ঢাকা ১০:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo বগুড়ায় ৫০ টাকা অফারে টি-শার্ট কিনতে হাজারো মানুষের ঢল, নিয়ন্ত্রণ নিতে সেনাবাহিনী Logo শেখ হাসিনা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালালে ভারতকে দায় নিতে হবে: তথ্য উপদেষ্টা Logo নতুন দুই বিভাগ ও দেশকে চারটি প্রদেশে ভাগ করার প্রস্তাব সংস্কার কমিশনের Logo নওগাঁ সীমান্ত থেকে ১ যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ Logo গাজীপুরে পিকআপভ্যান খাদে পড়ে তিন জন নিহত Logo নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়িয়ে গাজা দখলের ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প Logo মাকে মারধর করছিল ছেলে, শাসন করতে গিয়ে মামা খুন Logo পুলিশের গাড়ি থেকে ছিনিয়ে নেওয়া সেই আ. লীগ নেতা গ্রেফতার Logo অনির্দিষ্টকালের জন্য উত্তরবঙ্গের সব পেট্রোল পাম্প বন্ধ ঘোষণা Logo মোহাম্মদপুর থেকে ‘নিখোঁজ’ সেই সুবা নওগাঁ থেকে উদ্ধার

আজ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৯৩তম জন্মদিন

রাজনীতি ডেক্স : জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৯৩তম জন্মদিন আজ রোববার (২০ মার্চ)।

সাবেক এ সেনাপ্রধান ও পাঁচবারের সংসদ সদস্য ১৯৩০ সালের ২০ মার্চ রংপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

তার জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয় পার্টি ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্ট পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। রাজধানীর বনানী ও কাকরাইলে জাপার কার্যালয় ছাড়াও সারাদেশের জেলা-উপজেলায় দলীয়ভাবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মদিন উদযাপন করা হবে।

এদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা আটজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ‘পল্লীবন্ধু পদক ২০২১’ দেবে জাপা। দলটির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মদিনে রোববার তার নামে প্রথমবারের মতো এ পদক দেওয়া হবে। এতে জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের ছাড়াও দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকবেন।

১৯৭৩ সালের ১২ ডিসেম্বর কর্নেল পদে এবং ১৯৭৫ সালের জুন মাসে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ওই বছরের আগস্টে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে তাকে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান নিয়োগ করা হয়।

১৯৭৮ সালের ডিসেম্বরে এরশাদকে সেনাপ্রধান পদে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং ১৯৭৯ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই খবরের কাগজে বিবৃতি ও কভারেজের মাধ্যমে রাজনীতিতে এরশাদের আত্মপ্রকাশ শুরু।

১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তারের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে জেনারেল এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন। তিনি দেশের সংবিধানকে রহিত, জাতীয় সংসদ বাতিল এবং সাত্তারের মন্ত্রিসভাকে বরখাস্ত করেন। নিজেকে দেশের সশস্ত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক ঘোষণা করেন।

১৯৮২ সালের ২৭ মার্চ বিচারপতি আবুল ফজল মোহাম্মদ আহসানউদ্দিন চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে অধিষ্ঠিত করেন। ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক (সিএমএলএ) হিসেবে দেশ শাসন করেন। এরপর তিনি রাষ্ট্রপতি আহসানউদ্দিন চৌধুরীকে অপসারণ করে ১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর নিজে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

১৯৮৪ সালে দেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় উপজেলা পদ্ধতির প্রচলন করায় এরশাদের অনুসারীরা তাকে ‘পল্লীবন্ধু’ খেতাবে ভূষিত করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রতিষ্ঠা করেন। সে বছরই জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয় জাপা।

প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচন বর্জনের মধ্যে ১৯৮৬ সালের অক্টোবরে আয়োজিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরশাদ তার জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে পাঁচ বছর মেয়াদকালের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে এরশাদ ১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বর তৃতীয় জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন আহ্বান করেন। সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী আইন পাস করে সেদিন জাতীয় সংসদে সংবিধান পুনর্বহাল করে। এর মাধ্যমে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ ক্ষমতা দখলসহ সামরিক আইন ও বিধিবিধান দ্বারা সম্পাদিত সব কাজ ও পদক্ষেপকে বৈধতা দেওয়া হয়।

তবে বিরোধী দলের প্রবল আন্দোলনের মুখে ১৯৮৭ সালের ৭ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি এরশাদ তৃতীয় জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করতে বাধ্য হন। প্রধান বিরোধী দলগুলো ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনও বর্জন করে। এরশাদের অপশাসনের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর টানা আন্দোলন চলতে থাকে এবং প্রবল গণঅভ্যুত্থানের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

১৯৯১ সালে জেনারেল এরশাদ গ্রেপ্তার হন এবং তাকে কারাবন্দি করা হয়। ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে কারাবন্দি অবস্থায় এরশাদ রংপুরের পাঁচটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন।

