মীয় আকিজুল ইসলাম বলেন, সেলিনা বেগম সম্পর্কে তার চাচী। তার চাচার নাম এসএম ওবায়দুল্লাহ।
তারা চার সন্তান নিয়ে কামরাঙ্গীরচর হুজুরপাড়া আমির হামজা রোড নুরজাহান স্কুলের পাশে নিজের চারতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় থাকেন।
তিনি আরও বলেন, চাচার বাসার পাশেই আমাদের বাসা। রাত সাড়ে ৮টার দিকে চাচার বাসার সামনে লোকজনের ভিড় দেখে এগিয়ে যাই। এসময় চাচীকে রক্তাক্ত অবস্থায় চাচা ও চাচাতো বোনকে একটি অটোরিকশায় উঠাতে দেখি।
এবং চাচা আমাকে দেখে বলে তার সবশেষ হয়ে গেছে। তোর চাচীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে চল। একপর্যায়ে আমরা চাচিকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চাচীকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসকরা আমাকে জানিয়েছেন, চাচীর গলায় ধারালো অস্ত্রসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত চিহ্ন রয়েছে। আঘাতগুলো দেখে মনে হচ্ছে হত্যার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিহত সেলিনা ওবায়দুল্লাহর দ্বিতীয় স্ত্রী। অসুস্থথতার কারণে প্রথম স্ত্রী ৯ মাস আগে মারা যায়। এরপর ওবায়দুল্লাহ পাঁচ ছয় মাস আগে তার শ্যালিকাকে (প্রথম স্ত্রীর আপন ছোট বোন) বিয়ে করেন।
এ বিয়ের বিষয়টি নিয়ে ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে নানা রকম ঝগড়া হতো। বিশেষ করে ছেলে মেনে নিতে পারেনি। এ কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে কিনা তা বলতে পারছি না।
ঢাকা মেডিক্যাল পুলিশ ক্যাম্পের (এএসআই) আব্দুল খান জানান, নিহত সেলিনার গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনাটি কামরাঙ্গীরচর থানাকে অবগত করা হয়েছে।
কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি চারতালা বাসার নিচ তলায় আগে ভাড়াটিয়া ছিল।
তারা বাসা ছেড়ে দিলেও কিছু মালামাল রেখে যায়। আজকে সেই মালামাল নিতে এসে দুই যুবক তাদের বাসায় প্রবেশ করে এবং প্রবেশ করে দ্বিতীয় তলায় গিয়ে সেলিনাকে বলে যে আপনার স্বামীর সঙ্গে কথা হয়েছে আমরা মালামাল নিতে আসছি।
একপর্যায়ে সেলিনাকে রক্তাক্ত অবস্থায় লোকজন দেখতে পায়। ঘটনার পরপরই ওই দুই যুবক পালিয়ে যায়। তবে বাসায় প্রবেশের আগে নিহতের স্বামীকে ফোন দিয়েছিল ওই দুই যুবক।
নিহতর স্বামী বাইরে থাকায় সে তার স্ত্রীকে বিষয়টি জানায়নি। অথচ ওই দুই যুবক সেলিনাকে বলেছেন আপনার স্বামীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এগুলো কথা ওবায়দুল্লাহ মেয়ে ইতি শুনেছেন। বিষয়গুলো আমরা তদন্ত করে দেখছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ কাজ করছে।