অর্থনীতি ডেস্কঃ করোনা ভাইরাস তাড়া করছে গোটা বিশ্বকে। করোনার ভয়াল থাবা থেকে রেহাই পাইনি বাংলাদেশও। এখানে প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, আক্রান্তের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিলও।
ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল যেকোনো ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে সহায়ক। এ কারণে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ থেকে মুক্তি পেতে এখন অনেকেই ভিটামিন ‘সি’ (টক জাতীয়) সমৃদ্ধ ফলের প্রতি ঝুঁকছেন।
এই পরিস্থিতিতে ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফলের চাহিদা বাড়ায় বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন এসব ফলের।
কোনো কোনো ফলের দাম এখন আকাশচুম্বি। দাম বেড়েছে প্রায় দুই থেকে ৯ গুণ পর্যন্ত। এসব ফলের দাম বাড়া নিয়েও তৈরি হয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া।
বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদার তুলনায় সামান্যতম ফল আসায় দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। আর ক্রেতারা বলছেন, দেশের মধ্যে কোনো কিছুর চাহিদা থাকলে কোনো কারণ ছাড়াই বেশি মুনাফার আশায় তার দাম বাড়ানো হয়।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফলের ঠাসা। বর্তমানে আমলকী বিক্রি হচ্ছে প্রতি ১শ গ্রাম ৬০ থেকে ৯০ টাকায়। একইভাবে ১শ গ্রাম বেত ফলের (এক ধরনের সাদা ছোট আকৃতির ফল) দাম চাওয়া হচ্ছে ৯০ থেকে ১শ টাকা ।
এ হিসেবে প্রতি এক কেজির দাম পড়ছে এক হাজার থেকে ৯শ টাকা। অথচ বছরের অন্য সময়ে আমলকী সর্বোচ্চ প্রতি ১শ গ্রামের দাম রাখা হয়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা, বেত ফলের দাম রাখা হয়েছে ২০ টাকা।
বর্তমানে এসব ফলের দাম বেড়েছে আট থেকে নয় গুণ পর্যন্ত। আর অড়বরই প্রতি ১০০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করমচা প্রতি ১০০ গ্রামের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
যা কেজি হিসেবে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি। অথচ এসব ফল অন্য সময় (করোনা ব্যতিত) ১০০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে বাজারে পাওয়া যেতো। করোনাকালে এসব ফলের দাম আকাশছোঁয়া হয়েছে।
কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে এখন প্রতিকেজি লটকনের দাম হাঁকা হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, জাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।
প্রতি এক কেজি কামরাঙা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, জামরুল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজিদরে, আমড়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাল্টা ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজিদরে।
নতুন করে দাম বাড়ার তালিকায় যোগ হয়েছে লেবু। এর আগে বাজারে প্রতি হালি লেবু ছয় থেকে আট টাকার মধ্যে পাওয়া গেলেও বর্তমানে তা ১৫ টাকা হাঁকা হচ্ছে। কেজিতে কাঁচা আমের দাম চাওয়া হচ্ছে ৬০ টাকা।
এসব ফলের দর বাড়া নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিক্রেতারা বলছেন, এসব ফলের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ খুবই কম হওয়ায় দাম বেশি।
আর ক্রেতারা বলছেন, কোনো পণ্যের চাহিদা বেশি হলেই দাম বাড়িয়ে দেওয়া অভ্যাসে পরিণত হয়েছে ব্যবসায়ীদের।
এ বিষয়ে লাবন্য নামে এক ক্রেতা বলেন, আমরা দেশকে ভালোবাসতে জানি না, দেশের মানুষকে ভালোবাসতে জানি না। যখন দেশের মধ্যে কোনো সংকট চলে,-
সে সময় ব্যবসায়ীরা উল্টো দরবৃদ্ধি করে জনগণের পকেট কাটেন। আর এটা নিয়মিত একটা প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজারে পণ্যের চাহিদা বাড়লেই কি দাম বাড়াতে হবে, প্রশ্ন রাখেন তিনি।
আসিফ নামে এক বিক্রেতা বলেন, এখন বাজারে খুব সামান্য পরিমাণ ফল আসছে।
এগুলোর চাহিদা বেশি কিন্তু সরবরাহ খুবই সামান্য পরিমাণে। এ কারণে পাইকার বাজারে চড়া মূল্যে কিনতে হচ্ছে। তবে এসব ফলের সরবরাহ বেশি হলে দাম কমে আসবে বলে যোগ করেন তিনি।