২০০১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এরশাদের জাতীয় পার্টি ১৪টি আসনে জয়ী হয়। ২০০৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে মহাজোট গঠন করেন।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দল ২৭টি আসনে বিজয়ী হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দল প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং তার স্ত্রী রওশন এরশাদ প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা হন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২টি আসন পেয়ে আবারও তার দল প্রধান বিরোধী দল হিসেবে সংসদে যোগ দেয়।

ট্যাগস

বগুড়ায় ৫০ টাকা অফারে টি-শার্ট কিনতে হাজারো মানুষের ঢল, নিয়ন্ত্রণ নিতে সেনাবাহিনী

আজ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৯৩তম জন্মদিন

আপডেট সময় ০১:৪১:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ মার্চ ২০২২

রাজনীতি ডেক্স : জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৯৩তম জন্মদিন আজ রোববার (২০ মার্চ)।

সাবেক এ সেনাপ্রধান ও পাঁচবারের সংসদ সদস্য ১৯৩০ সালের ২০ মার্চ রংপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

তার জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয় পার্টি ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্ট পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। রাজধানীর বনানী ও কাকরাইলে জাপার কার্যালয় ছাড়াও সারাদেশের জেলা-উপজেলায় দলীয়ভাবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মদিন উদযাপন করা হবে।

এদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা আটজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ‘পল্লীবন্ধু পদক ২০২১’ দেবে জাপা। দলটির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মদিনে রোববার তার নামে প্রথমবারের মতো এ পদক দেওয়া হবে। এতে জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের ছাড়াও দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকবেন।

১৯৭৩ সালের ১২ ডিসেম্বর কর্নেল পদে এবং ১৯৭৫ সালের জুন মাসে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ওই বছরের আগস্টে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে তাকে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান নিয়োগ করা হয়।

১৯৭৮ সালের ডিসেম্বরে এরশাদকে সেনাপ্রধান পদে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং ১৯৭৯ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই খবরের কাগজে বিবৃতি ও কভারেজের মাধ্যমে রাজনীতিতে এরশাদের আত্মপ্রকাশ শুরু।

১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তারের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে জেনারেল এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন। তিনি দেশের সংবিধানকে রহিত, জাতীয় সংসদ বাতিল এবং সাত্তারের মন্ত্রিসভাকে বরখাস্ত করেন। নিজেকে দেশের সশস্ত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক ঘোষণা করেন।

১৯৮২ সালের ২৭ মার্চ বিচারপতি আবুল ফজল মোহাম্মদ আহসানউদ্দিন চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে অধিষ্ঠিত করেন। ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক (সিএমএলএ) হিসেবে দেশ শাসন করেন। এরপর তিনি রাষ্ট্রপতি আহসানউদ্দিন চৌধুরীকে অপসারণ করে ১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর নিজে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

১৯৮৪ সালে দেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় উপজেলা পদ্ধতির প্রচলন করায় এরশাদের অনুসারীরা তাকে ‘পল্লীবন্ধু’ খেতাবে ভূষিত করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রতিষ্ঠা করেন। সে বছরই জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয় জাপা।

প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচন বর্জনের মধ্যে ১৯৮৬ সালের অক্টোবরে আয়োজিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরশাদ তার জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে পাঁচ বছর মেয়াদকালের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে এরশাদ ১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বর তৃতীয় জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন আহ্বান করেন। সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী আইন পাস করে সেদিন জাতীয় সংসদে সংবিধান পুনর্বহাল করে। এর মাধ্যমে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ ক্ষমতা দখলসহ সামরিক আইন ও বিধিবিধান দ্বারা সম্পাদিত সব কাজ ও পদক্ষেপকে বৈধতা দেওয়া হয়।

তবে বিরোধী দলের প্রবল আন্দোলনের মুখে ১৯৮৭ সালের ৭ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি এরশাদ তৃতীয় জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করতে বাধ্য হন। প্রধান বিরোধী দলগুলো ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনও বর্জন করে। এরশাদের অপশাসনের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর টানা আন্দোলন চলতে থাকে এবং প্রবল গণঅভ্যুত্থানের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

১৯৯১ সালে জেনারেল এরশাদ গ্রেপ্তার হন এবং তাকে কারাবন্দি করা হয়। ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে কারাবন্দি অবস্থায় এরশাদ রংপুরের পাঁচটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন।

২০০১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এরশাদের জাতীয় পার্টি ১৪টি আসনে জয়ী হয়। ২০০৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে মহাজোট গঠন করেন।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দল ২৭টি আসনে বিজয়ী হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দল প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং তার স্ত্রী রওশন এরশাদ প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা হন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২টি আসন পেয়ে আবারও তার দল প্রধান বিরোধী দল হিসেবে সংসদে যোগ দেয়।