ঢাকা ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহাদেবপুর ছাত্রলীগ সভাপতি রাজুর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী মামলা

প্রতীকী ছবি

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজী মামলা দায়ের করা হয়েছে।

উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ডের আরএফএল ভিগো সোরুমের স্বত্তাধিকারী লক্ষীপুর গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেনের ছেলে সোহেল রানা অভিযোগ করেন যে, পূর্বশত্রতার জের ধরে উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের চকহরিবল্লভ আবাসন গুচ্ছগ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে রাজু আহমেদ (৩২) ও উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের শিবগঞ্জ উত্তরপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে নয়নসহ (৩৩) আরও ৬-৭ জন যুবক শনিবার সন্ধ্যা ৭ টায় তার শোরুমে গিয়ে তার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে।
সোহেল টাকা দিতে অস্বীকার করলে যুবকেরা তাকে বেদম মারধর করে ক্যাশবাক্স থেকে নগদ দেড় লাখ টাকা, তার ব্যবহৃত স্যামসাং জে৭ মডেলের স্মার্টফোন ও এ্যাপাচি আরটিআর মোটরসাইকেলসহ সোহেলকে দোকান থেকে তুলে নিয়ে উপজেলা সদরের মাতাজী রোডে আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে নিয়ে গিয়ে বাঁশের লাঠি ও লোহার রড দিয়ে বেদম মারপিট করে।

সোহেলের চিৎকারে তার বন্ধু ফাজিলপুর নতুন হাটের আব্দুল হামিদের ছেলে মিঠু তাকে উদ্ধার করতে গেলে যুবকেরা তাকেও মারপিট করে।

পরে লোকজন সেখানে আসলে যুবকেরা পালিয়ে যায়। আহত সোহেলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয় ও মিঠুকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল জানান, এ ব্যাপারে সোহেল বাদী হয়ে রোববার বিকেলে রাজু ও নয়নের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছে। তারা দুজনেই পলাতক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোহেলের আত্মীয় এক গরীব মেয়ে ও অপর এক ছেলে বাড়ী থেকে পালিয়ে প্রায় ৩ মাস জেলার পত্নীতলা উপজেলায় একত্রে বসবাস করে। তাদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হলে তারা মহাদেবপুরে সোহেলের কাছে এসে তার সহযোগিতা চায়।

সোহেল উভয়ের অভিভাবকদের ডেকে বিষয়টি মিমাংসা করে তাদের সংসারের ব্যবহৃত তৈজসপত্র মেয়েটির জিম্মায় দেয়। কিন্তু ছেলেটি সেগুলো তার কেনা বলে দাবী করে। এরই জের ধরে রাজু ও নয়ন সেসব তৈজসপত্রের দাম দাবী করে সোহেলকে তুলে নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে নিয়ে যায়। ছাত্রলীগের অপর একটি গ্রুপ সোহেলকে উদ্ধার করতে সেখানে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। থানা পুলিশ ও দলীয় নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হলে সোহেলকে রেখে যুবকেরা পালিয়ে যায়।

রাজুর পক্ষের আহত নয়ন ও মহাদেবপুর স্কুলপাড়ার মৃত রজব আলীর ছেলে নওশাদ আলী (৪৬) রাত ২ টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
রাজু উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও নয়ন ছাত্রলীগ নেতা। রাজু জানান, চাঁন্দাশ গ্রামের বিদেশ ফেরৎ ওই ছেলের সাথে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে মেয়েটির ফুফাতো ভাই সোহেল তাদেরকে তার দোকানে ডেকে ছেলেটির কাছ থেকে একটি মোবাইলফোন ও ৩৭ হাজার টাকা নেয়।

ছেলেরা এগুলো ফেরৎ নেয়ার জন্য সোহেলের দোকানে যায়। ছেলেরা এ ব্যাপারে বণিক সমিতির সভাপতি মনিরুল হক মনির সহযোগিতা চাইলে মনির তাদেরকে তার বাসায় যেতে বললে ছেলেরা সোহেলকে নিয়ে তার বাসার সামনে যায়। এসময় দলের নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হলে তাদের সামনেই সোহেলের লোকেরা চাপাতি বের করে তাদের ছেলেদের উপর হামলা চালায়। এতে ৫ জন আহত হয়।
মহাদেবপুর বাসস্ট্যান্ড বণিক সমিতির সভাপতি মনিরুল হক মনি জানান, সোহেল একজন বণিক হওয়ায় বিষয়টি মিমাংসার জন্য তিনি উভয়কে তার বাসভবনের সামনে একটি চাতালে বৈঠকের জন্য ডেকেছিলেন। কিন্তু সেখানে যাবার পথে দলীয় কার্যালয়ের সামনে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

