স্টাফ রিপোর্টারঃ ভুতুড়ে বিলের তদন্তে এক নির্বাহী প্রকৌশলীসহ চার কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (ডিপিডিসি)।
এদিকে ৩৬টি এনওসি (স্থানীয় কার্যালয়) এর প্রত্যেকটির নির্বাহী প্রকৌশলীকে ১০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দিয়েছে তারা।
বদলি করা হয়েছে দুই চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে। এদিকে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি’র (ডেসকো) দুই মিটার রিডারকে অব্যাহতি দেওয়ার পাশাপাশি শোকজ করা হয়েছে সাত জনকে।
গত দুই মাস ধরে অতিরিক্ত বিলের অভিযোগ আসছিল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোর বিরদ্ধে। এ কারণে গত ২৫ জুন দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিদ্যুৎ বিভাগ।
সাত দিন সময় দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) সেই সাত দিন সময় শেষ হয়।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আসে ডিপিডিসির বিরুদ্ধে। ডিপিডিসি এই ঘটনা তদন্তে নির্বাহী পরিচালককে (আইসিটি) প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে।
শুক্রবার (৩ জুলাই) রাতে এই কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্তগুলো নেয় ডিপিডিসি কর্তৃপক্ষ।
ডিপিডিসির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ওপরের সিদ্ধান্তগুলো ছাড়াও আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ডিপিডিসির সিএসএস (কাস্টমার সাপোর্ট সার্ভিস) প্রতিষ্ঠান মিটার রিডিং কালেক্টরের কাজ করে। এর মধ্যে সাতটি জোনে নিয়োগ দেওয়া কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে চুক্তি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
এছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর ১৩ মিটার রিডার, একজন সুপারভাইজারসহ মোট ১৪ জনের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। সাতটি এনওসি এর মধ্যে আছে—নারায়ণগঞ্জ (পূর্ব), নারায়ণগঞ্জ (পশ্চিম), আদাবর, কাকরাইল, বনশ্রী ও জুরাইন।
ডিপিডিসির নির্বাহী পরিচালক (অপারেশন) এটিএম হারুন অর রশিদ বলেন, এ সিদ্ধান্তগুলো ছাড়াও আমরা কিছু জোনে বদলির আদেশ দিয়েছি। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চিফ ইঞ্জিনিয়ার (সেন্ট্রাল) এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ার (নর্থ) এর বদলি।
সাময়িক বরখাস্তদের মধ্যে আছেন আদাবর জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী, একজন উপবিভাগীয় প্রকৌশলী, একজন সহকারী প্রকৌশলী এবং একজন ডাটা এন্ট্রি কোঅর্ডিনেটর।
এদিকে ডেসকো ভুতুড়ে বিলের অভিযোগের ভিত্তিতে চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল। সে কমিটি ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে।
এর মধ্যে আট জনই মিটার রিডার আর একজন সুপারভাইজার। তাদের দুই জনের নিয়োগ বাতিল এবং সাত জনকে শোকজ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাউসার আমীর আলী জানান, আমাদের অভিযোগ কম ছিল।
আর যেসব অভিযোগ এসেছিল আমরা দ্রুত সমাধান করেছি। তাই তদন্ত কমিটি খুব বেশি দোষী পায়নি। তবে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন পরে জানানো হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের গঠিত তদন্ত কমিটির এক সদস্য জানান, নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) তদন্ত কমিটির সুপারিশে বেশ কিছু বদলি করা হয়েছে।
ওজোপাডিকো, আরইবি ও পিডিবির তদন্ত কমিটি এখনও কাজ করছে। রবিবার সবার বিষয়ে সব কিছু স্পষ্ট করে বলা যাবে বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, রবিবার (৫ জুলাই) বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে।