অবশেষে রাফা ক্রসিং খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে এই ক্রসিং দিয়ে বিদেশি নাগরিক এবং গুরুতর অসুস্থ ফিলিস্তিনিরা মিশরে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছেন। এর আগে এই ক্রসিং দিয়ে খাবার ও ত্রাণসামগ্রী বহনকারী ট্রাক ঢুকতে দেওয়া হলেও বিদেশি নাগরিকদের এবারই গাজা ত্যাগের সুযোগ দেওয়া হলো। খবর বিবিসি, আল জাজিরার।
বুধবার রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গুরুতর অসুস্থ রোগী ও বিদেশি নাগরিকদের গাজা থেকে মিশরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। মিশর থেকে অ্যাম্বুলেন্স গাজায় প্রবেশ করে রোগীদের রাফাহ ক্রসিংয়ের কাছাকাছি একটি মিশরীয় ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে গাড়ির সারি গাজা থেকে মিশরে প্রবেশ করছে।
মিশরীয় সোর্সের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার রাফাহ ক্রসিং দিয়ে ৫০০ বিদেশি নাগরিককে মিশরে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে কতজন ফিলিস্তিনি গাজা ত্যাগের সুযোগ পাচ্ছেন তা পরিষ্কার নয়। এখন পর্যন্ত ৮৮ জন ফিলিস্তিনি গাজা ত্যাগের সুযোগ পেয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে মিশরীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, এই সংখ্যা ৮১ জন।
রয়টার্স জানিয়েছে, কাতারের মধ্যস্থতায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় মিশর, ইসরায়েল ও স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে আলোচনার পর গাজা থেকে এসব মানুষকে বের হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ২০১২ সাল থেকেই কাতারে হামাসের দপ্তর চালু রয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা এবং এর জবাবে ইসরায়েলের পাল্টা হামলার পর থেকে গাজার সীমান্ত বেশিরভাগ সময় বন্ধই থেকেছে। গাজায় চলতি সপ্তাহে দ্বিতীয়বারের মতো ফোন এবং ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। ফোন এবং ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী সংস্থা প্যালটেল জানিয়েছে, এটি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গাজার ভেতরে স্থল অভিযান চালানোর সময় মঙ্গলবার ইসরায়েলের ১১ জন সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষে ইসরায়েলের মোট ৩২৬ সেনা নিহত হয়েছে বলে দেশটি জানিয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ইসরায়েল গাজার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা অব্যাহত রেখেছে। ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) নিশ্চিত করেছে যে, তারা গাজার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া এলাকায় হামলা চালিয়েছে। ওই হামলায় হামাসের এক শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যা করা হয়েছে এবং হামাসের মাটির নিচে থাকা অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আইডিএফ দাবি করেছে।
তবে ইসরায়েলি হামলায় অনেক মানুষ হতাহত হয়েছে বলে জানা গেছে। সেখানে বেশ কয়েকটি ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং একজন হাসপাতাল পরিচালক বলেছেন, এ হামলায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে। বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে, হামলার স্থলে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে এবং সেখানকার ভবন মাটির সাথে মিশে গেছে।
ইসরায়েল গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় বিমান হামলা শুরু করেছে। হামাসের ওই হামলায় ১৪০০ ইসরায়েলি নিহত হয় এবং ২৩৯ জনকে জিম্মি করা হয়। গাজায় থাকা হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজা ভূখণ্ডে মোট ৮ হাজার ৮২৫ জন নিহত হয়েছে।