ট্যাগস

মহাদেবপুর ছাত্রলীগ সভাপতি রাজুর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী মামলা

আপডেট সময় ১০:২৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজী মামলা দায়ের করা হয়েছে।

উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ডের আরএফএল ভিগো সোরুমের স্বত্তাধিকারী লক্ষীপুর গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেনের ছেলে সোহেল রানা অভিযোগ করেন যে, পূর্বশত্রতার জের ধরে উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের চকহরিবল্লভ আবাসন গুচ্ছগ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে রাজু আহমেদ (৩২) ও উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের শিবগঞ্জ উত্তরপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে নয়নসহ (৩৩) আরও ৬-৭ জন যুবক শনিবার সন্ধ্যা ৭ টায় তার শোরুমে গিয়ে তার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে।
সোহেল টাকা দিতে অস্বীকার করলে যুবকেরা তাকে বেদম মারধর করে ক্যাশবাক্স থেকে নগদ দেড় লাখ টাকা, তার ব্যবহৃত স্যামসাং জে৭ মডেলের স্মার্টফোন ও এ্যাপাচি আরটিআর মোটরসাইকেলসহ সোহেলকে দোকান থেকে তুলে নিয়ে উপজেলা সদরের মাতাজী রোডে আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে নিয়ে গিয়ে বাঁশের লাঠি ও লোহার রড দিয়ে বেদম মারপিট করে।

সোহেলের চিৎকারে তার বন্ধু ফাজিলপুর নতুন হাটের আব্দুল হামিদের ছেলে মিঠু তাকে উদ্ধার করতে গেলে যুবকেরা তাকেও মারপিট করে।

পরে লোকজন সেখানে আসলে যুবকেরা পালিয়ে যায়। আহত সোহেলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয় ও মিঠুকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল জানান, এ ব্যাপারে সোহেল বাদী হয়ে রোববার বিকেলে রাজু ও নয়নের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছে। তারা দুজনেই পলাতক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোহেলের আত্মীয় এক গরীব মেয়ে ও অপর এক ছেলে বাড়ী থেকে পালিয়ে প্রায় ৩ মাস জেলার পত্নীতলা উপজেলায় একত্রে বসবাস করে। তাদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হলে তারা মহাদেবপুরে সোহেলের কাছে এসে তার সহযোগিতা চায়।

সোহেল উভয়ের অভিভাবকদের ডেকে বিষয়টি মিমাংসা করে তাদের সংসারের ব্যবহৃত তৈজসপত্র মেয়েটির জিম্মায় দেয়। কিন্তু ছেলেটি সেগুলো তার কেনা বলে দাবী করে। এরই জের ধরে রাজু ও নয়ন সেসব তৈজসপত্রের দাম দাবী করে সোহেলকে তুলে নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে নিয়ে যায়। ছাত্রলীগের অপর একটি গ্রুপ সোহেলকে উদ্ধার করতে সেখানে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। থানা পুলিশ ও দলীয় নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হলে সোহেলকে রেখে যুবকেরা পালিয়ে যায়।

রাজুর পক্ষের আহত নয়ন ও মহাদেবপুর স্কুলপাড়ার মৃত রজব আলীর ছেলে নওশাদ আলী (৪৬) রাত ২ টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
রাজু উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও নয়ন ছাত্রলীগ নেতা। রাজু জানান, চাঁন্দাশ গ্রামের বিদেশ ফেরৎ ওই ছেলের সাথে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে মেয়েটির ফুফাতো ভাই সোহেল তাদেরকে তার দোকানে ডেকে ছেলেটির কাছ থেকে একটি মোবাইলফোন ও ৩৭ হাজার টাকা নেয়।

ছেলেরা এগুলো ফেরৎ নেয়ার জন্য সোহেলের দোকানে যায়। ছেলেরা এ ব্যাপারে বণিক সমিতির সভাপতি মনিরুল হক মনির সহযোগিতা চাইলে মনির তাদেরকে তার বাসায় যেতে বললে ছেলেরা সোহেলকে নিয়ে তার বাসার সামনে যায়। এসময় দলের নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হলে তাদের সামনেই সোহেলের লোকেরা চাপাতি বের করে তাদের ছেলেদের উপর হামলা চালায়। এতে ৫ জন আহত হয়।
মহাদেবপুর বাসস্ট্যান্ড বণিক সমিতির সভাপতি মনিরুল হক মনি জানান, সোহেল একজন বণিক হওয়ায় বিষয়টি মিমাংসার জন্য তিনি উভয়কে তার বাসভবনের সামনে একটি চাতালে বৈঠকের জন্য ডেকেছিলেন। কিন্তু সেখানে যাবার পথে দলীয় কার্যালয়ের সামনে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।