মাহবুবুজ্জামান সেতু,(মান্দা) নওগাঁ: নওগাঁর মহাদেবপুরে কথিত প্রেমিকের দেখা করার অপরাধে ৪০ হাজার টাকা পকেটস্থ করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী মাতব্বরদের বিরুদ্ধে।
জানাগেছে, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণগোপালপুর গ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা এক সন্তানের জননী ভ্যান চালক বাছের আলীর মেয়ের সাথে একই ইউপির পার্শ্ববর্তী তাতারপুর গ্রামের আলাবক্স-
সরদারের ছেলে এবং জিগাতলা হাইস্কুলের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র মনির হোসেন এর গত ৮ মাস পূর্বে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে ।
এ সম্পর্ক নিয়ে শুক্রবার (১৯ ই জুন) সাড়ে ১১ টার দিকে কৃষ্ণগোপালপুর বটতলী স্কুল মোড়ের পূর্ব পাশের রাস্তায় মেয়েটির সংঙ্গে দেখা করতে আসে।
এসময় দুুজনকে গল্প করতে দেখে গ্রামের জাহাঙ্গীরের ছেলে আবির, আব্দুল হাকিমের ছেলে বাপ্পীসহ ৪/৫ জন স্থানীয় বখাটে ছেলে ম্যাসনা পকুর সংলগ্ন একটি পাট ক্ষেতে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পাওয়ার অভিযোগ এনে তাদেরকে আটক করে।
এরপর প্রেমিক মনির এবং তার সাথে থাকা তাতারপুর গ্রামের সামিরের ছেলে শফিকুল ইসলামকে জোর পূর্বক আটকিয়ে রেখে মেয়েটির সাথে বিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা করে তারা।
এরপর বিষয়টি মনিরের পরিবারকে জানানো হলে মনিরের পরিবারের লোকজন বিকেলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এরপর ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় সফাপুর ইউপির কৃষ্ণগোপালপুর গ্রামের মহির হাজীর ছেলে জাহাঙ্গীর ও তার ছেলে-
আবির, হাকিমের ছেলে বাপ্পী, স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সায়েম, সাবেক ইউপি সদস্য তাতারপুরের আব্দুস সোবহানের ছেলে তাজিমসহ স্থানীয় মাতব্বররা নাটকিয়তা শুরু করেন।
বিষয়টিকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করে প্রেমিকার বাবার কাছ কাছ থেকে অন্যায় ভাবে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে তারা পকেটস্থ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রেমিকার বাবা বাছের আলী জানান, আমি গত শুক্রবার সকালে বাড়ির পাশে কাজ করাবস্থায় এক ভাবীর মাধ্যমে জানতে পারি যে, আমার মেয়েকে এবং ওই ছেলেকে জাহাঙ্গীরের ছেলে আবিরের হেফাজতে আটকিয়ে রাখা হয়েছে।
পরবর্তীতে তারা ওই ছেলের সাথে আমার মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে ৪০ টাকা হাতিয়ে নেয়। অন্যদিকে জাহাঙ্গীর ও অন্যান্য মাতব্বররা ওই টাকা আটককৃত প্রেমিককে বিয়ের খরচ বাবদ গ্রহন করে নিজেরাই পকেটস্থ-
করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রেমিকার বাবা বাছের আলী আরোও বলেন, ইতিঃপূর্বে মেয়ের বিয়ে হয়েছিল এবং সে পক্ষের একটি সন্তান আছে।
তাই মেয়ের ভবিষ্যত চিন্তা করে মেয়েকে ওই ছেলের সাথে বিয়ে দেওয়ার উদ্দ্যেশে তাদের অন্যায় দাবীকৃত ৪০ হাজার টাকা জাহাঙ্গীরের ছেলে আবির এবং মহির হাজীর ছেলে মিন্টুকে দেয়া হয়েছে।
এরপর তারা ওই টাকা কি কাজে ব্যায় করেছে তা আমি কিছুই জানি না। আমি এত কিছু বুঝিনা। আমার মেয়ের বিয়ে চাই।
কিন্তু দয়া করে এসব ব্যাপারে পেপার পত্রিকায় এমন কিছু লিখবেন না; যাতে করে আমার মেয়ের কোন ক্ষতি হয়। ঘটনার সংবাদ সংগ্রহের জন্য স্থানীয় এক সাংবাদকর্মী ঘটনাস্থলে গেলে পরদিন শনিবার সকালে কৃষ্ণগোপালপুর
গ্রামের মহির হাজীর ছেলে জাহাঙ্গীর তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন। ইউপি সদস্য আবু সায়েম বলেন, স্থানীয় মাতব্বরদের সর্ব সম্মতিক্রমে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।
আর টাকার বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারবনা। সফাপুর ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল আলম বাচ্চু বলেন, আমি বিষয়টি অবগত নয়।
আমাকে এব্যাপারে এখন পর্যন্ত কেউ কোন কিছু জানায়নি। আর জানলেও এটি আমার এখতিয়ারের বাহিরে। আমি সব সময় এসব থেকে দুরে থাকার চেষ্টার করি।