বাণিজ্য ডেস্কঃ কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে লকডাউনেও আম, লিচুসহ অন্যান্য মৌসুমি ফল সুষ্ঠুভাবে বাজারজাত করার পথ খুঁজতে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সভায় বসছে সরকার।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে আগামী শনিবার বেলা ১১টায় এই ভার্চুয়াল সভা হবে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সঞ্চালনায় ওই সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিশেষজ্ঞ, কর্মকর্তা, ফল চাষী, ফল ব্যবসায়ী, আড়তদার এবং সংশ্লিষ্ট সমিতির প্রতিনিধিদের যুক্ত করা হবে।
আম, লিচুসহ অন্যান্য মৌসুমি ফল ইতোমধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে। আমের প্রধান উৎপাদনস্থল দেশের উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় কোন জাতের আম কবে গাছ থেকে নামানো যাবে সেই সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে সব অফিস-আদালত বন্ধ রেখেছে, আগামী ১৬ মে পর্যন্ত ঘোষিত ‘ছুটির’ মধ্যে যাত্রীবাহী পরিবহনেও বিধিনিষেধ রয়েছে। এই বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও বাড়তে পারে বলেও আভাস দিয়েছেন কর্মকর্তারা।
কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ এড়াতে এই সময় বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে সরকার। ফলে বেশিরভাগ শ্রমজীবী কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, বছর বছর যারা মৌসুমি ফলের ব্যবসা করেন, এবার তাদের কাপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। অনেক খামারি এবার আগেভাগে ফল ব্যবসায়ীদের কাছে গাছ বা পুরো বাগান বিক্রি করতে পারেননি। যারা ফলের বাগান কিনেছেন, তাদের চিন্তা আরও বেশি।
“পরিবহন করতে না পারলে চাষী ও ব্যবসায়ীরা বড় বিপদে পড়বেন। মূলত তাদের কীভাবে সহায়তা করা যায় সবার সঙ্গে কথা বলে সেই উপায় বের করা হবে। আম, লিচু, কাঁঠালসহ কোনো মৌসুমি ফল যেন বিপণনের দেরির কারণে নষ্ট না হয়, সে দিকে লক্ষ্য রেখেই পরিকল্পনা নেওয়া হবে।”
প্রয়োজনে ‘সরকারি চেইনে’ এবারের মৌসুমি ফল সারা দেশে সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন ৭২ প্রজাতির ফলের চাষ হয়, যার মধ্যে আম উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে সপ্তম। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে ২৩ লাখ ৭২ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছে।
গত দেড় যুগে দেশে ফল উৎপাদন বেড়েছে সাড়ে ১১ শতাংশ হারে, মাথাপিছু ফল খাওয়ার পরিমাণও গত এক যুগে দ্বিগুণ হয়েছে।