অর্থনীতি ডেস্কঃ স্কুল ব্যাংকিংয়ে মোট আমানত জুন প্রান্তিকে ২ দশমিক ২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল-জুন মাসে শিক্ষার্থীরা ১ দশমিক শূন্য ২ লাখেরও বেশি ব্যাংক হিসাব খুলেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে জুন শেষে মোট স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের সংখ্যা ২,৪৩১,৬০২-তে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৬০ দশমিক ৮২ শতাংশ হিসাব শহরাঞ্চলে এবং ৩৯ দশমিক ১৮ শতাংশ গ্রামাঞ্চলে খোলা হয়েছে।
২০১০ সালে স্কুল ব্যাংকিং কর্মসূচীর পুনঃপ্রবর্তন করে তরুণ শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে উত্সাহী করতে যথেষ্ট সফল হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ব্যাংকগুলো নূন্যতম ১০০ টাকা জমা দিয়ে একটি ছাত্র হিসাব খুলতে পারবে এবং বর্তমান স্কুল ব্যাংকিং নীতি অনুযায়ী এই হিসাব পরিচালনার জন্য কোনও ফিও নেওয়া যাবে না।
আকর্ষণীয় সুদের হার, ডেবিট কার্ডের সুবিধা এবং আর্থিক শিক্ষা কর্মসূচিসহ এই অ্যাকাউন্ট খোলার অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও রয়েছে।
দেশে বর্তমানে ৬০টি ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এরমধ্যে ৫৫টি ব্যাংকে স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খোলা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, করোনা মহামারির মধ্যে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ফি দিতে হয়েছে। সুতরাং, যাদের স্কুল ব্যাংকিং হিসাব নেই তাদের কাছেও এখনই অ্যাকাউন্ট খোলার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিল জুনে গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলে এ জাতীয় হিসাবের সংখ্যা ৬ দশমিক শূণ্য ৪ শতাংশ এবং ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।
মোট স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের ৫৬ দশমিক ৭১ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৩ দশমিক ২৯ শতাংশ নারী।
জুন প্রান্তিকে ২ দশমিক ২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে স্কুল ব্যাংকিংয়ে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। মার্চ প্রান্তিকে ছিল ১ হাজার ২২৪ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা। একই সময়ে স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে ৪ দশমিক ৪০ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ মহামারি কারণে জুনের তুলনায় স্কুল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট এবং আমানতের প্রবৃদ্ধি আগের প্রান্তিকের তুলনায় কমেছে।
করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে সব ধরণের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। সরকার কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে চলতি বছরের ৩ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তবে বছরভিত্তিক হিসাবে স্কুল ব্যাংকিংয়ের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
২০২০ সালের জুন শেষে স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের সংখ্যা ২১ দশমিক ৮২ শতাংশ বা ৪৩৫৫৭২ এবং আমানতের পরিমাণ ২৬৮ দশমিক ৪২ কোটি বা ১৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেড়েছে।
স্কুল ব্যাংকিং হিসাব এবং আমানতের বেশি অংশ রয়েছে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে।
মোট স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের ৬৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ বা ১৬৭৮৮৮৯ টি হিসাব খুলে আমানতের ৮৩ দশমিক ১৭ শতাংশ বা ১৪৬৬ দশমিক ১২ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো।
বেসরকারিখাতের ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড স্কুল ব্যাংকিং হিসাব পরিচালনায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। ব্যাংকটিতে মোট হিসাবের ২১ দশমিক ৩২ শতাংশ বা ৫১৮৩৬৩ টি হিসারে ৫১৩ দশমিক ২০ কোটি টাকা জমা রয়েছে।
এ বিষয়ে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরীন বলেন, শিক্ষার্থীদের স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খোলার জন্য আমরা সব সময় অগ্রাধিকার দিয়েছি। তার সুফলও পাওয়া যাচ্ছে।