নদী ও বিল শুকিয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় চাষিরা
নওগাঁর বরেন্দ্র এলাকায় নদী ও বিল শুকিয়ে যাওয়ায় সেচনির্ভর বোরো চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা। এবার অন্তত দেড় মাস আগেই এ জনপদের নদী ও বিল জলাশয়ে দেখা দিয়েছে পানিশূন্যতা। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব আর অপরিকল্পিত সেচব্যবস্থায় সমস্যা বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্থানীয়রা জানান, জেলার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে সাতটি নদী। এ ছাড়া রয়েছে ১২৩ বিল জলাশয়। এখান থেকে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার সেচযন্ত্রের মাধ্যমে অন্তত ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদান করা হয়। হাজারো মানুষের জীবিকার উৎস এসব নদী বিগত বছরগুলোতে চৈত্র বৈশাখ মাসে শুকিয়ে গেলেও এবার অন্তত ২ মাস আগেই এসব নদীর পানি ঠেকেছে তলানিতে।
মান্দা কালিকাপুর এলাকার কৃষক জাহেদুল বলেন, এবার খুব চিন্তায় আছি। কারণ নদীর পানি একেবারে কম। আর এখন শুধু ধান রোপণ করেছি। অপর কৃষক মোস্তফা বলেন, গত বছরও এ সময় পানি বেশি ছিল। কিন্তু এবার নদী শুকিয়ে গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নেমে যাওয়া পানির স্তর ঠেকানো আর প্রাকৃতিক পানির ব্যবহার বাড়াতে দরকার টেকসই পরিকল্পনা। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে এ অঞ্চলে প্রতি বছর আড়াই থেকে ৩ ফুট পানির স্তর নিচে নেমে যায়।
এদিকে বরেন্দ্র এলাকার আগাম পানি সমস্যা নিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি পানি ব্যবস্থাপনা সম্পদ মন্ত্রণালয় জেলায় একটি কর্মশালায় আয়োজন করা হয়। সেখানে নানা পরামর্শ উঠে আসে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, আমরা এ অঞ্চলের পানি ব্যবস্থা নিয়ে নানা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। আগামীতে এসব পরিকল্পনা বাস্তায়ন করা হবে। চলতি মৌসুমে নওগাঁয় এক লাখ ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। নদী ও বিলের পানি ব্যবহারে স্থাপন করা হয়েছে ১৯৬টি এলএলপি পাম্প।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নওগাঁ নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এবার জেলার আত্রাই নদীর পানি অনেক কম। তা ছাড়া পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সামনে যদি বৃষ্টিপাত না হয়, তা হলে সমস্যা প্রকট হবে।